যশোরে অমুক্তিযোদ্ধা লিয়াকতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

0
400

সংবাদদাতা: যশোরে অমুক্তিযোদ্ধা লিয়াকতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা এই অভিযোগ জানিয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ঝিকরগাছা উপজেলা শাখা যশোরএর মুক্তিযোদ্ধারা একটি প্রত্যায়ন পত্রও জারি করেছে। তাদের প্রত্যায়#ন পত্রে উল্লেখ রয়েছে এই মর্মে অভিযোগ জানানো যাচ্ছে যে, মো: লিয়াকত আলী, পিতা-আছিরুউদ্দিন, গ্রাম-বোধখানা, ডাকঘর-বোধখানা, উপজেলা-ঝিকরগাছা, জেলা-যশোর। মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নং-১৪৫৬, মুক্তিবার্তা নং………

আদৌ মুক্তিযোদ্ধা নহে।

তার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গিয়েছে যে, ১৯৭১ সালের মে মাসের মাঝামাঝি পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বোধখানা গ্রামে এসে লিয়াকত আলীদের বাড়িতে খাঁটি স্থাপন করে এলাকায় লুটপাট এবং সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ চালায়। উক্ত লিয়াকত আলী হানাদার বাহিনী ও বিহারীদের পক্ষ অবলম্বন করে গুপ্তচর হিসেবে কখনো ভারতে গিয়েও কখনো নিজ এলাকার মধ্যে থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সংগ্রহ করে পাকিস্তান বাহিনীকে সাহায্য সহযোগিতা করত। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানার জন্যে কোথাও কোথাও সে বলত, আমি মুজিব বাহিনীর ক্যাডার। তার মূলত পর্যবেক্ষণের এবং কর্মের এলাকা ছিল ৮ নং সেক্টর।

উল্লেখ্য যে, ১৯৭০ সালে যে সংসদীয় নির্বাচন হয়েছিল, বোধখানা গ্রামটির প্রায় শতভাগ লোক জামায়াতে ইসলামের সদস্যভুক্ত ছিল। তারা আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় আওয়ামীলীগ এই গ্রামে কোন ভোট পায়নি। সেই আমলেই ঝিকরগাছা থানা এলাকার বোধখানা, শ্রীরামপুর ও লাউজানী গ্রামছিল জামায়াতের প্রধান প্রধান ঘাঁটি। লিয়াকত আলী আওয়ামীলীগের বিপক্ষে ভোট প্রদানের জন্য প্রচার প্রচারণা চালায়। তার পরিবারের সকল সদস্য ছিল জামায়াত কর্মী।

নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে যুদ্ধের হালচাল উপলদ্ধি করে লিয়াকত আলী গা ঢাকা দেয়। যুদ্ধ বিজয়ের এক মাস পর তাকে ঝিকরগাছ এলাকায় ঘুরতে ফিরতে দেখা যায় এবং নিজেকে মুজিব বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিতে থাকে। ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ৭৯ সালে প্রথম যে সংসদীয় নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করে, সেই নির্বাচনে লিয়াকত আলী জামায়াতের পক্ষে এজেন্ট হয়ে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। ২০০১ সালেও জামায়াতের পক্ষে একই ভূমিকা পালন করে।

সে নিজেকে মুজিব বাহিনীর সদস্য দাবি করে থাকে। ভারতীয় তালিকায় তার নাম নেই। কোথাও ট্রেনিং নিয়েছিল জানতে চাইলে জবাব দেয় ভারতের দেরাদনে ট্রেনিং নিয়েছে। অথচ ট্রেনিং গ্রহণের কোন ছাড়পত্র সে দেখাতে চায় না। সে কোন ট্রেনিং প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা নয়। দেশের অভ্যন্তরে ট্রেনিং গ্রহণ করেনি। যুদ্ধ কালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সঙ্গেই ছিল তার আঁতাত। অথচ এই ব্যক্তির নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় কিভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, এটা নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

অতএব, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

four × 1 =