যে ব্যক্তি জানে যে, তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সত্য, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান যে অন্ধ? বুদ্ধিমান লোকেরাই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে
(১) অর্থাৎ যারা তাদের প্রভুর কাছ থেকে যা এসেছে তা হক্ক বলে ঈমান এনেছে, তারা এটাও বিশ্বাস করেছে যে, এতে কোন সন্দেহ অসামঞ্জস্যতা নেই। এর একাংশ অন্য অংশের সত্যয়ন করে। কোন প্রকার স্ববিরোধিতা এতে পাওয়া যাবে না। এর যাবতীয় সংবাদ বাস্তব, যাবতীয় আদেশ-নিষেধ ইনসাফে পূর্ণ। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে আপনার রবের বাণী পরিপূর্ণ।” [সূরা আল-আনআমঃ ১১৫] অর্থাৎ সংবাদ প্রদানে বস্তুনিষ্ঠ এবং আদেশ-নিষেধে ইনসাফপূর্ণ। যারা কুরআনকে এ ধরনের বিশ্বাস করে তারা কি ঐ লোকের মত হতে পারে যে, অন্ধই রয়ে গেছে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর যা নাযিল হয়েছে তাতে বিশ্বাসী হয়নি এমনকি বোঝার চেষ্টাও করেনি? এ দু’ব্যক্তির নীতি দুনিয়ায় এক রকম হতে পারে না এবং আখেরাতে তাদের পরিণামও একই ধরনের হতে পারে না। তাই তো আল্লাহ অন্যত্র বলেনঃ জাহান্নামের অধিবাসী এবং জান্নাতের অধিবাসী সমান নয়। জান্নাতবাসীরাই সফলকাম। [সূরা আল হাশরঃ ২০] [ইবন কাসীর]
(২) অর্থাৎ আল্লাহর পাঠানো এ শিক্ষা এবং আল্লাহর রাসূলের এ দাওয়াত যারা গ্রহণ করে তারা বুদ্ধিভ্রষ্ট হয় না বরং তারা হয় বিবেকবান, সতর্ক ও বিচক্ষণ ব্যক্তি। এ ছাড়া দুনিয়ায় তাদের জীবন ও চরিত্র যে রূপ ধারণ করে এবং আখেরাতে তারা যে পরিণাম ফল ভোগ করে পরবর্তী আয়াতগুলোতে তা বর্ণনা করা হয়েছে।- তাফসীরে জাকারিয়া
[1] অর্থাৎ, কুরআনের সঠিকতা ও সত্যতার উপর বিশ্বাস স্থাপনকারী ব্যক্তি এবং অন্ধ অর্থাৎ কুরআনের সত্যতার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণকারী ব্যক্তি কি সমান হতে পারে? এটা অস্বীকৃতিসূচক প্রশ্ন, অর্থাৎ উক্ত দুই ব্যক্তি তেমনই সমান হতে পারে না, যেমন ফেনা এবং পানি অথবা সোনা, তামা এবং ওর খাদ সমান হতে পারে না।
[2] অর্থাৎ, যার কাছে নীরোগ হৃদয় ও সুস্থ বিবেক না থাকে এবং যে নিজ হৃদয়কে পাপের মরিচায় মলিন করে রাখে এবং বিবেক-বুদ্ধি বিলুপ্ত করে ফেলে, সে এই কুরআন থেকে উপদেশ গ্রহণই করতে পারে না।তাফসীরে আহসানুল বায়ান