কবিতাঃ ভাষার তরে
কবিঃ লাভলী আকতার
মাগো যদি পারো ক্ষমা করে দিয়ো,
তোমার কাছে আমার বোধহয় আর
ফেরা হলোনা।
জানি মাগো আমার তরে বুকটা
যে তোমার ধুকধুক করে,চিনচিন করে,
বড্ড ব্যাথা হয়।
দুঃখ করোনা, কষ্ট পেয়োনা,কাঁন্না
করোনা,আসবো আবার কোনো
নিশি রাতে তোমার কাছে ফিরে।
তোমার মিষ্টি ঘাম মাখা আদর নিতে
চোখের পানি মুছে দিতে,আসবো
তোমার শিঘ্রই আঁচলের তলে
আমায় তখন আদর সোহাগে রেখো,
ডেকো তুমি আমার প্রিয় নাম ধরে,
সেদিন আমায় দেখে নিয়ো মন ভরে।
অত্যাচারে অনাচারে প্রতিদিন
আমি একটু একটু করে মরে যাই,
যন্ত্রণায় যন্ত্রণায় দগ্ধ হই,রক্তাক্ত হই।
খাঁচার বন্দি পাখিদের মতো ছটফট
করেও আমি বের হতে পারিনা।
আর যে পারছি না মাগো ওদের
এতো জ্বালাতন নির্যাতন সইতে।
ওরা যে নির্মম পাষণ্ড মানুষ রূপি
পশু, ওরা যে অত্যাচারি ঘাতক দল।
ওরা আমায় এই জীবনে আর
সবার মতো করে বাঁচতে দিবে না।
ওরা যে পাপী,ওদের দয়ামায়া নেই,
মাগো আমি যে আর পারলাম না,
আমার এই মুখ কি করে দেখাবো,
শরীরটা ক্ষতবিক্ষত আঁচড় কাটা।
মাগো ওরা আমার সব কিছু
কেড়ে নিয়েছে ছিড়ে খেয়েছে,
আর যে পারছি না মাগো।
সন্মান বাঁচাতে নিজেকে লুকাতে
নদীতে ঝাঁপ দেওয়া ছাড়া
আর যে কোনো উপায় নাই।
পারলে আমায় ক্ষমা করে দিয়ো,
আমি কি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ভুল
করেছি মাগো তুমিই বলো ???
ভোর হলে আমায় দেখে নিয়ো
ভোরের লাল সূর্যের আভায়,
কিংবা নিশিরাতের তারায়।
একদিন আমায় ঠিকই দেখতে পাবে
বাংলা ভাষা থাকবে যখন তোমাদের
সবার মুখে সবার ঘরে ঘরে।
আনন্দে চোঁখটা তখন মুছে নিয়ো।
সেই আনন্দে আমায় ভুলে থেকো,
ভাষার মাঝেই আমার মুখ দেখো।
তোমার চোঁখ থেকে খুশির আনন্দে
গড়িয়ে পড়া ঐ অশ্রুটাই যে আমি,
আমায় গড়িয়ে পড়তে দিয়োনা মাগো।
মুছে রেখো যত্নে রেখো তুমি, আগলে
রেখো তোমার ঘাম মাখা তোমার
শাড়ির আঁচলের ভাঁজে।