বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিস্তর জলরাশি বঙ্গোপসাগর দ্বারা বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ যার নাম সেন্টমার্টিন। নারিকেল গাছের অধিক্য থাকার কারণে এটাকে নারিকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়। প্রকৃতির অপরুপ সাজে সজ্জিত এই দ্বীপের প্রতি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষন যেন কমছে না। সিজেনের সময় অসংখ্য লোক ঘুড়তে আসে এই দ্বীপে। এক সময় এখানে আসার জন্য টেনাফ থেকে ট্রলারই ছিল একমাত্র বাহন। বর্তমানে বেসরকারী পর্যায়ে বেশ কয়েকটি জাহাজ ছাড়া হয়েছে টেকনাফ ও কক্সবাজার থেকে। অতিরিক্ত পর্যটকদের চাপে দ্বীপটির অবস্থা যেন ক্রমশ: সংকটাপন্ন হয়ে ওঠছে। এই দ্বীপে পর্যটক সংখ্যা নিয়ন্ত্রন করার জন্য পরিবেশবিদ ও বিশেষজ্ঞদের আকুতি যেন প্রবেশ করছে না প্রশাসনের কানে। পর্যটকরা দ্বীপে ময়লা ফেলে ময়লার ভাগাড় বানিয়ে ফেলছে। কোমল পানিয় ও মিনারেল পানির বোতল, শুকনো খাবারের খালি প্যাকেট, সিগারেট এর প্যাকেট ইত্যাদি ফেলে দ্বীপকে সংকটময় ও পরিবেশগত ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে প্রতিনিয়ত। বৈরি পরিবেশ সৃষ্টির কারণে দ্বীপটির কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়াছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় নয়নাভিরাম দ্বীপটি সাগরে তলিয়ে যাবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপকে এক যুগেরও বেশি আগে পরিবেশগত সংকটাপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু এর পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষার যেন কোন অভিভাবক নেই। দ্বীপে একের পর এক গড়ে ওঠছে বহুতল বিশিষ্ট হোটেল ও রিসোর্ট। অথচ এক তলার ওপর কোন রিসোর্ট নির্মানের অনুমোদন নেই বলে পত্রিকান্তরে প্রকাশ।
কিছুদিন আগেও অনুমোদনহীন রিসোর্টে পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা ও স্থাপনা ভেঙে দেয়। কিন্তু এর পর পরই আবার নতুন করে স্থাপনা নির্মান করা হচ্ছে।
দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রভাবশালীরা প্রচুর সংখ্যক বহুতল বিশিষ্ট রিসোর্ট নির্মান করেছে। সিজেনের সময় এসব রিসোর্টে পর্যটক ভরা থাকে।
পর্যটকরা দ্বীপের পরিবেশ ধ্বংস করার মত নির্মম কাজটি অবাধে করে যাচ্ছে। রাত দ্বীপে বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার না করার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না পর্যটক ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা।
এর ফলে প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, কাঁকড়া ও কাছিম থেকে শুরু করে মৎস সম্পদের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।