যত অনিয়মে চলছে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, মেইল রেল গুলোতে চলছে হরিলুট

0
456

স্টেশন ম্যানেজার বলছেন অনিয়ম চলছে যুগযুগ ধরে নিউজ করে কি আর ঘোড়ার ডিম হবে

এম শাহীন আলম: বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক রেল জংশন রেলওয়ে স্টেশন হলো চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন যা বন্দর নগরীর চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকার বরতলীতে বিদ্যমান, যে স্টেশনটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীর পদ-চারণায় মুখরিত, যেখানে বার্জিক ঠিক ঠাক দেখা গেলেও চরম অনিয়ম, ভোগান্তি আর হরিলুটের নাম চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন,

সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা যায়, আন্তনগর রেল গুলোতে টিকিট এর বিষয়ে চরম ভোগান্তি, কাউন্টার গুলোতে নেই সন্তোষজনক শৃঙ্খলা, রেলওয়ে পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষীদের দেখা যায় যাত্রীদের টিকিট না কেটে রেল ভ্রমনে উৎসাহ দেওয়ার প্রবণতা রীতিমতো, কাউন্টারে নিয়মিত টিকিট দেওয়ার সিরিয়াল দেখা গেলেও রেলের ভিতর দেখা যায় ইঞ্জিন রুমে, খাবার গাড়ীতে, নামাজ পড়ার জায়গায়, বিনা টিকিটে যাত্রীদের উপছে পড়া ভিড় যেখানে টিকিট বিহীন যাত্রীদের কারণে হাঁটা-চলার দাঁড়ানোর জায়গা পর্যন্ত থাকে না, এছাড়া গাড়ীতে কর্তব্যরত পরিচর্যা কর্মী, এটেনডেন্স, রেলওয়ে পুলিশ/নিরাপত্তা বাহিনীর আলাদা আলাদা টিকিট বিহীন যাত্রী তো আছেই, দেখলে মনে হয় রেল যেন হরিলুটের একটি বাহন, গভীর অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব বিনা টিকিট এর যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে নেওয়া ভাড়ার টাকার একটা অংশ আন্তনগর রেলের পরিচালক/গার্ড, কর্তব্যরত টিটিই, ড্রাইভার, রেলওয়ে পুলিশ সহ প্রতিদিন রেলওয়ে নিয়ন্ত্রণ উচ্চ পর্যায়ের অফিসারও পেয়ে থাকেন,

অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে মেইল রেল গুলোর কাউন্টারে প্রতিটি টিকিট থেকে বাড়তি টাকা আদায় চলছে বছরের পর বছর, হিসাব মতো প্রতিটি টিকিট থেকে ৫-১০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে, যদি প্রতিদিন প্রতিটি টিকিট থেকে ৫ টাকা করে বেশি ভাড়া নেওয়া হয় তাহলে দিনে কত গুলো টিকিট বিক্রি হচ্ছে মাসে কত গুলো বছরে কত গুলো টিকিট বিক্রি হচ্ছে তাতে করে প্রতিটি টিকিটে মাত্র ৫ টাকা বেশি নিলে মাসে লাখ লাখ টাকার দুর্নীতি আর অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠে, দুইটি মেইল রেল এর অনিয়ম চিত্র তুলে ধরা হলো, তার মধ্যে একটি হলো ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস (নাছিরাবাদ) অন্যটি নাম ঢাকা মেইল কিংবা চট্টগ্রাম মেইল নামে অথবা ওয়ান আপ/টু ডাউন নামে পরিচিত রেল গাড়ী, যে গাড়ী গুলোতে চলে হরিলুট আর অনিয়ম,

এই অনিয়মের চিত্র চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু হয় সিট পাওয়া নিয়ে যাত্রীদের হয়রানি, বহু যাত্রীকে নিয়মিত লাঞ্ছিত হতে হয় রেলওয়ে স্টেশনে কর্তব্যরত নিরাপত্তা রক্ষী এবং রেলওয়ে পুলিশের হাতে, রেল গুলো স্টেশনে প্রবেশ করলে শুরু হয় প্রতিটি বগিতে সিট বিক্রি হিরিক,

সরেজমিনে দেখা যায় এসব মেইল রেল গাড়ী গুলোতে শতকরা ৪০-৫০% যাত্রী টিকিট সংগ্রহ করে রেল ভ্রমন করে, সরেজমিনে এসব গাড়ী গুলোতে টিকিট সংগ্রহ করতে নিরুৎসাহিত করে রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা কারণ যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করার পরও রেলওয়ে পুলিশ সহ রেল চলাকালীন সময়ে রেল সংশ্লিষ্টদের বাড়তি টাকা দিয়ে সিট সংগ্রহ করতে যাত্রীদের, যার কারনে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ না করে রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট কারো না কারো সাথে রফা করতে বাধ্য হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ চলাচলকারী যাত্রীরা,

সরেজমিনে অনুসন্ধানে আরো দেখা যায়, ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস রেলে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করলেও তাদের সিট এর জন্য হয়রানির শিকার হতে হয় চরমে, প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে গাড়িটি ছাড়ার আগে এক্সট্রা বগি, জেনারেটর বগিতে টিকিট বিহীন যাত্রীদের টিকিট বিহীন ভাড়া আদায় করে গার্ড সহ রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষী সদস্যরা,

ঠিক একেই নিয়মে রাতের ঢাকা মেইল ওয়ান আপে টিকিট কাটলেও সিটের জন্য বাড়তি টাকা দিতে হয় যাত্রীদের, কাউন্টারে প্রথম শ্রেণীর বগিতে সিট না থাকলেও বিনা টিকিটে টাকা দিলেই সহজে মিলে যায় প্রথম শ্রেণীর বগির সিট, কামরা, আর রেলটিতে এক্সট্রা বগি নামের হরিলুট তো আছেই,

যার মধ্যে বিনা টিকিটে দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যাত্রী বহন করা হয়, এবং যাত্রীদের টিকিট থাকলেও এক্সট্রা বগিতে ভ্রমন করতে হলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের দিতে হয় আলাদা ভাবে সিট ভাড়ার টাকা, মেইল রেল গুলোতে নিয়মিত টিকিট চেকের জন্য টিটিই না থাকায় গাড়িতে ডিউটিরত আনসার, রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা যে যার ইচ্ছা মতো যাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের মাধ্যমে টিকিট চেকের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয় এসব রেলের নিয়মিত চিত্র।

সরেজমিনে দেখা যায়, টিকিট বিহীন যাত্রীদের জন্য তিল ধারণের ঠাঁই পর্যন্ত থাকে না চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছাড়া আগে পর্যন্ত, আর এসব অনিয়মের প্রশ্রয় দাতা হিসেবে স্টেশনে কর্তব্যরত স্টেশন ম্যানেজার রতন চৌধুরীর বক্তব্যে ফুটে উঠে, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের রেল গাড়িতে, স্টেশনে, স্টেশনের বাহিরে আশ পাশের চিত্র সহ সার্বিক বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার রতন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি অপরাধ বিচিত্রা’র বিশেষ প্রতিনিধি এম শাহীন আলমকে জানান, আপনি যে সমস্ত অনিয়মের বিষয়ে তথ্য জানতে চাচ্ছেন,

এসব অনিয়ম তো নতুন কিছু নয়, এসব অনিয়ম তো স্টেশনে বছরের পর বছর চলছে, কত সাংবাদিক আর টেলিভিশন পত্রিকা আসলো আর গেলো দেখলাম, নিউজ করে কি আর ঘোড়ার ডিম হবে, স্টেশনের এসব বিষয়ে না চিন্তা করে অন্য দিকে মনোযোগী হন, কারন স্টেশনের বিষয়ে নিউজ করে কোন লাভ নেই,

নিউজ করলে কারো কিছুই হবে না।  প্রশ্ন হলো একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বক্তব্য যদি এমন হয় তাহলে বাংলাদেশ রেলওয়ে এর ভবিষ্যৎ কোথায়, নাকি এই ভাবে অনিয়মের মধ্যেই চলবে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন, অনুসন্ধান চলছে আরো অনেক অজানা তথ্য নিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ধারাবাহিক নিউজ আসছে পরবর্তী সংখ্যায়।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

4 × 3 =