রাত থেকেই বাস-ট্রাকে ইজতেমার মাঠে আসছেন মুসল্লিরা, বাড়ছে সমাগম
![](https://aparadhbichitra.com/wp-content/uploads/2025/01/prothomalo-bangla_2025-01-30_qmnah71a_GazipurDH07702025013020250130082324.webp)
শীতের রাত, সময় সাড়ে ১২টা। গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরের ইজতেমা মাঠের প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথেই মুসল্লিদের জটলা। বাস, ট্রাক বা পিকআপ ভ্যান থেকে নামছেন তাঁরা। প্রায় সবার সঙ্গেই নানান ব্যাগ আর গাঁট্টিবোঁচকা। মাঠজুড়ে নক্ষত্রের মতো ছড়িয়ে থাকা বৈদ্যুতিক বাতির নিচে দল বেঁধে প্রবেশ করছেন। সেখানে ঢুকেই নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা) অবস্থান নিচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার রাতে মুসল্লিদের এ সমাগম বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে। আগামীকাল শুক্রবার শুরু হবে তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের ইজতেমা। এ উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকেই মাঠে আসতে শুরু করেন মুসল্লিরা। তবে রাতেই তাঁদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। এর মাধ্যমে ক্রমেই বাড়ছে মুসল্লিদের সমাগম।
মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী ও ইজতেমা আয়োজকেরা জানান, এবার তাঁরা ইজতেমা করবেন দুই ধাপে। এর মধ্যে ৩১ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশ নেবেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লিরা। এরপর আগামী ৩–৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। এ ধাপে অংশ নেবেন ২২ জেলা ও ঢাকার অন্য অংশের মুসল্লিরা। দুই ধাপের আখেরি মোনাজাত হবে যথাক্রমে আগামী ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি।
ইজতেমার গণমাধ্যম সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সাথি ভাইয়েরা গতকাল সকাল থেকেই ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। তবে গতকাল রাতে সাথিরা আসেন সবচেয়ে বেশি। আজ বৃহস্পতিবারও সারা দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা আসবেন। এর মধ্যেই ভরে গেছে মাঠের বেশির ভাগ অংশ।’
গতকাল রাত ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের কোথাও কোথাও এখনো চলছে আনুষঙ্গিক প্রস্তুতির কাজ। এর মধ্যে মাঠ ঘিরে মুসল্লিদের আনাগোনা। বিশেষ করে মাঠে প্রবেশের ফটকগুলোতে মুসল্লিদের ভিড় সবচেয়ে বেশি। বিভিন্ন এলাকা থেকে বাস, ট্রাক ও অন্য যানবাহন থেকে মাঠের আশপাশে এসে নামছেন তাঁরা।
মাঠে বিদেশি খিত্তা–সংলগ্ন ফটকে কথা হয় সিলেটের মৌলভীবাজার থেকে আগত কয়েকজন মুসল্লির সঙ্গে। এর মধ্যে মোজাম্মেল হোসেন নামের একজন বলেন, তাঁরা ৪২ জনের একটি দল একসঙ্গে এসেছেন। এর আগে গতকাল বেলা ১টার দিকে সিলেট থেকে রওনা দেন। পরে গতকাল রাত ১২টায় টঙ্গীতে পৌঁছান।
মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতিবছরই ইজতেমা শুরুর এক–দুই দিন আগে মাঠে চলে আসি। তা না হলে জায়গা পাওয়া যায় না। তা ছাড়া জায়গা প্রস্তুতিরও অনেক কাজ থাকে। সেসব মাঠে এসে নিজেদেরই করতে হয়। এক বছর পর সবার সঙ্গে দেখা হওয়ার আনন্দই অন্য রকম।’
তাবলিগ জামাত সূত্রে জানা যায়, তাবলিগ জামাত এখন দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা। অন্য ভাগে আছেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীরা। এর মধ্যে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের ইজতেমা আগামী ১৪–১৬ ফেব্রুয়ারি পালনের কথা আছে।