অব্যাবস্থাপনা

লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে ধরা মাছ লুট করতে গিয়ে তথ্যের ভুলে জামায়াত নেতার মাছ লুটের ঘটনা ঘটে।

যশোরের মনিরামপুরে জামায়াত নেতার আলমসাধু ভর্তি মাছ লুট করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘেরের মাছ মনে করে লুট করা হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল শনিবার উপজেলার কালীবাড়ি থেকে কপালিয়া বাজারে মাছ নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাটি ঘটলেও আজ রোববার বিষয়টি জানাজানি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের বাড়ি মনিরামপুরের দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নে। স্থানীয় ঘুঘুদা বিলে তাঁর মাছের ঘের রয়েছে। সরকার পতনের পর স্থানীয় তৌহিদ নামের এক ব্যক্তির কাছে ঘের দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন লেখক। তৌহিদ ঘেরের মাছ ধরে বিক্রি করেন। এতে বিএনপির লোকজন বাধা দেয়। গতকাল শনিবার দুপুরে লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে মাছ ধরে আলমসাধু যোগে কপালিয়া বাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়।

অপরদিকে একই সময়ে নিজেদের ঘেরের মাছ ধরে আলমসাধু যোগে কপালিয়া বাজারের আড়তে পাঠান জামায়াত নেতা লেয়াকত হোসেনসহ কয়েকজন। পথিমধ্যে কালীবাড়ি মোড় থেকে কপালিয়া বাজারে যাওয়ার পথে জামায়াত নেতাদের মাছ লুট করে নেন স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন কর্মী।

আরও জানা গেছে, মূলত লেখক ভট্টাচার্য্যের ঘের থেকে ধরা মাছ লুট করতে গিয়ে তথ্যের ভুলে জামায়াত নেতার মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। মাছ বিক্রির টাকা শনিবার রাতে এক সালিস বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন অভিযুক্তরা।

জানতে চাইলে ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আবু নসর বলেন, ‘এলাকায় আমাদের তিনটি ঘের আছে। আমাদের সাবেক থানা আমির লেয়াকত হোসেনসহ কয়েকজনে ঘেরে মাছ চাষ করি। শনিবার দুটো ঘের থেকে ১৮-২০ মণ মাছ ধরে আলমসাধুতে করে কপালিয়া বাজারে আড়তে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। রাস্তায় কিছু লোক আলমসাধুসহ মাছ ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রি করে দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘লুট করা মাছ ৯৩ হাজার টাকায় বিক্রির কথা স্বীকার করেছে তারা। চাপ দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করেছি। এলাকার কিছু লোক এর সঙ্গে জড়িত। সব তথ্য উদ্ধারের পর নিজেরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে থানায় অভিযোগ করার কথা ভাবছি।’

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, মাছ লুটের সঙ্গে জড়িত সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমানের আপন ভাইপো।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘শনিবার বিকেলে জামায়াত নেতা লেয়াকত হোসেনের কাছে মাছ ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনে আমরা তৎপর হই। পরে সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে মাহাবুব ও রাজিব নামে দুজনকে চিহ্নিত করি। আমরা তাদের কাছ থেকে মাছ বিক্রির টাকা উদ্ধার করে লেয়াকত হোসেনের হাতে বুঝিয়ে দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইপো সাইফুল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। রাজিব ও মাহাবুব বিএনপির রাজনীতি করে। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মনিরামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাছ লুটের কোনো ঘটনা আমাদের কেউ জানায়নি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button