ব্যাংকিং জগতে অগ্রণী ভুমিকায় অগ্রণী ব্যাংক লি: এমডি মো: শামস-উল ইসলামের নিরলস প্রচেষ্টায় এই অর্জন

0
440

পেয়ারুল ইসলাম: সুদুর পাকিস্তান আমলের কথা। বর্তমান অগ্রণী ব্যাংক তখন হাবিব ব্যাংক লি: হিসেবে পরিচিত ছিল। বেতারযন্ত্রে ব্যাংকটির বিজ্ঞাপনে বলা হতো হাবিব ব্যাংক আমার ব্যাংক, আমার ব্যাংক, আমার ব্যাংক। এর পরই একটি ছোট শিশু উক্ত বিজ্ঞাপনে শুর মিলিয়ে বলতো, “আমালও তো“ (আমারও তো)। তৎকালে হাবিব ব্যাংক গ্রাহক সেবায় জনপ্রীয়তার শির্ষে ছিল বলে ব্যাংকিং জগৎ থেকে জানা গেছে। এরপর অনেক চড়াই উৎড়াই পার করে সাবেক হাবিব ব্যাংক স্বাধীনতার পর অগ্রণী ব্যাংক হিসেবে পরিচিত হয়। গত কয়েক বছর ধরে রাষ্টায়াত্ব সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও বেসিক ব্যাংকের ওপর বড় ধরনের আর্থিক ধ্বস নামে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি, বিসমিল্লা গ্রুপের চুরি, হলমার্কের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা চুরি ও বেসিক ব্যাংকের সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা চুরি ইত্যাদির পর রাষ্টায়াত্ব ব্যাংকগুলো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না।  চুরি ও খোলাপি ঋনে জর্জরিত হয়ে অনেক ব্যাংক ঋন প্রদান কমিয়ে দিচ্ছে। বড় আকারের ঋন প্রদান থেকে বিরত থেকে ক্ষুদ্র ঋনের দিকে ঝুঁকছে অনেক বেসরকারী ব্যাংকও ।

 জনতা ব্যাংক হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋন দিয়ে তা আদায় করেত পারছে না। ব্যাংকটির কর্মকর্তারাই বলছেন অনাদায়ী ক্ষেত্রে ঋন দিয়ে ফোকলা করে ফেলা হয়েছে জনতা ব্যাংকটিকে। সোনালী ও রুপালীর অবস্থাও সংকটাপন্ন। এদিক দিয়ে অগ্রণী ব্যাংক লি: অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশের অন্যান্য রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকের ওপর অবস্থান করছে।

 ঋন বিতরন, ঋন আদায় ও গ্রাহক সেবায় সর্বাগ্রে প্রথম কাতারে অগ্রণীর নাম। এর কৃতিত্বের দাবিদার বর্তমান এমডি মো: শামস-উল ইসলাম। তিনি প্রথম মেয়াদে এমডি হিসেবে নিয়োগের পর শুধু ব্যাংকিং জগতে প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেন। কারণ তখন ব্যাংকিং জগতে ঘোর অন্ধকার বিরাজ করছিল। দ্বিতীয় মেয়াদে এসে তিনি প্রথমে খেলাপি ঋন আদায়ে তৎপর হন। এরপর আমানত সংগ্রহে চালিকা শক্তি হিসেব অবতরণ করেন। যার কারণে ২০২১ সালে অগ্রণী ব্যাংকের আমানত দাঁড়ায় ৯.০০ লক্ষ কোটি টাকা। ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমানত ছিল ৪৯০০০ কোটি টাকা। যা ৫ বছরে বেড়ে হয়েছে দ্বিগুন। ঋন এর পরিমান ও দাঁড়িয়েছে ৫৯০০০ কোটি টাকাতে।

 ২০১৬ সালে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋন ছিল ২৭% যা ২০২১ সালে ১০% হয়েছে। ২০১৮, ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালে সরকারী সকল ব্যাংকের মধ্যে অগ্রণী ব্যাংকের রেমিটেন্স সর্বোচ্চ। ২০২০ ও ২০২১ সালে অগ্রণী ব্যাংকের আমদানী ও রপ্তানীর ক্ষেত্রে সকল সরকারী ব্যাংকের মধ্যে সর্বোচ্চ যার কান্ডারী হলেন বর্তমান এমডি ও সিইও শামস-উল ইসলাম। কর্পোরেট কাস্টমার সংগ্রহ এবং যথাযথ সেবা প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকের মুনাফা অর্জনে তিনি সদা জাগ্রত একজন নির্বাহী প্রধান। ব্যাংকের সিনিয়রদের প্রতি সন্মানের নজির হিসেবে প্রধান কার্যালয়ের ৫ম তলায় একটি এক্সিকিউটিভ ফ্লোর নামকরণ করেন।

এবার ব্যাংকটির আমিন কোর্ট কর্পোরেট শাখা, মতিঝিল, ঢাকার মহাব্যবস্থাপক এ কে এম ফজলুল হকের অবদানকে সামনে তুলে ধরতে হয়।  ঋন আদায়, খেলাপির পরিমান কমিয়ে আনা ও গ্রাহক সেবায় সার্বিক চেষ্টার মাধ্যমে তিনি আমিন কোর্ট কর্পোরেট শাখাকে একটি ভাল অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। তিনি ২০২০ সালের ১৬ ই নভেম্বর উক্ত শাখায় মহাব্যাবস্থাপক হিসেবে যোগদান  করেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে আমদানী, রপ্তানী ও রেমিটেন্স উল্লেখযোগ্য পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে। খেলাপি ঋনের মাত্রা ২৭% থেকে তিনি ১৩% এ নামিয়ে আনেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে এ পর্যন্ত যে রেমিটেন্স অর্জন করেছেন তা রাষ্ট্রায়াত্ব অপর সকল ব্যাংকের শীর্ষে।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

8 − 2 =