সরকার ‘জয় বাংলা’ উচ্চারণের নৈতিক অধিকার হারিয়েছে………..আ স ম রব

0
396

আপরাধ বিচিত্রা ডেক্স নিউজ:   স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক জেএসডি সভাপতি  আ স ম আবদুর রব বলেন’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিচ্ছিন্নতা ও বিশ্বাসঘাতকতা এবং ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে যারা বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে সংকটগ্রস্ত করে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান উচ্চারণের নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। বৈষম্য, শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জয় বাংলা স্লোগান বাঙালির সংগ্রামী সত্তার বহিঃপ্রকাশ।আমাদের দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একটি পরিবারের কাছে ক্রমাগত বলি হয়ে যাচ্ছে।’ঢাকা মহানগরের মীরপুর থানার  বিভিন্ন দলের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী সংগঠক আজ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবী জনগণের নীতি নির্ধারণ ও রাষ্ট্রপরিচালনায় অংশীদারিত্ব ভিত্তিক রাজনীতির প্রতি একাত্মতা ঘোষণার মাধ্যমে দলে যোগদান করেন। যোগদান অনুষ্ঠানে আ স ম আবদুর রব উপরোক্ত বক্তব্য প্রদান করেন। 

উত্তরাস্থ বাসভবনে আয়োজিত যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন  কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, স্থায়ী কমিটির সদস্য তানিয়া রব, কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল  ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা গোলাম মোস্তফা প্রমুখ। 

যোগদানকারী নেতৃবৃন্দের মাঝে সর্বজনাব বীর মুক্তিযুদ্ধা মাইনূর রহমান, মোঃ ফারুক হাসান, আজিজুল হক, মোঃ গোলাম মোস্তফা, শাহ আলম, রাশিদা ইসলাম, মজিবুর রহমান রিপন এবং মাছুদুর রহমান অপু প্রমূখ।

আ স ম রব বলেন, সরকার  দলীয় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য সকল ঐতিহাসিক অর্জনগুলোকে সুকৌশলে আত্মসাৎ করছে। যারা জনগণের ভোটাধিকার, মৌলিক অধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করে বাংলাদেশকে দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তাদের পতনকে ত্বরান্বিত করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। 

আ স ম রব স্মৃতিচারণ করে বলেন সিরাজুল আলম খানের নেতৃত্বাধীন নিউক্লিয়াসের অন্যতম দুই সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতা আফতাব উদ্দিন আহমেদ এবং চিশতী শাহ হেলালুর রহমান ১৯৬৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বাংলার মাটিতে সর্বপ্রথম জয়বাংলা শ্লোগান উচ্চারণ করেন। তোমার আমার ঠিকানা -পদ্মা মেঘনা যমুনা, বীর বাঙালি অস্ত্র ধর – বাংলাদেশ স্বাধীন করো, স্বাধীন করো স্বাধীন করো – বাংলাদেশ স্বাধীন করো, তুমি কে? আমি কে? বাঙালি- বাঙালি, পিন্ডি না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা। এসব স্লোগানও নিউক্লিয়াসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। এসব স্লোগান ছিল স্বাধীনতাকামী বাঙালির প্রাণের স্পন্দন, স্বাধীনতার বীজমন্ত্র। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ একটি পত্রিকা প্রকাশ করে ‘জয়বাংলা’ নামে এবং ছাত্রদের নিয়ে ‘জয়বাংলা বাহিনী’ও গঠন করা হয়। 

মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে এবং নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব এবং সংগঠকদের অনন্যসাধারণ সংগ্রামী ভূমিকাকে অস্বীকার করে বর্তমান সরকার একক ব্যক্তি তথা পারিবারিক ইতিহাস কায়েমের আজগুবি এক নতুন বয়ান উত্থাপন করে যাচ্ছে। শাসকের বয়ান ইতিহাস নির্মাণের উপকরণ যোগায় না, এই ন্যূনতম শিক্ষা বর্তমানের সরকারের নেই।

সভায় অ্যাড. ছানোয়ার হোসেন তালুকদার  বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও কর্তৃত্ববাদী অপশাসন উচ্ছেদ, সকল ধরনের স্বৈরাচার, অন্যায় অবিচার ও উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে গণজাগরণের মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠন করার লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।  শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন বাঙালির তৃতীয় জাগরণের এই পর্যায়ে গণআন্দোলন সৃষ্টি করে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি পুনর্গঠনের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক কর্তব্য সম্পাদন করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × 3 =