ড. ইউনূসকে কী লিখেছেন দিল্লি মসজিদের ইমাম?
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও নির্যাতন বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লি জামে মসজিদের শাহি ইমাম সাইয়্যেদ আহমদ বুখারি। এক চিঠিতে ভারত ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
সাইয়্যেদ আহমদ বুখারি বলেন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমাদের জাতীয় নেতৃত্ব, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ এবং প্রভাবশালী মহল শেখ মুজিবুর রহমান, তার কন্যা শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এবং তাদের দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। কূটনীতি, আঞ্চলিক বিষয়, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মুসলিম বিশ্বের নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ সব সময় আমাদের পাশে থেকেছে।
শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই অস্থিরতার শিকার হয়েছেন আওয়ামী লীগের মুসলিম ও অমুসলিম উভয় সমর্থকরা। বিশেষ করে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় তিনি তীব্র নিন্দা জানান।
তিনি লিখেছেন, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে চলমান অন্যায়, হামলা এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর একতরফা পদক্ষেপ নিন্দনীয় এবং তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। এসব ঘটনার কোনো ন্যায্যতা নেই। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ভারতের অসামান্য ভূমিকা বাংলাদেশ সরকারকে সব সময় স্মরণ রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশি শরণার্থীকে নজিরবিহীন সহায়তা দিয়েছি এবং প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি।
জাতিসংঘের সংখ্যালঘু অধিকারবিষয়ক ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে বুখারি মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী, ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অভিভাবক হিসেবে আমি আশা করি, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারপ্রধান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস হিন্দু সংখ্যালঘুদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। তিনি যেন নিজের আন্তর্জাতিক সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করেন। কোনো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলাম এবং ইসলামি আইন সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো ধরনের বৈষম্য বা অন্যায়ের সুযোগ রাখে না।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে ৬০ জনেরও বেশি সন্ন্যাসী বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তবে তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কলকাতার ইসকন।
এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের শুনানির তারিখ ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশের আদালত। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন।