ইসলাম ধর্ম

ধৈর্য ও ভালো সময়ের প্রতিশ্রুতি: কোরআন ও হাদিসের আলোকে

মানুষের জীবন সুখ-দুঃখের মিশ্রণ। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেছেন, “নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে স্বস্তি রয়েছে।” (সূরা ইনশিরাহ: ৬) এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, প্রতিটি সংকটের পরই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্বস্তি দান করেন।

নবী (সা.)-এর জীবনে তায়েফের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। যখন তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফে গিয়েছিলেন, সেখানকার মানুষ তাঁকে তিরস্কার ও আঘাত করেছিল। এই সময় নবীজি (সা.) ধৈর্য ধারণ করেন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। তিনি বলেন, “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আমার দুর্বলতা ও অসহায়ত্বের অভিযোগ করছি।” (মুসনাদ আহমদ) তায়েফের সেই দুঃখজনক ঘটনার পরই ইসলামের পথ প্রশস্ত হয়েছিল।

সাহাবীদের উদাহরণ

সাহাবি হযরত খবাব ইবনে আরত (রা.)-এর জীবনেও ধৈর্যের চমৎকার উদাহরণ দেখা যায়। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁকে কাফিররা লোহার শিকল দিয়ে পুড়িয়ে অত্যাচার করেছিল। একদিন তিনি নবী (সা.)-এর কাছে এসে তাঁর প্রতি আল্লাহর সাহায্য চেয়ে প্রার্থনা করার অনুরোধ করেন। নবীজি (সা.) তখন বলেছিলেন, “যে জাতি ধৈর্য ধরে, তাদের প্রতি আল্লাহর সাহায্য আসবেই।” (সহিহ বুখারি: ৩৮৫২)

কোরআনের শিক্ষা

আল্লাহ বলেন, “তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং নামাজ কায়েম কর। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।” (সূরা বাকারা: ১৫৩) এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, ধৈর্যের সঙ্গে আল্লাহর সাহায্য আসে এবং খারাপ সময় কখনও চিরস্থায়ী নয়।

আমাদের জন্য শিক্ষা

খারাপ সময়ে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) রাখা এবং দোয়া করা অপরিহার্য। আল্লাহ নিজেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, “যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।” (সূরা তালাক: ৩)

তাই, দুঃখ-দুর্দশার সময়ে সাহাবিদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে ধৈর্য ধারণ করা উচিত। নবী (সা.) বলেছেন, “মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। তার জীবনের সবকিছুই কল্যাণকর। সে বিপদে পড়লে ধৈর্য ধারণ করে, আর তা তার জন্য কল্যাণকর হয়।” (সহিহ মুসলিম: ২৯৯৯)

সুতরাং, কঠিন সময়ও একটি পরীক্ষা, যা আল্লাহর রহমতে একদিন ভালো সময়ে পরিণত হবেই। ইনশাআল্লাহ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button