যে কোনো সময় মারাত্নক দুর্ঘটনার আশঙ্কা:-মুগদাপাড়ায় তিতাসের মুল সঞ্চালন পাইপ ছিদ্র করে চোরাইভাবে প্রায় ৩৫০ ফুট পাইপ লাইন টানার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার:
কয়েকদিন আগে দৈনিক নয়া দিগন্তে খবরে শিরোনাম হয়েছিল জনতা ব্যাংকের সাবেক পিওন ও আওয়ামী সিবিএ নেতা লুৎফর রহমান। এবার নতুন এক অভিযোগ নিয়ে তিতাস অফিসে গেল মুগদা এলাকাবাসী।জানা গেছে, তিতাসের মুল সঞ্চালন পাইপ বিপজ্জনকভাবে ছিদ্র করে চোরাইভাবে ৭/১৭/১ দক্ষিণ মুগদা ঠিকানায় প্রায় ৩৫০ ফুট পাইপলাইন সংযোগ নিয়েছে জনতা ব্যাংকের সাবেক এই পিওন। জানা যায়, এই বাড়িতে আগেই একটি বৈধ গ্যাস সংযোগ টানা ছিল- যা মুগদার রাস্তার উত্তর দিক থেকে এসেছে। লুৎফর রাস্তার দক্ষিণে তিতাসের আরেকটি মুল সঞ্চালন রাতের আঁধারে ছিদ্র করে প্রায় ৩৫০ ফুট দীর্ঘ পাইপ লাইন দিয়ে অবৈধ দ্বিতীয় সংযোগটি ওই একই হোল্ডিং-এ নেয়। চোরাইভাবে নেয়া বলে, এখানে খুবই নিচু মানের পাইপ তড়িঘড়ি করে ব্যবহার হয়েছে। ফলে যে কোনো সময় গ্যাস-লিকেজ থেকে শুরু করে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এসময়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি দেয়াসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ এবং দোষী জনতা ব্যাংকের সাবেক পিওন লুৎফর রহমানকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন এলাকাবাসী। তারা এসময় লাইন দ্রুত বিচ্ছিন্নসহ ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজের ভায়েরা প্রতারক ও জালিয়াত লুৎফরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে তিতাস অফিসে গেলে জানতে পারেন যে, এর প্রধান কর্মকর্তা মতিঝিল অফিসে নাই তিনি তিতাসের প্রধান কার্যালয়ে গেছেন। মুগদার মানুষ এসময় সাংবাদিকদের বলেন, মুগদা-মান্ডা এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ। এভাবে রাস্তা খুঁড়ে সবাই যদি নিজের মন-মতো মুল সঞ্চালন পাইপ ছিদ্র করে যে যেভাবে পারে অবৈধ লাইন বাসা-বাড়িতে নিয়ে যায় তাহলে তো তিতাস কোম্পানীর থাকার কোনো প্রয়োজন নাই। কিছুদিন আগে জাল-জালিয়াতির এক মামলায় লুৎফর গ্রেফতার হয়। এছাড়া, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, সিটি কর্পোরেশন থেকেও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির অভিযোগ আছে। এছাড়া জোড়পূর্বক মানুষের জায়গা জমি লুটপাট ও দখলের অভিযোগ আছে।
এবার প্রশ্ন হলো, কে এই লুৎফর রহমান! কীভাবে পেল সে এতো ক্ষমতা!
জানা গেছে, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা দঃ সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামী লীগের নেতা সিরাজুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়। সিলেটের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর এলাকার প্যারাগন রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ অভিযানে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল উপস্থিত ছিল। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সিরাজুল ইসলাম ছাত্রদের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেন। এই সিরাজুল ইসলামেরই ভায়েরা হলো জনতা ব্যাংকের এই সাবেক সিবিএ নেতা লুৎফর রহমান। একসময় যে পিওন ছিল পরবর্তীতে ফরিদপুরে বাড়ি হওয়ার কারণে জনতা ব্যাংকের শীর্ষ সিবিএ নেতা হয়ে বিগত ১৫ বছর এমন কোনো অপরাধ নাই যে তার হাতে সংঘঠিত হয় নাই। বর্তমানে সে কোটি কোটি টাকার মালিক। মুগদা পাড়ায় দুইটি পাশাপাশি বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন এই পিওন, যেই ভবন দুইটি নির্মাণে রাজউক থেকে অনুমোদন নেয়ার প্রয়োজনও বোধ করে নাই। বিগত সরকারের আমলে এতই ছিল সে বেপরোয়া।
প্রশ্ন হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মামলায় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাফিয়া সিরাজ গ্রেফতার হলেও তার প্রধান ও অন্যতম সহযোগী, সিরাজের অবৈধ অর্থের গোপন যোগানদাতা জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা লুৎফরকে কেন এখনো গ্রেপ্তার করছে না প্রশাসন! তিতাস গ্যাস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইচ্ছাকৃত দায়িত্বে অবহেলা, প্রকাশ্যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ উপায়ে অধিক আর্থিক ফায়দা লোটাসহ নানা অভিযোগ ও অসঙ্গতি সাধারণ জনগণকে মৃত্যুঝুঁকির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। খুব দ্রুত এই বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণসহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের ) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকার মানুষ।