আসাদের পালানোর রুট ও পুতিনের সাথে বৈঠক নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য
সিরিয়ার সাবেক গণমাধ্যম প্রধান কামেল সাকর সম্প্রতি উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পালানোর শেষ মুহূর্তের তথ্য প্রকাশ করেছেন। এক পডকাস্টে তিনি জানান, কীভাবে আসাদ বিদ্রোহীদের অগ্রযাত্রার মুখে দামেস্ক ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান এবং পালানোর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে তার শেষ বৈঠকটি সম্পন্ন করেন।
সাকরের মতে, আসাদ পালানোর জন্য দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। তিনি দক্ষিণ বাইপাস সড়ক ধরে বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে রুশ নিয়ন্ত্রিত হাইমিম বিমানঘাঁটিতে যাত্রা করেন।
সাকর বলেন, “আমার ধারণা, আসাদ কয়েক ঘণ্টা হাইমিম ঘাঁটিতে অপেক্ষা করেছিলেন। বিমানটির উড্ডয়ন ও মস্কোর উদ্দেশ্যে যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য সময় নেওয়া হয়েছিল।”
রুশ সামরিক কর্মকর্তারা আসাদের পালানোর অপারেশনটি পরিচালনা করেছিলেন। সাকর জানান, পালানোর দুই ঘণ্টা আগে রুশ সামরিক দূত আসাদের সাথে দেখা করেন।
সাকর আরও উল্লেখ করেন, আসাদের সাথে প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং চিফ অব স্টাফও ছিলেন। তার দুই ছেলে হাফেজ ও করিমও তার সঙ্গী ছিলেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
পালানোর কিছুদিন আগে, নভেম্বর মাসে, আসাদ মস্কোতে একটি পূর্ব-পরিকল্পিত বৈঠকে পুতিনের সাথে মিলিত হন। বৈঠকে আসাদ ইরান থেকে সামরিক সাহায্য আনতে রাশিয়ার সহযোগিতা চান।
সাকরের ভাষ্যমতে, আসাদ পুতিনকে বলেন, “সিরিয়ার বিরোধীদের অগ্রযাত্রা থামাতে ইরানের সামরিক সরঞ্জাম নিরাপদে পরিবহনের দায়িত্ব রাশিয়া যেন নিজ হাতে নেয়।”
এ অনুরোধের পরই পুতিন তার চিফ অব স্টাফকে নির্দেশ দেন হাইমিম ঘাঁটির মাধ্যমে ইরানের সামরিক সাহায্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে। তবে, পরে ইরান জানায়, তারা এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পায়নি। মস্কোকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
বৈঠকের পর সাকর একটি প্রেস বিবৃতি তৈরি করেন। তবে রুশ পক্ষ থেকে তা প্রকাশ না করার নির্দেশ আসে। তিনি বলেন, ‘সাধারণত এমন বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। এটি ছিল অস্বাভাবিক।’
পরের দিন সকালে আসাদকে জানানো হয় যে, পুতিন এ সফরের (আসাদের রাশিয়া সফর) ঘোষণা দিতে আগ্রহী নন। এভাবেই পুরো বিষয়টি শেষ হয়।
সিরিয়ার দীর্ঘমেয়াদী সংকটে আসাদের এই পালানোর ঘটনা দেশটির রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।