চার মাসে ১৭৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, ২৩ জনের মৃত্যু: ঐক্য পরিষদ

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গত ৪ মাস ১১ দিনে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর মোট ১৭৪টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৩টি ঘটনা হত্যার আর নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ৯টি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ‘বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনটি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে মোট ১৭৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে এমনও সহিংসতার ঘটনা রয়েছে, যেখানে একই ঘটনায় একাধিক পরিবার আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হত্যা ও নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, গণধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৬৪টি; কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি; বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৩৮টি এবং জোরপূর্বক বাড়িঘর, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখলের ঘটনা ঘটেছে ২৫টি। প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথ্যাদি সার্বিক ঘটনাবলির আংশিক চিত্র বলে মনে করছে ঐক্য পরিষদ।
গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনকে কেন্দ্র করে গত ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট সারা দেশে ২ হাজার ১০টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। তারা ওই প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহ করেছিল ঐক্য পরিষদের সারা দেশের শাখা সংগঠনগুলোর মাধ্যমে। এবার ২১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হলো।
আজকের লিখিত বক্তব্যে ঐক্য পরিষদ বলেছে, এবার মাঠপর্যায় থেকে তারা সাংগঠনিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। কারণ, তাদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। পাশাপাশি মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমায় তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।