রক্তিম কৃষ্ণচূড়া মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জাবি’র ক্যাম্পাসজুড়ে

0
605

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানঃ বাংলাদেশে সাধারণত লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া গাছ বেশি দেখা যায়। তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, কৃষ্ণচূড়া লাল, হলুদ ও সাদা এই তিন রঙের হয়। লাল ও হলুদ রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা মিললেও সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে কালেভদ্রে। কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। এটি সাধারণত ১১ থেকে ১২ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। তবে এর শাখা-প্রশাখা অনেক দূর পর্যন্ত ছড়ানো থাকে। বাংলাদেশে এপ্রিল থেকে জুন মাসে দৃষ্টিনন্দন ফুলটির দেখা মেলে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত, যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলোয় সাধারণত বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত হয়। এগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। সৌন্দর্যবর্ধক গুণ ছাড়াও এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষ ভাবে উপযুক্ত। আর এমনই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশের ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার অর্ন্তগত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ক্যাম্পাস। আঁকাবাঁকা লেকের পাড়ের এই ক্যাম্পাসে রয়েছে হাজার হাজার গাছের সমাহার। ফলে বছরের একেক ঋতুতে একেক ফুলে সাজে গাছগুলো। এবার গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম সাজে সেজেছে এই ক্যাম্পাস। এ যেন আগুনরাঙা রূপের বহিঃপ্রকাশ। যেকোনও পথিকও পথ চলতে গাছের পানে তাকিয়ে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়, ক্লান্তি ভুলে যায় ফুলের এই রক্তিম সৌন্দর্যে। এ যেন এক নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জানান দিচ্ছে লাল ফুলগুলো। আর এই সৌন্দর্যে জুড়ে যায় সবার প্রাণ। দূর থেকে লাল রঙের ফুলগুলো দেখলে মনে হবে গ্রীষ্মের তীব্র গরমে খানিকটা প্রশান্তির বার্তা নিয়েই কৃষ্ণচূড়ার আগমন ঘটেছে। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এই ক্যাম্পাসে পূর্ব কিংবা পশ্চিম আকাশে হেলে পড়া সূর্যের সোনালি আলোয় কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুলগুলো দেখে মনে হয় যেন আগুন জ্বলছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাজিয়া সুলতানা অপরাধ বিচিত্রা প্রতিবেদককে বলেন, প্রকৃতিতে গ্রীষ্ম এলেই ক্যাম্পাস নানা রঙের ফুলে সাজে। এর মধ্যে একটি হলো কৃষ্ণচূড়া। লালরঙা এই ফুলের রক্তিম আভা বরাবরই আমাকে আকর্ষণ করে। সকাল হলে ঝরে পড়া ফুলগুলো দেখলে মনে প্রশান্তি আসে। মনে হয় পথজুড়ে বিছিয়ে রেখেছে লালগালিচা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সুবর্না সরকার অপরাধ বিচিত্রা প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে রয়েছে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট দিয়ে ঢুকতেই কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশে দেখা মিলবে কৃষ্ণচূড়া গাছের। একটু সামনে গেলে নতুন কলাভবন থেকে শুরু করে বিশমাইল গেট পর্যন্ত রাস্তার ধারে অসংখ্য গাছ এই ফুলের রক্তিম আভায় ছেয়ে গেছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা, আবাসিক হলগুলোর আশেপাশে সহ প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে। সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের রাস্তায় কৃষ্ণচূড়ার ঝরে পড়া ফুলগুলো যেন লাল গালিচা বিছিয়ে পুষ্পপ্রেমীদের বরণ করে নেওয়ার বার্তা দিচ্ছে।

শুধু ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নন, নজরকাড়া এই ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ দূরদূরান্ত থেকে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থী।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

1 + two =