১লাখ টাকায় ১৪ লাখ টাকা লাভ আদায় : আটক ০২

0
692

নিজস্ব প্রতিবেদক:ক্ষুদ্র ঋণ আদান-প্রদানের কোন লাইসেন্স না থাকলেও উচ্চ হারে সুদে টাকা প্রদান ও গ্রহণ করে নিরীহ লোকদের ঠকিয়ে আসছিল  প্রতারক চক্র। এক লক্ষ টাকা ধার দিয়ে দুই বছরে ১৪ লক্ষ টাকা লাভ আদায় এবং ৩৩ লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা করার অভিযোগ রয়েছে এ চক্রের বিরুদ্ধে।  রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা হতে প্রতারক চক্রের ০২ সদস্য মোসাঃ রানু বেগম (৪৪) এবং মোসাঃ সাহিদা আক্তার (৩৪) কে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৩)।র্যাব-৩ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ফারজানা হক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এএসপি ফারজানা হক জানান,সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি অভিযানিক দল জানতে পারে যে, প্রতারক চক্রের সদস্য মোসাঃ রানু বেগম  ও মোসাঃ সাহিদা আক্তার  দীর্ঘদিন যাবৎ সবুজবাগ থানা এলাকায় বিভিন্ন নিরীহ লোকদের লোভনীয় কথা বার্তা বলে টাকা ধার নেয়ার জন্য উৎসাহ প্রদান করে প্রতারণামুলকভাবে উচ্চ হারে সুদে টাকা প্রদান ও গ্রহণ করে আসছে। উক্ত অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারী) বিকেল সোয়া ৪টার সময় রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য নারায়ণগঞ্জ জেলার মোসাঃ রানু বেগম  ও বরিশালের মোসাঃ সাহিদা আক্তারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এএসপি জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের হেফাজত হতে  ঋণগ্রহীতাদের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ব্যাংকের ৩০ টি ব্যাংক চেক, ঋণগ্রহীতাদের স্বাক্ষরিত ৩৪ টি ১০০ টাকার ব্যাংক ষ্ট্যাম্প, ৩৬ পাতা বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ০৭ টি টাকা জমা দেয়ার বই, ০২ টি গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা তোলার পকেট নোট বুক এবং ০৬ টি বিভিন্ন নামের এনআইডির ফটোকপি উদ্ধার কার হয়।

ফারজানা হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীদ্বয় জানায় , তাদের কাছে ক্ষুদ্র ঋণ আদান-প্রদানের কোন লাইসেন্স নেই। কোন ঋণগ্রহীতা ১,০০,০০০/-টাকা সুদে লোন নিতে চাইলে, জামানত হিসেবে ঋণগ্রহীতার স্বাক্ষরিত ০২ টি ব্যাংক ব্যাংক চেক ও ব্যাংক স্ট্যাম্প নেওয়া হয়। এছাড়াও উক্ত ১০০০০০/-টাকা হতে জামানত হিসেবে ১৫০০০/- ও অগ্রীম ১০ দিনের কিস্তি বাবদ ১০০০০/-টাকাসহ মোট ২৫০০০/-টাকা কর্তন করে ৭৫০০০/-টাকা ঋণগ্রহীতার হাতে তুলে দেওয়া হয়। যতদিন ঋণগ্রহীতা এককালীন ১০০০০০/-টাকা আসল পরিশোধ করতে পারবে না, ততদিন ঋণগ্রহীতাকে দৈনিক ১০০০/-টাকা লাভ দিতে হবে। প্রতিদিনের ১০০০/-টাকা লাভ দিতে পারলে পরের দিন ১৩০০/-টাকা দিতে হবে, বকেয়া কিস্তি ১০০০০/-টাকা হলে সপ্তাহে আরও অতিরিক্ত ২০০০/-টাকা লাভ দিতে হবে। যদি ঋণগ্রহীতা আসল টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, তখন ঋণগ্রহীতার স্বাক্ষরিত ব্যাংক চেকে ইচ্ছামত টাকার অংক বসিয়ে চেক ডিজঅনার করে মামলা দিয়ে ঋণগ্রহীতাকে হয়রানি করা হয়। এভাবে যদি টাকা আদায় করা সম্ভব না হয় তখন ঋণগ্রহীতার স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। এভাবে উক্ত চক্র একজন ঋণগ্রহীতাকে এক লক্ষ টাকা ধার দিয়ে দুই বছরে ১৪ লক্ষ টাকা লাভ আদায় করে এবং আসল টাকা উদ্ধারের জন্য ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে ৩৩লাখ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা দেয়। মামলাটি বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। উক্ত ভূক্তভোগীর মত প্রায় শতাধিক ঋণগ্রহীতার নিকট হতে  চক্রটি বিগত ০৫ বছরে ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় জিডি ও বিজ্ঞ আদালতে সিআর মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। ধৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় নিয়মিত মামলা রজু করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

16 − 3 =