Site icon Aparadh Bichitra

মা বিড়ি বাঁধেন, বাবা রস বিক্রেতা, সেই পরিতোষ এবার মাধ্যমিকে প্রথম

মানুষের জীবনে চলার ক্ষেত্রে মূল কাজ হচ্ছে হল বিফলতাকে গুরুত্ব না দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া তাই জীবনের কোন পরীক্ষাই কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নেয়ার সুজোগ নেই ।তেমনি জীবন গড়ার প্রধান ক্ষেত্র হলো ছাত্র জীবন তাই প্রস্ততি নেয়ার ক্ষেত্র  হল মাধ্যমিক পরীক্ষা। বাঙালীদের জীবনে মাধ্যমিক হল একটি নস্টালজিয়া, সেই স্কুলে এক্কেবারে শুরুতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় এই নস্টালজিয়া এবং মাধ্যমিক শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থেকে যায় এই নস্টালজিয়া।তাই আমাদের কাছে মাধ্যমিক পরীক্ষা খুবই স্পেশাল। আর এই স্পেশাল মুহূর্তকে এঞ্জয় করতে আমরা এটাকে একটা উৎসবেই পরিণত করবো আরও কয়েক বছর পর, রেজাল্ট বেরতে না বেরতেই শত শত নিউজ রিপোর্টার মাইক হাতে পৌঁছে যান ১৫-১৬ বছর বয়েসি সেই র‍্যাঙ্ক করা ছেলেপুলে দের কাছে।

তারা কি পড়ত, কতক্ষণ পড়ত থেকে শুরু করে কখন দাঁত মাজত, কোন টুথ পেস্ট দিয়ে, সেটিও তাদের থেকে উগলে বের করে আনেন সেটিও বেশ মজাদার।আজ যে বালকটিকে নিয়ে আলোচনা করবো তার নাম পরিতোষ, পরিতোষ জয়নগরের ‘যে এম ট্রেনিং স্কুল’ এ পড়ে, বয়স মাত্র পনেরো বছর। খুবই মেধাবি ছেলে পরিতোষ, জয়নগরের মজিল পুরের রায়পাড়াতে এক ভাড়া বাড়ির চিলতে ভাঙ্গা দু’কামরার ঘরে বাবা ও মায়ের সাথে বাস করে পরিতোষ।

এই বছর জয়নগর থানা এলাকায় সব থেকে বেশি নম্বর নিয়ে পাশ করেছে পরিতোষ, পনেরো বছর বয়েসি পরিতোষের মাধ্যমিকের সাফল্যে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষক মহল। প্রতিবছরও সে স্কুল থেকে প্রথম হত, মাধ্যমিকেও সেই প্রথম হল। তাই আনন্দটা দ্বিগুন।

জয়নগর মোয়ার জন্যে জগত বিখ্যাত হলেও পরিতোষের বাড়ি কিন্তু তেমন বিখ্যাত নয়। অতি সাধারন বাড়ির ছেলে পরিতোষ, বাড়িতে আর্থিক অনটনও রয়েছে প্রচুর। বাবা মা দুই জনেই দিন মজুর, বাবার আখের রসের ব্যবসা, মা করে বিড়ি বাঁধার কাজ। তাই স্বাভাবিক ভাবেই খুব কষ্টে চলে তাদের সংসার।

পরিতোষের মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৬, সে বাংলাতে পেয়েছে ৯২, ইংরেজিতে ৯১, অঙ্কে ৯৯, জীবন বিজ্ঞানে ৯৬, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৭, ভূগোলে ৯২, সবই প্রায় ৯০ এর ঘরের সংখ্যা, মানে নাইনটি পারসেন্ট এরও বেশি।