পর্যটকদের পদচারনায় ফালগুনের শেষের দিকে  মুখরিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

0
579

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগমন ঘটেছে অসংখ্য পর্যটকদের। ফালগুনের শেষের দিকে প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারনায় মুখর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। সৈকতে যেন তিল ধারনের ঠাই নাই। আগত পর্যটকরা সমুদ্রের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতে ওঠেন। অনেকেই প্রিয়জনদের সাথে সেলফি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ঝিনুক মার্কেট, রাখাইন মার্কেটে বেচাকেনার ধুম পরেছে। খাবার হোটেল গুলোতেও খাবারের জন্য ভীড় দেখা গেছে। এদিকে সৈকতের ঝাউবাগান, শুটকি পল্লী, লেম্বুর চর, সুন্দরবনের পুর্বাংশ ফাতরার বন, গঙ্গামদির লেক, চর বিজয়, বৌদ্ধ বিহার, কুয়াকাটার কুয়া, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে পর্যটকের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। পর্যটকের এমন ভীড়ে বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার বেশিরভাগ হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট গুলোতে।

অধিকাংশ পর্যটকরাই বাস নিয়ে মহল্লা ভিত্তিক পিকনিকে আসে। পিকনিকে আসা ভ্রমণ পিপাসুরা নিজেদের রান্না করে খেতে দেখা গেছে।  সকালে এসে সূর্যাস্ত অবলোকন করে আবার নিজ গন্তব্যে ফিরে যান পিকনিকে আসা পর্যটকরা। আগত পর্যটকদের বেশিরভাগই উত্তর পশ্চিমাঞ্চল থেকে ভ্রমণে এসেছেন। আবার অনেকেই এসেছেন পরিবহনসহ নিজস্ব গাড়ী নিয়ে। বৃহস্পতিবার পর্যটকদের আগমন কম থাকলেও শুক্রবার ভোররাত থেকে দিনভর পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে এসে ভীড় জমায়। শনিবার পর্যন্ত এমন ভীড় থাকবে বলে জানান পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা।

তবে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি নজরদারী ছিল চোখে পড়ার মত।

মাদারীপুর শিবচর থেকে ভ্রমণে আসা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, প্রকৃতিতে ভরপুর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। এখানকার সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের অপরুপ দৃশ্য, রাখাইন মার্কেট, বৌদ্ধ মন্দির, কুয়াকাটার কুয়া ঘুরে দেখেছি। কুয়াকাটার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে বার বার ছুটে আসি। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে আমাদের সংস্থা থেকে দুই শতাধিক কর্মী কুয়াকাটা আনন্দ ভ্রমণে আসবেন। এজন্য অগ্রিম রুম বুকিং দিয়ে রেখেছি। পর্যটক শাহাবুদ্দিন জানান, এখানে প্রচুর পরিমান পর্যটকদের আগমন ঘটছে। সেই তুলনায় অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগসহ সূযোগ সুবিধায় অনেকটাই ঘাটতি রয়েছে। এখানে বীচের সৌন্দর্য বর্ধনসহ অবকাঠামোগত আরও উন্নয়ন প্রয়োজন রয়েছে। কারন পদ্মা সেতু খুলে দিলে এখানে পর্যটকদের ঢল নামবে। যা সামাল দেয়া কষ্ট হয়ে যাবে।

অভিজাত আবাসিক হোটেল সিকদার রিসোর্ট এন্ড ভিলাস’র জেনারেল ম্যানেজার আল আমিন খান উজ্জল বলেন, ফালগুন মাস জুড়েই পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় ছিল। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তার রিসোর্টসহ প্রতিটি হোটেলেই শতভাগ বুকিং রয়েছে। আগামী সপ্তাহের ১৭,১৮,২৪ ও ২৫ মার্চ অগ্রিম বুকিং এর জন্য পর্যটকরা যোগাযোগ করছেন। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার আঃ খালেক জানান, অসংখ্য পর্যটকের পদভারে মুখর কুয়াকাটা সৈকত। আগত এসব পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। দর্শনীয় স্পট গুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × two =