রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গোচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন সেমিপাকা ঘর ভেঙ্গে বিক্রয় করে টাকা আত্বসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি।

0
719

রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভায় অবস্থিত গো-চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি পুরাতন চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমিপাকা ঘর ভেঙ্গে বিক্রয় করে টাকা আত্বসাৎ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিবর সর্দ্দার।

আমাদেও প্রতিবেদক সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের  কাউন্সিলর নওশাদ আলী বলেন, বর্তমান বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জায়গায় আনুমানিক দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট ও প্রস্থ ২৪ ফুট যাহা ১৮ টি আরসিসি পিলারের উপর কাঠের ফ্রেমে করগেট টিনের ছাউনী দিয়ে একটি সেমিপাকা ঘর ছিল। বিদ্যালয়ের নতুন ভবন তৈরীর প্রাক্কালে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সহযোগীতায় কমিটির সভাপতি আজিবর সর্দ্দার ভেঙ্গে বিক্রয় করে টাকা আত্বসাৎ করেছেন। বর্তমানে এলাকায় এ বিষয়ে নানা কথার গুঞ্জন উঠেছে, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী টেন্ডার/ নিলামের মাধ্যমে হওয়া উচিত ছিল কিন্তু তা না হয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিরর সদস্যদের সহযোগীতায় সভাপতি বিক্রয় করে টাকা আত্বসাৎ করেছেন।

এ বিষয়ে সংশিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতান মাহামুদ ও  শিক্ষিকা মিনারা খাতুন বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জায়গায় পূর্বের একটি লম্বা সেমিপাকা ঘর ছিল যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাশ নেওয়া হতো। সেই সেমিপাকা ঘরটি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ভেঙ্গে বিক্রয় করেছেন, তবে বিক্রয়লদ্ধ টাকা কি করেছেন তা জানি না। শিক্ষিকা মিনারা খাতুন আরো বলেন, পুরাতন ঘরটিতে কম মূল্যের করোগেট টিনের ছাউনী ছিল। 

এবিষয়ে আমাদের প্রতিবেদক বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নিকট বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য মোবাইলে চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেন নাই। তবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। তবে নথিপত্র খুজে বিদ্যালয়ের পুরাতন সেমিপাকা ঘরের কোন তথ্য অফিসে নেই। তিনি আরো বলেন, গত ১ জানুয়ারী ২০১৩ ইং সনে প্রথমে সকল রেজিষ্টার বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সরকারী করন করা হয় এবং তৎপরবর্তী বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষকদেরকে সরকারী বেতন-ভাতাদির আওতায় আনা হয়।  জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোবাইলে বলেন, বিদ্যালয়ের পুরাতন ঘর এভাবে বিক্রয় করতে পারে না। তবে জানলাম, এখনই বিষয়টা নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

সর্বশেষ এবিষয়ে আমাদের প্রতিবেদক মোবাইলে কমিটির সভাপতি আজিবার সর্দ্দার কে জিজ্ঞাসা করিলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশীরা বলেন, বিদ্যালয়টি পরিবারতন্ত্রে রুপ নিয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী, বোন এবং বোনের মেয়ে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আছেন এমনটি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের আশে পাশের জনগন। বাংলাদেশ সরকার যখন দেশের উন্নয়ন ও অনিয়ম-দুর্নীতির বিপক্ষে শতভাগ অবস্থানে রয়েছেন, ঠিক  এমন সময়ে কিভাবে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন সেমিপাকা ঘর, যার আনুমানিক মূল্য এক লক্ষ টাকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেখে ও সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে বিক্রয় করেন এবং উক্ত বিক্রয়লদ্ধ টাকা নিজ পকেটে রেখে নিজের স্বার্থ হাসিল করেন এমনটিই প্রশ্ন সাধারন জন সাধারনের। দেশ এখন উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে আর ঠিক এমন মুহুর্তে এধরনের অন্যায়, অনিয়ম উন্নয়নের পথকে বাধাগ্রস্থ করছে, এ বিষয়ে যথার্থ তদন্ত করে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার দাবী করেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

seventeen − 14 =