মহান মুক্তিযুদ্ধে দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতি যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, এদেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় জাতি ও রাষ্ট্র গঠনে যখন তৎপর, ঠিক তখনই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে স্বাধীন পরবর্তী বাংলাদেশকে মেধা শূন্য করার নীল প্রণয়ন করে, নৃশংসভাবে তাদের হত্যা করে, সে ষড়যন্ত্র আজও বিদ্যমান। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর এমনটাই জানান বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)।
বোয়াফ সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর কুখ্যাত রাজাকার, আলবদর ও আলসামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বেছে-বেছে হত্যার যে নীল-নকশা প্রণয়ন করেছিল, নৃশংসভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, সে ষড়যন্ত্র আজও অব্যাহত রেখেছে স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের বংশধর। আজও বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে, রাজনৈতিক সেমিনার-সভায় দেশের স্বাধীনতার পক্ষের বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে, ধর্মী অপব্যাখ্যা ছড়িয়ে হত্যার ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে।
কবীর চৌধুরী তন্ময় আরও বলেন, স্বাধীনতার পক্ষের ও ইতিহাসের স্বাক্ষী দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, লেখক, গবেষক, সাহিত্যিক, বিচারপতি বিশেষ করে আব্দুল গাফফার চৌধুরী, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, শাহরিয়ার কবির, মুনতাসীর মামুন, মুহম্মদ জাফর ইকবাল,
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে যেভাবে ধর্মীয় সভা-ওয়াজ মাহফিলে হত্যার ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের পরাজীত স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার ও রাজাকার শাবকদের ষড়ন্ত্রের অংশ বলেই প্রতীয়মান হয়।
ওই ষড়যন্ত্রের অংশে সবচেয়ে বেশি কদর্য ভাষা, ধর্মীয় অপব্যাখ্যা আর ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক মন্তব্যের শিকার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, যাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র আজও বিদ্যমান বলে মনে করেন কবীর চৌধুরী তন্ময়।
বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, আজকের তরুণ প্রজন্ম ছাত্রসংঘের কথা জানে না, জানে ছাত্র শিবিরের কথা। তারা বিএনপি-জামাতের অপরাজনীতির কথা জানে না, জানে খালেদা জিয়া অসুস্থতার কথা। নতুন প্রজন্মকে জানার আগ্রহ তৈরি করতে হবে। হাতের মোবাইল দিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় আমাদের জন্ম পরিচয় সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানতে হবে, বন্ধুদেরও জানাতে হবে এবং স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার ও রাজাকার বংশধরদের বয়কট করতে হবে, তাদের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আমাদদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শ্রদ্ধা জানাতে এ সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বোয়াফ সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, হাবিব এ রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ইমরান খান, মহিবুল্লা সাঈদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জুয়েল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নাঈমুর রহমান ইমন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।