কাল থেকে আর্বিভাব ঘটবে জেন বিটাদের, কেমন হবে তাদের দুনিয়া
১ জানুয়ারি থেকে আলফা–রা আর একলা নয়, তাদের সঙ্গ দিতে আসছে পরবর্তী প্রজন্ম। বুধবার গ্র্যান্ড লঞ্চ হতে চলেছে জেনারেশন বিটা।
২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যে সব বিটা–বিটিরা জন্ম নেবে, তারাই পরবর্তী জেনারেশন বিটা। এই প্রজন্মের পর্যায় চলবে ২০৩৯ পর্যন্ত। অর্থাৎ, আগামী ১৫ বছর ধরে যে সব শিশু জন্মাবে, তাদেরই বিটা জেনারেশনের সদস্য হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। জেনারেশন আলফা, জেন জেড বা মিলেনিয়ালরা যেমন টিকে আছেন, থাকবেন। হেঁটে চলে বেড়াবেন। আর বড় হতে দেখবেন জেনারেশন বিটা–কে।
এতদিন পর্যন্ত বিভিন্ন জেনারেশনের সময়কাল ধার্য হয়েছে মোটামুটি ১৫ বছর করে। যেমন, ২০১০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যারা জন্মেছে, তারা জেনারেশন আলফা। আবার ১৯৯৬ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের ধরা হয় জেন জেড। যাদের জেন জি বলা হয়ে থাকে। কারণ, জেন জেডরাই তো জেডকে জি বলে থাকেন।
তারও আগে, এসেছিলেন মিলেনিয়ালরা। ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত যাদের জন্ম, তারাই অন্তর্ভুক্ত মিলেনিয়ালদের মধ্যে। দেখা যাবে, জেন জেডের অনেকেরই পরবর্তী প্রজন্ম জন্ম নেবে জেনারেশন বিটা হয়ে।
সোশ্যাল রিসার্চার মার্ক ম্যাকক্রিন্ডলকে কৃতিত্ব দেওয়া হয় এই ধরনের ভাগাভাগি ও নামকরণের জন্য। আলাদা করে বিটা বেবিজদের মাহাত্ম্য কোথায়? এই প্রজন্মের শিশুদের অনেকেই ২২ শতকের মুখ দেখবে। তারা ছেলেবেলা থেকেই পাবে প্রযুক্তির সাহচর্য। বিশেষ করে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এঁকে–বেঁকে জড়িয়ে থাকবে জেনারেশন বিটার প্রতিদিনের কাজের সঙ্গে।
মনে করা হচ্ছে, এই প্রজন্ম প্রথমবার খুব বেশি করে ব্যবহার করবে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, ওয়্যারেবল হেল্থ টেকনোলজি এবং ইমার্সিভ ভার্চুয়াল এনভায়রনমেন্ট। ম্যাকক্রিন্ডল তার ব্লগে লিখেছেন, ‘জেনারেশন আলফা দেখেছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং স্মার্ট প্রযুক্তির জন্ম। জেনারেশন বিটা সেখানে বাঁচবে এমন এক সময়ে যখন দৈনন্দিন জীবন, শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, স্বাস্থ্য এবং বিনোদনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অটোমেশন।’
এ পর্যন্ত পড়ে মনে হতে পারে, সব কিছু সুন্দর জেনারেশন বিটা–র। কিন্তু এই প্রজন্মের বিটারসুইট তথ্য হলো, এত ভালো কিছুর সঙ্গে কিছু বিটার অর্থাৎ তেতো তরলও গিলতে হবে। কী রকম? যেমন ধরা যাক, ক্লাইমেট চেঞ্জ। যেভাবে প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা, বাড়ছে ঝড়ঝঞ্ঝা, তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই নতুন প্রজন্মের। জৈব জ্বালানি ভুলে ভাবতে হবে দূষণ–বিহীন জ্বালানির কথা। জঙ্গল যথেচ্ছ সাফ করে যে আর্বানাইজেশন চলছে, তার সঙ্গেও যুঝতে হবে তাদের।
আর এই মুহূর্তে বিশ্বের যা বড় চিন্তা, সেই গ্লোবাল পপুলেশন ডাইনামিক্সও মাথাব্যথা হবে তাদের। যুদ্ধ, দারিদ্র্য ইত্যাদির জন্য বিশ্বের নানা দেশ থেকে মানুষ পাড়ি দিচ্ছে উন্নত দেশে। এই বিশাল জনতার চাপ সামলানো একটা বড় কাজ হয়ে দেখা দেবে, বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আশা একটাই।
মিলেনিয়াল বা জেন জেডদের থেকে পরিবেশ নিয়ে বেশি সচেতনতা তৈরি হচ্ছে জেনারেশন আলফাদের মধ্যে। একেবারে নতুন জীবনের দূত হিসেবে আসতে চলা জেনারেশন বিটাও একইভাবে পরিবেশ নিয়ে শিক্ষিত হবে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তির ব্যবহারে নানা দুরবস্থা থেকে মুক্তির পথও বাতলে দেবে জেনারেশন বিটা, এ রকমই আশা রাখছেন ম্যাকক্রিন্ডল। মিলেনিয়াল বা জেন জেডরাও নিশ্চয়ই আশা রাখবেন।