পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য জলাধার একান্ত গুরুত্বপূর্ন। এক সময় রাজধানী ঢাকার বুকে ৪০ টির ওপর গভীর ও প্রশস্ত খাল ছিল। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভ‚মিদস্যুরা এসব খালগুলো একে একে দখল করে নিচ্ছে। চারিদিকে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে এসব প্রাকৃতিক জলাধার সরু হয়ে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণ এসব খাল উদ্ধার করে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার অনেক প্রতিশ্রæতি দিলেও বাস্তবে তা কোন কাজে আসছে না। মিরপুরের পল্লবিতে প্যারিস রোড এলাকায় বয়ে যাওয়া খালটির নাম প্যারিস খাল। জুটপট্টি এলাকায় খালের সীমানার ভেতরে গড়ে তোলা হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যালয়। প্যারিস খালের মত উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২৯ টি খাল জবর দখল ও দূষনের কারণে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। মোহাম্মদপুর হাউজিং এলাকায় রামচন্দ্রপুর খালের পাড় ভরাট করে রিকশার গ্যারেজ নির্মান করছে প্রভাবশালীরা। উত্তরা আবদুল্লাপুর খালটি স্থানীয়ভাবে খিজির খাল নামে পরিচিত। খালটির পানিপ্রবাহ বন্ধ করে সেখানে কৃত্রিম লেক তৈরি করছে রাজউক। মিরপুরের টোলারবাগ ও দক্ষিন বিশিল এলাকায় গোদাগাড়ি খালের নাম কল্যাণপুর খাল নামে পরিচিতি। খালটির একপাশে বস্তিঘড় বানিয়ে ভাড়া দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা। এভাবে ঢাকার ওপর বয়ে যাওয়া খালগুলো দখল দুষন হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এগুলো উদ্ধার করবে বলে শুধু আশার আলো দেখাচ্ছে। এসব খালের পানি এক সময় গৃহস্থলি কাজে ব্যবহৃত হতো। স্বচ্ছ পানির কারণে বাতাস ও পরিবেশ ছিল শিতল। অনেক খাল দিয়ে নৌকায় করে মানুষ এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাতায়াত করতো। ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহণ করতো এসব খাল দিয়ে। বন্যার সময় এসব খাল দিয়ে দ্রæত পানি নেমে যেত বলে বন্যার প্রকোপ কম দেখা দিত। কৃষিজমিতে সেচ দেয়ার জন্য এসব জলাধার বিশেষ গুরুত্বপূর্ন ছিল। বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী বাস করতো এসব জলাশয়ে। শহরে বড় ধরনের অগ্নিকান্ড হলে এসব খাল থেকে পানি নিয়ে আগুন নেভানো যাবে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মনে করেন। কারণ ফায়ার সার্ভিস যে পরিমান পানি নিয়ে আসে তা দিয়ে বড় ধরনের আগুন নেভানো সম্ভব নয়।