বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশ্বের বিভিন্ন আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে : তথ্যমন্ত্রী

0
321

অপরাধ বিচিত্রা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিশ্বের বিভিন্ন আর্কাইভে সংরক্ষিত রয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে রেড অরেঞ্জ একটি। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। কিন্তু তারা জানতো না যে-বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিশ্বের বিভিন্ন আর্কাইভেও সংরক্ষিত রয়েছে, রেড অরেঞ্জ এই আর্কাইভগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ফুটেজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এবং বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের নজীর সংরক্ষণে সহায়ক হবে।’ মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ফুটেজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এবং নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক সংস্থা রেডঅরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের মধ্যে সোমবার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী একথা বলেন। হেগে’র বাংলাদেশ হাইকমিশন আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ‘স্বদেশ ও বিদেশে মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংরক্ষণাগার শক্তিশালীকরণ’

শীর্ষক একটি বিশেষ প্রকল্পের অধীনে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের এবং বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকে নিপীড়ন থেকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রাম সম্পর্কিত উচ্চমানের ফুটেজ সংগ্রহ করবে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ডকুমেন্টারি এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল সামগ্রীর অ-বাণিজ্যিক নির্মাণের জন্য এসব ফুটেজ ব্যবহার করবে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রকল্প পরিচালক ড. মোফাকখারুল ইকবাল এবং রেডঅরেঞ্জ মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্সের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস অ্যাডভাইজার রুটগার-জ্যান শোয়েন নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং হেগে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সারাবিশ্ব থেকে মূল্যবান ফুটেজ সংগ্রহ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে। রেডঅরেঞ্জের রুটগার-জ্যান শোয়েন বলেন, ‘এই সমঝোতার মাধ্যমে রেডঅরেঞ্জ বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভকে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত আর্কাইভ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ সংগ্রহে সহায়তা করবে। রেডঅরেঞ্জের জন্য এটা সম্মানের বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর একটিতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমরা ড. মোফাকখারুল ইকবাল এবং তার দলের কাছে কৃতজ্ঞ এই জন্য যে এই উদ্যোগের অংশ হয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশের জনগণকে সম্মান জানানোর গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টায় অবদান রাখব।

গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় যথাসময়ে নির্বাচন

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গণতন্ত্রকে সংহত করতে ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কারা নির্বাচনে আসবে সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। নির্বাচনের ট্রেন কারো জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচন কারো জন্য দাঁড়ায়নি, ২০১৮ সালে বিএনপি নির্বাচনের ট্রেনে উঠবে কি উঠবে না, সেটা নিয়ে দ্বিধা-দ্বদ্বে ছিলো, পরে ট্রেনের পাদানিতে চড়ে তারা নির্বাচনের ট্রেনে গিয়েছিলো,

সুতরাং নির্বাচনের  ট্রেন কারো জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না।’ মন্ত্রী আজ  দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নিতে মার্কিন কর্তৃপক্ষকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুরোধ বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন,  ‘বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায় এবং তারা যেহেতু বারবার বিদেশিদের কাছে সব বিষয় নিয়ে ধর্ণা দেয়, সেই প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু মিডিয়ার সামনে একথা বলেছেন, কিন্তু সেখানকার কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করেননি।

তার বক্তব্য একান্তই ব্যক্তিগত, সরকারের কিংবা আমাদের দলের বক্তব্য নয়।’ তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু হলেই বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেয়, চিঠি লিখে। এমনকি বাংলাদেশকে সাহায্য দেয়া পুণর্মূল্যায়ন করার জন্য বিএনপি কংগ্রেসম্যানদের কাছে চিঠি লিখেছে। বেগম খালেদা জিয়া নিজেই মার্কিন পত্রিকা ওয়াশিংটন টাইমসে এ নিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন। আসলে বিএনপিকে নির্বাচনভীতিতে পেয়ে বসেছে। শুধু জাতীয় সংসদ নির্বাচন না, তারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বর্জন করছে।

তাদের ভীতি দূর করার দায়িত্ব আমাদের নয়। তবে যারা গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা, জনগণের রায়ে বিশ্বাস করে তাদের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নাই। আমি আশা করবো, বিএনপি নির্বাচনভীতি কাটিয়ে উঠে নির্বাচনে অংশ নেবে।’ বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি ২০১৯ সালের একটি বিস্ফোরক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী,

তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি আছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অন্যান্য মামলাও আছে সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকালের মিছিলের সাথে তার গ্রেপ্তারের কোনো সম্পর্ক নেই। একই সাথে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন করেছিলো, যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার হুকুমদাতা, তাদেরও গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

5 × 2 =