হাতি হত্যা বন্ধে ব্যর্থ প্রধান বন কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি সবুজ আন্দোলনের

0
532

পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে বন্যপ্রাণী ও মানুষ একে অপরের পরিপূরক হিসেবে বিরাজ করছে। মানুষের সাথে যুগ যুগ ধরে সখ্যতা গড়ে উঠেছে বন্যপ্রাণীর। তেমনি কারো খেলার সাথী, প্রাচীন আমলের রাজা বাদশাদের বাহনের একমাত্র আভিজাত্যের প্রতীক বন্য হাতি। সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে লোভী মানুষগুলো মেতে উঠেছে টাকার নেশায়। নির্বিচারে হত্যা করছে বন্যহাতি গুলো। একদিকে পরিবেশ বিপর্যয় অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান ঘনবসতি নির্মাণের ফলে বন্যপ্রাণীরা হয়ে পড়েছে নিরুপায়। সম্প্রতি বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী হাতিকে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে যার দায় বন বিভাগ কিংবা  পরিবেশ অধিদপ্তর এড়াতে পারে না। পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার ২২ নভেম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নির্বিচারে হাতি হত্যা বন্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধান বন কর্মকর্তার পদত্যাগ দাবি করেন।

বাপ্পি সরদার বলেন, ১৯৩২ সাল থেকে হাতি সংরক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার মিয়ানমার ও বাংলাদেশ অধ্যুষিত টেকনাফ উখিয়া অঞ্চলকে নিরাপদ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকা ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল মেঘালয় সীমান্ত তথা শেরপুর অঞ্চলকে বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছরে যেখানে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে সেখানে মানবিক বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে কথা উঠছে। যে সমাজে মানুষ বসবাস করবে সেখানে পশুপাখি ও বন্যপ্রাণী থাকবে না যা কল্পনাতীত। একশ্রেণীর অসাধু, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অর্থলোভী ব্যক্তিদের যোগসাজশে বন বিভাগ এই অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে। বন্যপ্রাণী হাতি সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ বনাঞ্চল গড়ে তোলা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বন বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৪০টি হাতিকে বিভিন্ন কৌশলে হত্যা করা হয়েছে।

সবুজ আন্দোলনের পক্ষ থেকে বন্য প্রাণী হাতি হত্যা বন্ধে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়:

১) বন বিভাগের সক্ষমতা বাড়াতে লোকবল নিয়োগ করতে হবে এবং বনের মধ্যে যাতায়াতের জন্য যুগোপযোগী বাহনের ব্যবস্থা করতে হবে।

২) বনের মধ্যে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে এবং নতুন স্থাপনা যাতে গড়ে তুলতে না পারে তার জন্য আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

৩) রাস্তা ও রেললাইন নির্মাণের সময় বন্যপ্রাণী পারাপারের জন্য বাইপাস চ্যানেল বা নিরাপদ করিডর নির্মাণ করতে হবে।

৪) বন্যপ্রাণী হত্যা করলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করতে হবে।

৫) বন্য প্রাণীদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে “কুইক ফুড সার্ভিস” সিস্টেম চালু করতে হবে।

৬) সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং টেকনাফ—উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের কে সরকারিভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৭) সকল রকম সার্কাস, হাতি  দিয়ে রাস্তায় চাঁদাবাজি বা খেলাধুলা দেখানো বন্ধ করতে হবে।

৮) দুর্নীতিগ্রস্ত বন কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব দুদকে তলব করতে হবে এবং বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

six − three =