সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে লাগাম: উচ্চাভিলাষী প্রকল্প দ্রুত বন্ধ করতে হবে …..আ স ম রব

0
924

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ ও কম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত বড় ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলায় অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।অপরিকল্পিত, অপ্রয়োজনীয়, উচ্চাভিলাষী ও  অতিমূল্যায়িত প্রকল্প বাতিল এবং অযৌক্তিক ঋণ গ্রহণ দ্রুত বন্ধ করণসহ  অর্থপাচার রোধ করতে হবে, নতুবা ছোটখাটো সিদ্ধান্ত বড় ধরনের ঝুঁকি সৃষ্টি প্রতিরোধে কোন সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে না।

এক সময়ে এশিয়ার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে ‘রোল মডেল’ শ্রীলঙ্কা। মানবসম্পদে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। ২০২১ সালেও পিপিপিতে শ্রীলঙ্কার মাথাপিছু আয় ছিল বাংলাদেশের দ্বিগুণেরও বেশি। ভুল রাজনীতি ও পরিকল্পনার কারণে ক্ষমতাসীনরা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি শ্রীলংকা আজ এমন ভয়াবহ সংকটে পড়বে। 

শ্রীলঙ্কা মূলত মাত্রাতিরিক্ত বৈদেশিক ঋণ গ্রহনের কারণে আজ দেউলিয়া হয়ে পড়ে এবং ঋণের অনেকাংশই ব্যয় করেছে উচ্চাভিলাষী ও অতিমূল্যায়িত বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে (সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর ইত্যাদি), যেগুলো থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশটি কোন ফল পায়নি।

আমাদের সরকার শ্রীলঙ্কান সরকারের মতো উচ্চাভিলাষী ও অতি মূল্যায়িত মেগা প্রকল্প গ্রহনে অনেক বেশি উৎসাহী। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, সরকার যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় যেহেতু নৈতিক বৈধতা নেই,  সুতরাং উন্নয়নের ‘তকমা’ লাগিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা, ঋণ গ্রহণের নামে ভূ রাজনৈতিক শক্তিকে নিজের পক্ষে রাখার আত্মঘাতী কৌশল বাংলাদেশকে ক্রমাগত ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞগণ অনেক প্রকল্পকেই অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রকল্প হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যেমন,

 ১. প্রস্তাবিত ঢাকা সাবওয়ে প্রকল্প,

২. ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার বুলেট ট্রেন,

৩. দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প,

৪. পূর্বাচলে ১১০ তলাবিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু বহুতল ভবন কমপ্লেক্স,

৫. শরীয়তপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর,

৬. পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু,

৭. নোয়াখালী বিমানবন্দর,

৮. দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ প্রকল্প,

৯. ঢাকার বাইরে রাজধানী স্থানান্তর,

১০. সৈয়দপুর এয়ারপোর্টকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রূপান্তরকরণসহ আরো বহু প্রকল্প।

সুতরাং  উক্ত প্রকল্পগুলোসহ অপ্রয়োজনীয় মেগা প্রজেক্ট দ্রুত বন্ধ করা হোক। দেশের সর্বনাশ করে, জনগণের কষ্টার্জিত টাকা অপচয় করে, সরকারের  ‘ইমেজ’ বৃদ্ধির পরিকল্পনা দেশপ্রেমের পরিচয় নয়।

সরকার উচ্চাভিলাষী অতিমূল্যায়িত প্রকল্পের জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। দেশ ভয়াবহ সংকটে নিপতিত হলেও সরকার বাগাড়ম্বর করে যাবে, মূল সংকট এবং সত্যকে স্বীকার করবে না।এমন সরকার বিশ্বে বিরল। সরকারের উচিত সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে দ্রুত পদত্যাগ করে দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যতকে নিরাপদ করা।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

eleven − 6 =