আইন ও বিচারদুর্ঘটনাবাংলাদেশবিশ্ব

ভারতের পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবিটি বাস্তব নয়, এআই দিয়ে তৈরি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই একটি ছবি সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত এক ব্যক্তি ভারতের জাতীয় পতাকা পায়ে মাড়াচ্ছেন।

এই ছবিটি সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার হওয়ার পর ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তবে রিউমার স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের জাতীয় পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবিটি বাস্তব নয় বরং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের অনেক সংবাদমাধ্যম ও সে দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকে বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিয়ে নানা ভুয়া তথ্য, অপতথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছেন। এর মধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে এআই দিয়ে তৈরি ছবি দেখা গেল।

ছড়িয়ে পড়া ছবিটি নিয়ে রিউমার স্ক্যানার বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, রিউমার স্ক্যানারের দলের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভারতের জাতীয় পতাকা পায়ে মাড়ানোর ভাইরাল ছবিটি বাস্তব নয়; বরং এআই প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।

রিউমার স্ক্যানার ছবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ‘রিভার্স ইমেজ সার্চ’ ব্যবহার করে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এর অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানেও ছবিটি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হতে দেখা গেছে। সাধারণত, এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তা সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি জাতীয় গণমাধ্যমেও প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়।

ছড়িয়ে পড়া ছবিটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছে রিউমার স্ক্যানার। তাদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিতে থাকা ব্যক্তির ডান পায়ের একটি আঙুল অস্বাভাবিকভাবে অর্ধেক দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তির পরনের পায়জামার একটি ভাঁজ এমনভাবে রয়েছে, যা দেখতে ধুতির মতো মনে হয়। বাংলাদেশের পতাকার লাল বৃত্তের কাপড়ের ভাঁজও স্বাভাবিক নয়। এ ছাড়া ছবির আলোর প্রতিফলন, ছায়া এবং ব্যক্তির চোখের অভিব্যক্তিতেও অসামঞ্জস্য লক্ষ করা গেছে। এ ধরনের অসামঞ্জস্য সাধারণত এআই দিয়ে তৈরি ছবির ক্ষেত্রে দেখা যায়।

রিউমার স্ক্যানার এ ধরনের অসামঞ্জস্য লক্ষ করার পর ছবিটির বিষয়ে অধিকতর নিশ্চিত হতে বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ ওয়েবসাইট ব্যবহার করে। এসব ওয়েবসাইটের বিশ্লেষণে ছবিটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হওয়ার পক্ষে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত নিশ্চিত ফলাফল পাওয়া গেছে।

রিউমার স্ক্যানারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ডিপফেক’ শনাক্তকরণ প্ল্যাটফর্ম ট্রুমিডিয়ার পর্যবেক্ষণও বলছে, আলোচিত ছবিতে ম্যানিপুলেশনের (কারসাজির) উল্লেখযোগ্য প্রমাণ রয়েছে। অর্থাৎ ছবিটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। সুতরাং ছবিটি বাস্তব নয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button