বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ভারত থেকে শুরু করে আমাদের এখানকার কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক কেন এই ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করছে? সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বদনাম করছে, মানহানি করছে? একটাই উদ্দেশ্য, এখানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা। এই সরকার যাতে ব্যর্থ হয়, তার জন্য যত রকমের চেষ্টা, তা তারা করবে।’
৬ ডিসেম্বর ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ এ কথা বলেন। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভার আয়োজন করে ৯০–এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতারা।
ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করে সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে কি হিন্দু সম্প্রদায় তিন মাস ধরে বসবাস করে, নাকি স্বাধীনতার পর থেকে অত্যন্ত সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে তারা বসবাস করে?’
ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বলতে কিছু নেই। এ দেশের নাগরিকের পরিচয় বাংলাদেশি। অতএব সবাই বাংলাদেশি। কেন এই ভেদাভেদ? ১৮ কোটি বাংলাদেশি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো দেশই ষড়যন্ত্র করে সফল হতে পারবে না।’
দেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তারা চেষ্টা করবে, বাংলাদেশে একটা অশান্তি সৃষ্টির জন্য, বিভেদ সৃষ্টির জন্য।
যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করার দাবি জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সংস্কারের ক্ষেত্রে নির্বাচনের ক্ষেত্রে, নির্বাচনের পদ্ধতির ক্ষেত্রে এবং নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ দেওয়া অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ উল্লেখ করে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বিএনপি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করেছে। এ জন্য সমর্থন করেছে, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে, জনগণের হাতে ক্ষমতা দিয়ে এই সরকারকে বিদায় হতে হবে। এর মধ্যে বিগত ১৫ বছরে যে অন্যায়, অত্যাচার হয়েছে; সর্বক্ষেত্রে সংস্কার করার জন্য বিএনপি এই সরকারকে সমর্থন করে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে বলে সভায় উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান। অন্তর্বর্তী সরকার ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। চক্রান্ত মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আমান উল্লাহ বলেন, নির্বাচনের পর বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জাতীয় সরকার গঠন হবে।
এই আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম।