দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি দেখার কেউ নেই

0
705

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাগলা ঘোড়া চলছে। এমন কোন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য নেই যার মূল্য প্রতিদিনই বাড়ে নেই । বলতে গেলে দেশে এক ধরনের নিরব দূর্ভিক্ষ চলছে। ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় টিসিবির পণ্য বিক্রির একটি ট্রাক থামলে ন্যায্য মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে অসংখ্য নারী-পুরুষ হুমরি খেয়ে পড়ছে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও অনেকে জিনিসপত্র কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। এই দৃশ্য ব্যস্ত ঢাকার অনেক স্থানেই দেখা যায়। সম্প্রতি টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে গিয়ে একজন নারী নিহত হওয়ার খবরে গণমাধ্যম সরব হয়ে ওঠে। আজকে দেশে ভোজ্য তেল নিয়ে যে তেলেসমাতি চলছে তা থেকে বেরিয়ে আসার কোন রাস্তা দেখা যাচ্ছে না।

একই অবস্থা চাল, চিনি, আটা পেয়াজ ও তরিতরকারি নিয়ে। এদিকে মাছ ও মাংশের দাম সরকার নির্ধারিত দামকে ছাড়িয়ে গেলেও কোন প্রতিকার নেই। নিন্ম মধ্য ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভের সাথে বলছেন যে, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন দলীয় রাজনীতির সাথে জড়িত।

অনেক ব্যবসায়ী সরকারের নীতি নির্ধারক। কাজেই তারা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে ভোক্তাদেরকে চুপসে মারছে। কে করবে এর প্রতিকার? রমজান মাস। এই মাসে প্রতি বছর স্বভাবিকভাবেই দ্রব্য মূল্য সাধারণের ক্রয় সীমার বাইরে চলে যায়। এক শ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ী মধ্যস্বত্বভোগীদের সাথে যোগসাজস করে খাদ্য দ্রব্য অন্যায়ভাবে মজুদ করে কৃত্রিম চাহিদা সৃষ্টি করে। এর পর দাম বাড়লে বাজারে এসব দ্রব্য ছাড়ে।

রাতারাতি টাকা বানায় তারা। এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ক্রেতা সাধারণ। বাংলাদেশে প্রবিত্র রমজানকে ইবাদতের মাস হিসেব গণ্য করলেও রমজানের আদর্শ ও পবিত্রতা রক্ষা হচ্ছে না বলে প্রতীয়মান। প্রতি রমজানে অসৎ ব্যবসায়ীদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ খুলে যায়। অপরদিকে সাধারণ ভোক্তারা আতংকে থাকে যে বাজারে গেলে পকেট কাটার মহোৎসব চলবে কি না।

প্রতি রমজান মাসে বাংলাদেশে বাজারে আগুন লাগার কারণে সাধারণ ক্রেতাদের অনেক মূল্য দিতে হয়। চলতি বছর জিনিসপত্রের লাগামহীন দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক দরিদ্র শ্রেণীর লোক যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা আমলে নেওয়া সরকারের দায়িত্ব বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।

বাজার নিয়ন্ত্রনে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের দু একটি অভিযান যথেষ্ট নয়। ভোক্তা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় নিয়ে একটি শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করে অতি দ্রুত চলমান সমস্যার সমাধান করতে না পারলে তা আরও নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 + 14 =