প্রভাবশালীদের ও নেতাদের ম্যানেজ করে ’’ শূন্য থেকে উঠে আসা এক অপরাধ মহা রাজার…টুন্ডা মোমিনের কাহিনী

0
430

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বহুল আলোতি বনানীর ও কড়াইল বস্তির অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রনকারী ও মাদক ব্যবসায়ী  টুন্ডা মোমিন আবারো গণ মাধ্যমের আলোচনায় এসেছেন। সে টাকার বিনিময়ে এমন কোনো  অবৈধ কাজ নেই সে করে না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ  গ্যাস সংযোগ না নেওয়ার কারণে এবার এক দম্পতিকে ছুরিকাঘাতে ক্ষতবিক্ষত করলো টুন্ডা মোমিন। শুধু  এলাকার এই দম্পতিই নয় এরকম অসংখ্যা ঘটনা সে দীর্ঘদিন ধরে ঘটিয়ে চললেও সে বরাবরই থেকে যাচ্ছে প্রসাশনের ধরাছোঁয়ার বাইরে । গুলশান ও বনানীর একাংশের অপরাধ সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রন কর্তা হিসেবে সে ইতিমধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে কতিপয় তৃতীয় শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা ও একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির আশীর্বাদে নিজেকে বানিয়েছেন এ অপরাধের মহা রাজা । তার অপরাধ সাম্রাজ্যের মূল রাজধানী বা কন্ট্রোলরুম গড়ে উঠেছে কড়াইল বস্তিকে কেন্দ্র করে।

টুন্ডা মোমিন এ করাইল বস্তী থেকে নিয়ন্ত্রন করেন অপরাধ সাম্রাজ্য রাজ্যত্ব ও মাদক সহ আরো অপরাধ মূলক অনেক কর্মকান্ড। এখানে অবৈধ ভাড়া উত্তোলন, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, অবৈধ গ্যাস, বিদ্যূৎ, ওয়াসা লাইন দেওয়ার নামে সে প্রতিনিয়ত লুটছে কোটি কোটি  টাকা। এসব নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলেই তার তার ওপরে নেমে আসছে নির্যাতনের স্টিম রোলার গোপন রুমের ভয়াবহ নির্যাতন । প্রকাশ্যেই করা হচ্ছে হামলা্‌। আবার কখনো কখনো ভৈাতিক মামলা দিয়ে তাদেরকে টুন্ডা মোমিন কোনঠাসা করছে বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগিদের।

গণমাধ্যম কর্মী বা সাংবাদিক তার অপরাধ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ করার কারণে টুন্ডা মোমিন সাংবাদিকে হামলা ও মামলা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করেন।

তবে বনানী ও কড়াইল এলাকার বেশ কজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “ আর কত মামলা হলে টুন্ডা মোমিন অপরাধী হিসেবে পুলিশের কালো তালিকাভূক্ত হবে?” তাঁরা আরো বলেন এ এলাকায় টুন্ডা মোমিনের নামে অসংখ্য মামলা থাকলেও তার সাথে অনেক পুলিশকেও বন্ধুর মতো চলাফেরা করতে দেখা যায়

 মোমিন একাধারে পুলিশ ও রাজনীতির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে ইতিপূর্বে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অপরা্ধকারী সন্ত্রাসী চক্র স্থায়ি মসনদ বানাবার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি বার বার পুলিশের ধরাছয়ার বাইরে আছেন

মোমিন ও তার সহযোগী ,,,তাদের ব্যক্তিগত কুকর্ম আড়াল করতে রাজনীতির দলীয় ব্যানার ব্যবহার করে তারা রাজনৈতিক দলকে কালিমালিপ্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। টুন্ডা মোমিনের মত  বহু মামলার আসামিরা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে ইতিপূর্বে সাইনবোর্ড ব্যবহার করলেও শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছে।

এব্যাপারে শীঘ্রয় প্রসাশনিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরী কেউ কেউ মনে করছেন । বনানী থানার নব্য তাঁতী লীগের নেতা মোমিন সরকার ধরাছোঁয়ার বাইরে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে স্থানীয়দের দাবি নেতাদের ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হয়তো থাকার কারণে আলোচিত বহু মামলার আসামি মোমিনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।

আলোচিত-সমালোচিত বহু মামলার আসামী মোমিন সরকার ওরফে টুন্ডা মোমিন  গুলশান-বনানী কড়াইল মহাখালী  বনানী থানা তাঁতী লীগের বর্তমান সভাপতি । কেউ কেউ তাকে ডাকেন গ্যাস মোমিন বা চোরা মোমিন নামে ।ইতিপূর্বে গুলশান থানা পুলিশের হাতে  গ্রেপ্তার হয়েছে মোমিন।

গতবছর ২৭ মার্চ শনিবার গাড়ি এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির মামলায় মোমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৮ মার্চ রবিবার মোমিনকে গুলশান থানা পুলিশ ৩৭৯ ধারায় চুরির মামলায় আদালতে প্রেরণ করে। যার মামলা নম্বর-১২।

এ ব্যাপারে গুলশান থানা ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলাম ঐ সময় বলেন, মোমিন একজন চিহ্নিত দাগী সন্ত্রাসী এবং চোরাকারবারি তার বিরুদ্ধে কড়াইল বস্তি এলাকায় গ্যাস চুরির অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে জানা যায়, মোমিন গুলশান-১ এ সাতাশ নম্বর রোডে গাড়ির পার্টস চুরির উদ্দেশ্যে গাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয়। এই সময় গুলশান থানার এসআই মশিউর রহমান তার গতিবিধি লক্ষ করতে থাকে। একপর্যায়ে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

আরেকটি সূত্র জানিয়েছেন সাবেক গুলশান জোনের ডিসি ও বর্তমান ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও( ৩১) (২৯) (৩২) নম্বর রোড দিয়ে মোমিনের নেতৃত্বে একাধিক মাদক কারবারি এ রাস্তা দিয়ে মাদক আদান-প্রদান করেন বলেও জানা গেছে। মোমিনের কিছু বাহিনীর লোকজন নৌকা দিয়ে চলাচল করছে বল সে রাস্তা চেকপোস্ট না থাকার কারণে মাদক লেনদেন করা অতি সহজ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও কাউন্সিলর এর কথা পাত্তা না দিয়ে অবৈধভাবে নৌকার চলাচল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন নৌকার মাঝি আরিয়ান হানিফ। সেইসাথে তিনি আরো বলেন সবাইকে ম্যানেজ করতে হয় স্যার নইলে তো চলবে না বলেও জানান প্রতিবেদককে। তবে এবিষয়ে মোমিনকে ফোন করলে ফোন রিসিভ না করার কারণে তাৎক্ষণিক তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে পুলিশের একজন এসআই গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন আমরা বাধা দেই তবুও তারা বাধা মানছে না, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কড়াইলের মোমিন চিহ্নিত মাদক কারবারি গাড়ি চোর এবং কড়াইল বস্তি এলাকায় আতংক সৃষ্টিকারী এই ব্যক্তি একর পর এক অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে অবৈধ গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বস্তির বিভিন্ন ঘরে সরবরাহ করে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেন। তার বিরুদ্ধে রাজনীতিতেও অবৈধ পন্থায় অর্থের প্রভাব খাটিয়ে বনানী থানা তাঁতী লীগের সভাপতি পথটি বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে।

অভিযোগ আছে মমিনের সাঙ্গ-পাঙ্গরা সন্ধ্যার পর কড়াইল বস্তি থেকে নৌকার মাধ্যমেগুলশান-১ এ প্রবেশ করে। এরপর সুযোগ বুঝে গুলমানের মতো সভ্য এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করে সহসাই ওই নৌকাতে পার হয়ে আবার কড়াইল বস্তিতে চলে আসে।

নানাবিধ অপকর্মের হোতা এই টুন্ডা মোমিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির অবৈধ ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোাগ আছে জমি/ প্লট ও ফ্লাট দখলের।  যাহা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে প্রকাশ হয়েছে ধারাবাহিকভাবে।

বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি হত্যা, গুলশান থানায় বোমা বিস্ফোরণ মামলা বনানী থানায় একাধিক জিডিও মামলা রয়েছেন টুন্ডা মোমিন এর বিরুদ্ধে। তার নামে একাধিক দায়ের করা মামলা নং ৮৩৬/১৫ তাং০৬/০৯/১৮ আরো একাধিক মামলা রয়েছে যার নং ৪৫৫/১৬, বনানী থানা মামলা নং৮/১/১৫, ১৬/৭/১৬, সি.আর মামলা নং ১৬,বনানী থানা মামলা নং ৬৯/১৭ গুলশন থানা মামলা নং, ৬/৮/১৮/বহু র‍য়েছে অজনা।

যখন দেশে সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস রেশনিং করেও সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, নতুন গ্যাস পাওয়া না গেলে দেশে গ্যাস সংকটের কারণে যখন বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ও আবাসিক এলাকায় গ্রাহক সাধারণের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একশ্রেণীর নেতা-কর্মী নামধারী একাধিক সংঘবদ্ধ লুটেরা চক্র সরকারি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চারশ’ মিলিয়ন ঘনফুটেরও বেশি পরিমাণ গ্যাস লুটে নিচ্ছে। সম্পূর্ণ চোরাইভাবে বাইপাস লাইন, মিটার ট্যাম্পারিং, খাতায় নাম-ঠিকানা না তুলেই অবৈধ গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, সংযোগ দিয়ে নানা কৌশলে গ্যাস চুরি-লোপাটের ঘটনা অবলীলায় ঘটে চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

2 × 5 =