সংবিধান লঙ্ঘনকারীদের ক্ষমা চাওয়া উচিত আ স ম রব

0
402

রাষ্ট্রপতি আহূত সংলাপ, দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় করণীয় প্রশ্নে আজ জেএসডি’র প্রেস ব্রিফিং এ আ স ম আবদুর রব ‘বলেন নির্বাচন প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি, সরকার, নির্বাচন কমিশন সকলেই সংবিধান লঙ্ঘনের সাথে জড়িত। যারা সংবিধান লঙ্ঘনকারী তাদের অবশ্যই জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাওয়া উচিত।বিদ্যমান নির্বাচন কমিশন বর্তমান রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত। কিন্তু এই কমিশন চরম পক্ষপাতদুষ্ট  হয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মাধ্যমে ‘দিনের ভোট রাতে’ সম্পন্ন করে সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্নকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে এবং সমগ্র জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। 

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অপসারণ চেয়ে দেশের বিশিষ্ট ৪২ জন নাগরিক ২০১৯ সালে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন। চিঠিতে কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং বিভিন্নভাবে আইন ও বিধি বিধান লংঘন করার গুরুতর অসদাচরণের চিহ্নিত ক্ষেত্রের বিস্তারিত বিবরণ যুক্ত ছিল। গুরুতর অসদাচরণ ও অনিয়মে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থা কর্তৃক প্রাথমিক অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এবং প্রমাণ সাপেক্ষে তদন্তের জন্য সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ মোতাবেক রাষ্ট্রপতিকে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল’ কাউন্সিলে পাঠানোর বিনীত অনুরোধও জানিয়েছিলেন তাঁরা।

তারপরও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনের গুরুতর অসদাচরণের তদন্ত করার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করেননি। বরং রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থেকে নির্বাচন কমিশনকে দায়মুক্তি দিয়েছেন যা সংবিধান লঙ্ঘনের নামান্তর।

 শুধুমাত্র ‘নির্বাচন কমিশন’ গঠন নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচনের জন্য কোন গ্যারান্টি বা সমাধান নয়।

ফলে, বাস্তবতার প্রেক্ষিতে মহামান্য রাষ্ট্রপতির সংলাপে জেএসডি অংশগ্রহণ করছে না।

সংলাপ হবে নির্বাচন কমিশন নিয়ে নয়, সংলাপ হতে হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ‘জাতীয় সরকার’ গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে।

একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গ্যারান্টি এখন অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে

ইতোমধ্যে আমরা ‘জাতীয় সরকার’-এর প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছি। 

আ  স ম রব আরো বলেন আমাদের রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে সুশাসন ও গণতন্ত্রের অনুপুস্থিতির কারণে ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশ বড় ধরনের সংকটে নিপতিত হতে যাচ্ছে। যেমন:

১) গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, এবং  

২) জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ৬০০ নাগরিক গুম হওয়া সংক্রান্ত উত্থাপিত অভিযোগ। 

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং জাতিসংঘের উত্থাপিত গুম সংক্রান্ত প্রশ্নকে উপেক্ষা করার কুফল, সুদূর প্রসারী প্রভাব এবং পরিণতি যথাযথ বিবেচনায় না নিলে রাষ্ট্র আভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার প্রশ্নে বড় ধরনের হুমকিতে পড়বে, যা সমগ্র জাতির উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু পূর্ব থেকেই আমরা সরকারকে এসব বিষয়ে সতর্ক করে আসছিলাম। কিন্তু সরকার ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ‘প্রকৃত সত্য’ উদঘাটন ও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা না নিয়ে রাষ্ট্রকে ঝুঁকিতে ফেলেছে।  

তাই আমাদের আইনের শাসন, ভোটাধিকার ও অংশিজনের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনীতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে।

আ স ম রব এর বাসভবনে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট  ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, তানিয়া রব, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, তৌহিদ হোসেন, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী এবং অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন বেলাল, শামসুল আলম নিক্সন, ফারজানা দিবা,মোহাম্মদ শফিক, গোলাম মোস্তফা আফসার উদ্দিন প্রমূখ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × four =