Site icon Aparadh Bichitra

তালতলীতে নয় বছরের শিশু নির্যাতনের শিকার সুবিচার চায় পিতা

আমতলী  প্রতিনিধি,  অপরাধ বিচিত্রা: তালতলীর কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের গেন্ডা মারা গ্রামে সরোয়ার কর্তৃক নয় বছরের শিশু নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেছে।

নির্যাতিত শিশুটির নাম মোজাম্মেল। শিশুটি একই ইউনিয়নের ১১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী। শিশুটির বাবা সোবাহান(৩৯) তিনটি সন্তানের জনক, ঢাকায় বেঙ্গল সোলার ডেভলপমেন্ট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতে আছেন। শিশু মোজাম্মেল তার বাবার দ্বিতীয় সন্তান।

অভিযুক্ত ব্যক্তি সরোয়ার(৩৫) তালতলী উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের গেন্ডা মারা গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সরোয়ার পেশা হিসেবে নিজ দোকানে কম্পিউটার (মেমোরি) লোড এর ব্যবসা  করেন। একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।

ঘটনার আগের দিন অভিযুক্ত সরোয়ার এর মেয়ে তাবাসসুম(১০) ও মোজাম্মেল স্কুলের মাঠে খেলাধুলার একপর্যায়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে তাবাসসুমের ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরে পরবর্তীতে তাবাসসুম বাড়িতে গিয়ে মোজাম্মেল মেরেছে বলে তার মা-বাবার কাছে অভিযোগ করেন। সারোয়ার এর মেয়ে তাবাসসুম ঠোঁট ফাটার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের উভয় পরিবারের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়।

ঘটনার দিন০৩.১১.২১ইং স্কুল ছুটির পরে বিকেলবেলা শিশু মোজাম্মেল খাস পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত সরোয়ার পিছন দিক থেকে শিশু মোজাম্মেলের ঘাড় ও মাথায় আঘাত করে, তার মেয়ে তাবাসসুমের সাথে এরকম না করার জন্য হুঁশিয়ার করে জায়গা ত্যাগ করেন, আর ভবিষ্যতে এরকম করলে শিশু মোজাম্মেলের হাত-পা ভেঙ্গে দিবে বলে সরোয়ার অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেন।

ঐদিন শিশু মোজাম্মেলের পিতা সোবাহান জরুরী কাজের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। দুদিন পরে সোবহান বাড়িতে আসলে শিশু মোজাম্মেলের নাক দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং বমি বমি ভাব হয়। নিরুপায় হয়ে সোবাহান শিশু মোজাম্মেলকে সাথে নিয়ে তালতলী একজন ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার প্রাথমিকভাবে দেখে কিছু ঔষধ লিখে দেন, মাথায় চোটের কারণে রক্তক্ষরণ ও বমি বমি ভাব হতে পারে বলে ডাক্তার বলেন এবং ঔষধে না কমলে শিশু মোজাম্মেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তার বরিশাল নিয়ে যেতে বলেন। বরিশালের ডাক্তারের শরণাপন্ন এবং শিশু মোজাম্মেলের  বিভিন্ন রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সোলেমান এর অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়।

হালিম হাওলাদার বলেন, বেশ কিছুদিন পূর্বে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত সরোয়ার আমাকে নাকে মুখে এবং দাড়ি ধরিয়া ঘুসি মারে, তার বক্তব্যে আরো স্পষ্টতা প্রকাশ পায় যে, সরোয়ার এর শ্বশুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির প্রভাব খাটিয়ে সালিশ গনকে কনভেন্স করে।

ভুক্তভোগী আমির হোসেন বলেন, সরোয়ার একজন ঊশৃংখল প্রকৃতির  লোক। গত এক বছর পূর্বে আমার একটি পোষা ছাগল ছিল। সরোবরের  বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলে খামখেয়ালীপনা বসতো সরোয়ার ছাগলটির পাও কেটে নেয়, এর প্রতিবাদ জানালে সরোয়ার হুমকি-ধামকি দিয়ে বলে আপনি আমাকে কিছু করতে পারবেন না, যাহা-কিছু আপনি করতে পারেন।

নির্যাতিত শিশুটির বাবা সোবহান বলেন, সরোয়ার আমার  ছেলেটিকে অহেতুক মারধর করেছে এতে আমার মনে কোন কষ্ট নেই, তবে সম্পর্কের ভাই হয়েও আমার ছেলেটার অসুস্থতার কথা জেনেও কোনো খোঁজখবর নেয়নি, সরোয়ার আমার ছেলেকে মারার কারনে বমি বমি সহ নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে ছেলের পিছনে চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছি, গ্রাম্য সালিশ মীমাংসায় যাবে কথা বলে সরোয়ার নানা রকমের তালবাহানা করে।

ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মেম্বার বলেন, এলাকার জনপ্রতিনিধি হিসেবে শিশুটির বাবা সোবহান আমাকে জানিয়েছেন, যেহেতু সরোয়ার এবং সোবাহান সম্পর্কে আত্মীয়-স্বজন ভাই সম্পর্ক। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তাদের উভয়ের মধ্যে  বিরোধ নিষ্পত্তি সাপেক্ষে মীমাংসা দিবে বলে সাংবাদিকদের সাথে একথা বলেন।