মো: পেয়রুল ইসলাম:পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার খাগরাছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটিতে অনুমোদন ছাড়া অসংখ্য ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। পাহাড় কেটে ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছে। বনের গাছ কেটে জালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর প্রতিকারের জন্য জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ একটি রিট পিটিশন করে। রিটের শুনানী শেষে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগরাছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটিতে যেসব ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে সেগুলো বন্ধে বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানাতে বলেছে এবং অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ধারা ৪.৫.১৪.১৮ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না মর্মে ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেন।
বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি ফাতেমা নজিব এর আদালত এ রুল জারি করেন। শুনানিতে এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুসারে কোন ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না এবং চালালে ধারা ১৪ অনুসারে ২ বছরের সাজার বিধান আছে। তা সত্বেও পার্বত্য জেলার লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সকল ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন কার্যকরি ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উক্ত আইনের ৫ ধারা বিধান অনাসারে পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় কাচামাল হিসেবে ব্যবহার হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
এর ফলে পার্বত্য এলাকায় অনেক পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রশাসনের সামনে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে যা সম্পূর্ন অবৈধ। আদালত শুনানি শেষে এক অন্তর্বতিকালিন আদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সহ অন্যদেরকে সকল লাইসেন্স বিহীন ইটভাটা আগামি ৭ দিনের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন এবং ২ সপ্তাহের মধ্যে আদালতে কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত অপর এক আদেশে লাইসেন্স ব্যতিত পরিচালিত সকল ইটভাটার তালিকা আগামি ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রস্তুত করে আদালতে এফিডেভিট দাখিলের জন্য ৩ জেলার জেলা প্রমাসক ও চট্টগ্রাম এলাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সহ অন্যদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ এর পক্ষে পিটিশনার হলেন এডভোকেট মো: ছারওয়ার আহাদ চৌধুরি, একলাছ উদ্দিন ভুইয়া এবং এডভোকেট রিপন বারৈ। বিবাদিরা হলেন পরিবেশ সচিব, ডিজি, পরিবেশ অধিদপ্তর, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম, ডিসি, এসপি, খাগরাছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসি গুইমালা, দিঘীনালা, বোয়ালখালি এবং আলিকদম সহ মোট ২৪ জন। আদালতে রিট পিটিশন বাদির পক্ষে শুনানী করেন সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট সনজয় মন্ডল এবং সরকার পক্ষে ছিলেন ডিএজি তুষার কান্তি রায়।