মো: রাশেদুল ইসলাম: বাংলাদেশে একটি মাত্র পেশা, যে পেশার মানুষ ঘুম থেকে ওঠে মানুষের কথা ভাবে। আবার ঘুমোতে যাবার আগেও ধ্যানজ্ঞানে থাকে শুধুই মানুষ-সে পেশাটি হলো ‘বাংলাদেশ পুলিশ’। নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তানদের কথা ভাবার আগে যে পেশার মানুষ শুধুই মানুষের কথা ভাবে, মানুষের নিরাপত্তার কথা ভাবে তারাই পুলিশ। কিন্তু সে আমরাই ঘুম থেকে ওঠে একবার পুলিশকে মন্দ বলি,গালি দিই। আবার ঘুমোতে যাওয়ার আগেও দেই। তবুও সে পুলিশই অন্ধকারে নিরাপত্তার ঢাল হয়ে দাঁড়ায় মানুষের পাশে। পুলিশ জনতা, জনতাই পুলিশ। এই স্লোগানকে সামনে রেখে বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর অর্জনের পাল্লা এখন সুনামের খাতায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। একজন নেতা যেমন কর্মীদের অনুপ্রেরণা দিয়ে নেতৃত্ব প্রদান করে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যায়, একজন কোচ যেভাবে কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে শিষ্যের কাছ থেকে সেরাটুকু বের করে নিয়ে আসেন। ঠিক একই ভাবে অফিসারদের কনফিডেন্স লেভেল তৈরি করে কাজ করিয়ে নেন। শত বিপদে, প্রতিকূলতার মধ্যে তিনি বট গাছের ন্যায় আগলে রাখেন অধীনস্থ পুলিশ কর্মকর্তা সদস্যদের। তিনি আর কেউ নন,তিনি হচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গর্ব কিংবদন্তী চট্টগ্রামের রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল হারুন। রাউজান পুলিশে পরিবর্তনের হাওয়া, কাজের গতিশীলতা, সফলতা সবকিছুর পেছনে তার অংশগ্রহণ। নাগরিক সেবা ও জন-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত তার নির্দেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে অধিনস্ত পুলিশ সদস্যরা। একজন মানবিক অফিসার, নিষ্ঠাবান অফিসার ও অসাধারণ ভালো মানুষ এই পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন । সফলভাবে অসংখ্য কাজ সম্পাদন করে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ ডিপার্টমেন্ট-এর কাছে একজন চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। জানা যায়, আব্দুল্লাহ আল হারুন ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে যোগ দেন। সেখান থেকে পদোন্নতি পেয়ে পাহাড়তলী থানায় ওসি (তদন্ত) হিসেবে আড়াই বছর ও পতেঙ্গা মডেল থানায় ওসি (তদন্ত) হিসেবে দেড় বছর কর্মরত ছিলেন। কর্মদক্ষতার মাধ্যমে পুনরায় পদোন্নতি পেয়ে তিনি অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে রাউজান থানায় যোগদান করেন। চট্টগ্রাম সরকারী কলেজ থেকে বি.কম ও বি.এড সম্পন্ন করা ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুনের জন্ম চট্টগ্রাম জেলার কুতুবুদিয়ায়। তিনি দুই মেয়ে ও এক পুত্র সন্তানের জনক। গত ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট আব্দুল্লাহ আল হারুন রাউজান থানার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে নিচ্ছেন ওই এলাকার সমাজ ও জনপদকে। বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার,অস্ত্রসহ ডাকাত গ্রেপ্তার, বেশকিছু ক্লুলেস মামলার রহস্য উন্মোচন,সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী গ্রেপ্তারসহ রাউজানের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীদের নির্মূলে সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। পুলিশ সদস্যদের কাছে আস্থার ঠিকানা হিসেবে পরিচিত আব্দুল্লাহ আল হারুন নৈতিকভাবেও সবাইকে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
তার নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা মানুষের সেবায় প্রতিনিয়ত নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের সাথে নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর সমাজ গঠনেও কাজ করছেন তিনি ও তার টিম। সম্প্রতি দুটি একে-২২ রাইফেল, একটি পিস্তল, একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, একটি একনলা বন্দুক, একটি এলজি, একে-২২ রাইফেলের ৯৫টি বুলেট, ৮টি এমএম বুলেট, অজ্ঞাত অস্ত্রের ১০টি বুলেট এবং শটগানের ১০টি কার্তুজসহ তিন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে রাউজান থানা পুলিশ।
এছাড়া বিভিন্ন সময় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাতদলকে গ্রেপ্তার করেছে রাউজান থানা। বহু মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ও সাজা প্রাপ্ত আসামীদেরও আইনের আওতায় এনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সফল রাউজান থানা। নাগরিক সেবা নিশ্চিতেও বদ্ধপরিকর ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন। সম্পূর্ণ ঘুষমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণ তাদের নাগরিক সেবা গ্রহণ করছেন। রাউজান থানার সফলতার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে,
হত্যার ৫১ দিন পর রাউজান থেকে উদ্ধার করা অজ্ঞাতনামা নারীর লাশের পরিচয়ও উদঘাটন করে রাউজান থানা পুলিশ। একই সাথে ওই নারীর খুনের সাথে জড়িত তিন খুনিকেও আটক করে পুলিশ। আব্দুল্লাহ আল হারুনের কাছ থেকে নৈতিক শিক্ষা পেয়ে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন রাউজান থানার পুলিশ সদস্য সাইফুর রহমান। কুড়িয়ে পাওয়া ১৮ হাজার ৯ শত টাকা প্রকৃত মালিককে ফেরত দেন তিনি।
শুধু অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন। সততা,নিষ্ঠা ও মানবিকতার সাথে ভুমিহীন নাজমা দম্পতিকে জমিসহ সেমিপাকা ঘর উপহার দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে অনেক উচ্চ মর্যাদায় নিয়ে গেছেন। প্রতিদিনই তিনি তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনে অগ্রহী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন,কাজের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা ও ভালবাসা পাওয়া সম্ভব । দায়িত্ব পালনে পেশাদারিত্বের গুনে একজন পুলিশ কর্মকর্তা মানুষের মনে জায়গা করে নেয়। তিনি বলেন, ‘পুলিশ মানেই খারাপ নয়। মানুষ বিপদে পড়লে পুলিশের কাছে আসে। তারা শুধু চান একটু ভাল ব্যবহার আর কাঙ্খিত সেবা। সেই সেবাটুকু নিশ্চিত করতে পারলেই তারা অনেক খুশি। আমার চাকরি জীবনে সমাজ ও সাধারণ মানুষের চাহিদাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি।’