আজানের সময় অবশ্যই করনীয়

0
389

পৃথিবীর সব থেকে মধুর ধ্বনি হলো আজান।আজানের মাধ্যমে সকল মুমিন মুসলিম ব্যক্তিদের নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়। আজানের ব্যাপারে ইসলাম অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

 প্রতিদিন ৫ বার আমরা এই মধুর ধ্বনি অর্থাৎ আজান শুনতে পাই। আজানের মাধ্যমে সকল মুমিন মুসলিম ব্যক্তিদের নামাজের ওয়াক্ত হয়েছে বলে বুঝানো হয়েছে। আজানের মাধ্যমে যারা গাফেল তাদেরকে সজাগ করে দেয়া হয় এবং যারা ভুলে যায় তাদেরকে স্মরণ করে দেয়া হয়। আজান প্রথম হিজরীতে শরীয়তভুক্ত হয়েছে। 🩵আজানের ফজিলত🩵 হজরত মুহাম্মদ (সা) বলেছেন ,আজানের আওয়াজ যাদের কাছেই পৌঁছাবে ,হোক যে মানুষ ,জ্বীন অথবা অন্য কোনো জিনিস। সে কিয়ামতের ময়দানে মুয়াজ্জিনের পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। (বুখারী) আজানের সময় করণীয় কাজ আজান শোনা ও আজানের উত্তর দেয়া সুন্নত। যারা আজান শুনবেন, তারা মৌখিকভাবে জবাব দেবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা আজান শুনবে, তখন জবাবে মুয়াজ্জিনের মতো তোমরাও তা বলবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৬১১) 💚আজানের উত্তর💚 আজানের উত্তর দেয়ার পদ্ধতি হলো মুয়াজ্জিন প্রত্যেকটি বাক্য বলে থামার পর শ্রোতা ওই বাক্যটি নিজেও অনুরূপভাবে বলবে।

 কিন্তু মুয়াজ্জিন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময় শ্রোতা ‘লা হাওলা ওয়া লা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত। (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৫) তবে কোনো কোনো বর্ণনায় ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলার সময়ও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। (কিতাবুদ দোয়া, তাবারানি, হাদিস : ৪৫৮) 💜আজানের পরে দোয়া ও দরূদ পাঠ💜 আজানের পর দরুদ শরিফ ও দোয়া পাঠ করা সুন্নত। আজানের পরে দোয়া করলে আল্লাহ্ তায়ালা কবুল করেন। হাদিস শরিফে এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আজানের পর ‘আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ…’ এ দোয়াটি পাঠ করবে, তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৪) 🧡আজানের সময় বর্জনীয় কাজ🧡 আজানে ‘আল্লাহু আকবার’-এর জবাবে কেউ কেউ ‘জাল্লা জালালুহু’ পড়ে থাকেন। অথচ এটার কোনো নিয়ম নেই। বরং এটি সুন্নাহপরিপন্থী আজানের সময় জবাব দেওয়ার সময় অনেকে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জবাবে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলে থাকে। এটিও শরিয়ত কর্তৃক অনুমোদিত নয়। কেননা এ সময় দরুদ পড়ার কোনো নির্দেশ নেই।দরূদ আজান শেষে পড়তে হবে। আজানের সময় মুয়াজ্জিন ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলার সময় অনেকেই বৃদ্ধাঙ্গুলে চুমু খেয়ে থাকেন। এরপর চোখে-মুখে আঙ্গুল মুছেন। কেউ কেউ আবার সঙ্গে ‘কুররাত আইনি’ দোয়াও পড়ে থাকেন। অথচ শরিয়তে এর কোনো প্রমাণ-ভিত্তি নেই। সুতরাং এটিও বর্জন করা জরুরি। ইসলামী ফিকহের বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনামতে, ফজরের আজানে ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’-এর জবাবে ‘সাদাকতা ও বারারতা’ পড়বে। কিন্তু হাদিস ও সুন্নাহে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই বিশুদ্ধ মতানুসারে এর জবাবেও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ ‘আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম’ বলাই উত্তম। কেননা হাদিস শরিফে এসেছে, আজানের জবাবে তোমরাও মুয়াজ্জিনের অনুরূপ বলবে। আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত। এ সময় দুনিয়াবী কথা বা কাজ করা যাবে না। 🍂মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝার তৌফিক দান করুন

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন

Please enter your comment!
Please enter your name here

3 × 3 =