নিজস্ব প্রতিবেদকঃ মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে যত্রতত্র গড়ে উঠা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে চলছে অবৈধ কেবিন বাণিজ্য। আর এসব পর্দা ঘেরা কেবিনে অসামাজিক কার্যকলাপেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে । জানা গেছে, জেলার ঐতিহ্যবাহী ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী একটি উপজেলা হলো শ্রীনগর। এ উপজেলার অধিকাংশ পরিবারের কেউনাকেউ প্রবাসী। এ অঞ্চলের প্রবাসী পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা থাকায় ছোট থেকে বড়দের মধ্যে অনেকেই ফাস্টফুড বা চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এসে খাবার খেতে পছন্দ করে থাকে। ব্যবসাটি অধিক লাভজনক হওয়ায় এবং চাহিদা বেশি থাকায় শ্রীনগরের আনাচে কানাচে গড়ে ওঠেছে একাধিক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট। একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, স্কুল কলেজে পড়ুয়া স্বচ্ছল ছাত্র ছাত্রীরাও স্কুল ফাঁকি দিয়ে যত্রতত্র গড়েওঠা এসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পর্দাঘেরা কেবিনে একান্তে সময় কাটাতে গিয়ে অসামাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এখানে কোন রকম বাঁধা না থাকায় অধিকাংশরাই গোপনে একান্ত সময় কাটাতে ছুটে আসে। নিয়মিত আসা যাওয়ার কারনে কেউ কেউ এদের নিয়মিত কাস্টমারও হয়ে গেছে।
কারন এসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ঘন্টা চুক্তিতে সহজ শর্তে যে কেউ পর্দা ঘেরা কেবিন ভাড়া নিয়ে একান্তে সময় কাটাতে পারে। তাই এসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শ্রীনগরসহ এর আশপাশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল ফাঁকি দিয়ে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সময় কাটাতে দেখা যায়।
আশপাশে খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, এসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় বাজারের দোকানিরা সব দেখেও প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। এসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশের দোকানীরা বলেন, পর্দা ঘেরা এসব কেবিন অসামাজিক কাজের জন্য ৫০০/১,০০০ টাকায় ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে থাকে আগত কপোত-কপোতীরা। শুধু কেবিন বাণিজ্য চালিয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট মাসে লাখ লাখ টাকা অবৈধ পথে আয় করছে।
বাজারের এক প্রবীণ দোকানী বলেন, শ্রীনগর বাজারের প্রবেশমুখে কোয়ালিটি চাইনিজ নামের এ প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিকবার প্রশাসন অভিযান চালিয়ে কেবিনের পর্দা অপসারণ করে। কিন্তু কয়েক দিন পরে আবার আগের সেই পুরনো চিত্রই আমরা দেখতে পেয়েছি। অর্থ্যাৎ পর্দা ঘেরা কেবিন ভাড়ার অবৈধ ব্যবসা রহস্যজনক কারনে কখনও বন্ধ হতে দেখিনি।
শ্রীনগরের জমজম টাওয়ারের প্যারাডাইস চাইনিজ রেস্টুরেন্টেও থাইগ্লাসের চেম্বারের ভিতরে আলাদাভাবে একাধিক কেবিন তৈরি করে নিয়মিত ঘন্টা চুক্তিতে ভাড়া দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিগণ ও সচেতন মহল মনে করেন এ ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রেখে এলাকার যুব সমাজ ও ছাত্র ছাত্রীদের সৎচরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে এসব চাইনিজ রেস্টুরেন্টের পর্দা ঘেরা কেবিন অপসারণ করার কোন বিকল্প নেই।
শ্রীনগর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের প্রবীণ এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চাইনিজ রেস্টুরেন্টের এরকম অবৈধ কেবিন বাণিজ্যের কারনে আমরা আমাদের সন্তান ও উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিন্তিত আছি। তাই স্থানীয় ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পর্দা ঘেরা কেবিন বাণিজ্যে লিপ্ত চাইনিজ রেস্টুরেন্টের বিষয়ে এখনই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ অতি জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন অবিভাবকগণ।