সুনামগঞ্জে প্রায় ৩ শত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি: পানি নিয়ে মহাবিপদে কৃষক 

0
552

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে ডুবে গেছে প্রায় ২০হাজার হেক্টর বোরো ফসল। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩শ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। তবে এখানেই শেষ নয়।বাংলাদেশ ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাদ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে- আগামী ৭২ ঘন্টায় ভারতের মেঘালয় ও আসাম প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্ঠিপাত হতে পারে। এর ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আবারও হাওরের ফসল ঝুকিতে পরতে পারে। এবং সুনামগঞ্জের সীমান্ত নদী যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, চলতি ও সুরমাসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে পারে বলে আশংকা রয়েছে।

এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান- গত ৪দিনে ধরে প্রতিটি নদীতেই পানি কমছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী ৭২ ঘন্টায় মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্ঠিপাতের ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ার আশংকা রয়েছে। আর এই পানির কারণে মহাবিপদে রয়েছে হাওরের কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে- এবার সুনামগঞ্জ জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ মে.টন। কিন্তু গত ৮দিনে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে জেলার দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরের ৪ হাজার ৮শত হেক্টর, ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনারতাল হাওরের সাড়ে ৩হাজার হেক্টর ও তাহিরপুর উপজেলার বৃহৎ টাঙ্গুয়ার হাওরের ৩হাজার হেক্টর জমির ফসলসহ ১২টি উপজেলার প্রায় ২০হাজার হেক্টর জমির ফসলহানীতে প্রায় ৩শ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

এছাড়াও গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে তাহিরপুর উপজেলার এরালিয়াকোনা হাওরের ফল্লিয়ার দাউড় বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৪হাজার হেক্টর ও ধর্মপাশা উপজেলার মুক্তারখলা হাওরের পাওধোয়া বাঁধ ভেঙ্গে ৫০হেক্টও জমির ধান পানিতে তলিয়েগেছে। তবে সরকারী ভাবে জেলার ১৪টি হাওরের ৫হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়েছে বলে হিসাব দেখানো হয়েছে। যার বাজার মূল্য ধরা হয়েছে  ১কোটি টাকা।

এব্যাপারে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান- কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙ্গে আবার কিছু জায়গায় বাঁধ উপছে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। তবে গত ২দিনে বৃষ্ঠি কমেছে। বৃষ্ঠি আর না হলে বড় ধরনের ক্ষতি হবেনা। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- এবার সুনামগঞ্জে ১০টি হাওরের ফসল তলিয়েগেছে। বর্তমানে জেলার অন্তত আরো ১০টি হাওরের ফসল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ব বৃহৎ নলুয়ার হাওর, তাহিরপুর উপজেলার শনি, মাতিয়ান ও গুরমার হাওর অন্যতম। কৃষকরা তাদের ফসল টিকানোর জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে। অন্যদিকে ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হাহাকার।    

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

three × four =