গলাচিপায় রাজাকারপুত্র বাহাদুর এখন বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি প্রার্থী

0
359

স্টাফ রিপোর্টারঃপটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে অশিক্ষিত রাজাকারপুত্র বাহাদুর মিয়া সভাপতি প্রার্থী হওয়ায় স্থানীয়দের মুক্তিযোদ্ধা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটিতে রাজাকারের সন্তান হিসেবে তিনি কিভাবে সভাপতি প্রার্থী হলেন তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠলেও স্থানীয় আওয়ামীলীগই তাকে সভাপতির পদে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন দিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পানপট্টি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান, ৭৫ ঘাতকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নির্যাতন ও কারাবরণের শিকার, ধানমণ্ডির ততকালীন আর্দশ কলেজের ছাত্রলীগের নেতা মরহুম স ম জাহাঙ্গীর হোসাইন নিজস্ব অর্থ ও শ্রম, মেধা দিয়ে নিজের জমি বিক্রি করে বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুলটি প্রতিষ্ঠা কালীন সময়ে একই এলাকার কুখ্যাত রাজাকার দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার ঘোর বিরোধিতা করেন যেন বঙ্গবন্ধুর নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে, এ কারণে তিনি প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর হোসাইনকে গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছিলেন। অথচ এই রাজাকারের সন্তান বাহাদুর মিয়া এখন স্থানীয় বিতর্কিত আওয়ামীলীগের সাপোর্ট নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে জোর প্রচারনা ও ততবির চালাচ্ছে। স্থানীয়দের মতে বাহাদুর মিয়া এই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলে স্কুলটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে যাবে। কারণ তার বিগত দিনের সব পরিসংখ্যান এটাই বলে।

মুক্তিযোদ্ধা আলম মিয়া, মাহাবুব আলম, কাদের মিয়া সহ স্থানীয় অনেক মু্ক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাহাদুর মিয়ার বাবা মৃত দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পানপট্টি ইউনিয়ন শান্তি কমিটির সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তান বাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন এবং বিভিন্ন অপকর্ম সংগঠিত করেছেন। সে একজন তালিকাভুক্ত রাজাকার ছিলেন। যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে নিয়েছেন।মুক্তিবাহিনীরা তাকে মেরে ফেলার জন্য ঘেরাও করলে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধার সহযোগিতায় তাকে প্রাণ ভিক্ষা দেওয়া হয়।

কিন্তু সুবিধা ভোগি একদল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ছত্র ছায়ার এই লোকের সন্তানকে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের সভাপতির পদে নির্বাচনের সুযোগ দেয়া খুবই দুঃখজনক।

এধরনের ঘটনা প্রতিহত না করলে আওয়ামী লীগের সুনাম নষ্ট হবে বলে স্থানীয়দের দাবি।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কুদ্দুস ম্যালকার বলেন, দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পানপট্টি ইউনিয়ন শান্তির কমিটির সদস্য ছিলেন বলেই সে রাজাকার ছিলেন কথাটি সত্য নয়। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে সে পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করেছেন এবং ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাজনীতি করেছেন।

স্থানীয় সুত্র জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন সময় হতে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে স্কুলটি এমপিওভুক্ত করা হয়। কিন্তু স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা স ম জাহাঙ্গীর মারা যাওয়ার পর স্কুলটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বাহাদুর সিন্ডিকেটের হাতে। আর সিন্ডিকেটটি এতটাই জনবিচ্ছিন্ন যে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই সিন্ডিকেটের একজন নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 − 3 =