সাভারে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নে ট্যানারি শ্রমিকদের বিক্ষোভ

মোস্তফা কামাল মজুমদারঃ
সাভার বিসিক চামড়াশিল্প নগরীর প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করেন শতাধিক ট্যানারি শ্রমিক।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে সাভার বিসিক চামড়াশিল্প নগরীর প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করেন শতাধিক ট্যানারি শ্রমিক।
রাজধানীর সাভারে পাঁচ গ্রেডে সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি পালন ও বিক্ষোভ করছেন চামড়াশিল্পের বিভিন্ন ট্যানারিতে কর্মরত শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিসিক চামড়াশিল্প নগরীর প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন শতাধিক ট্যানারি শ্রমিক।
পরে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যান শ্রমিকেরা। দাবি আদায় না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেওয়া হয় বিক্ষোভ থেকে।
আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, অন্যান্য সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার পরপরই তা বাস্তবায়ন হলেও ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি এখনও বাস্তবায়ন করেনি মালিকেরা। বিভিন্ন বাহানায় মালিকপক্ষ শুধু কালক্ষেপণই করছেন। বাধ্য হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ শিল্পের শ্রমিকেরা।
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্য ও শিল্পনগরীর এপেক্স ট্যানারিতে কর্মরত নিলুফা নামে এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘সরকার আমাদের জন্য মোট পাঁচটি গ্রেডে মজুরি বোর্ডের মাধ্যমে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করেছে, যেখানে সর্বনিম্ন মজুরি ১৮ হাজার এক টাকা এবং সব পক্ষের সম্মতিতেই এ মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু মালিকেরা এখন এসে বলে এ মজুরি তাদের জন্য বেশি হয়ে গিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ ১৩ মাস আমরা অপেক্ষা করছি, এখন আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমে এসেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
ফারুক হোসেন নামে আরেক শ্রমিক বলেন, ‘গত ২১ নভেম্বর সরকার আমাদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে। কিন্তু এখনও সেই মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি। আমাদের পেটে ক্ষুধা, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে এভাবে আগের বেতনে আর সংসার চলে না। কাজেই আমাদের ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের দাবিতে আমাদের এ আন্দোলন শুরু হয়েছে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এটি চলবে।’
ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক বলেন, ‘গত নভেম্বরে ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করার পর থেকে বিভিন্ন সময় মালিকপক্ষের সঙ্গে বহুবার আমরা আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনোভাবেই মালিকপক্ষ এ ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করেনি। ফলে শ্রমিকেরা এখন কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে, আন্দোলন করছে- যা চলমান। আজকের কর্মসূচি এরই অংশ।’
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি দ্রুতই আমরা আলোচনার মাধ্যমে এ সংকটের একটি সুন্দর সমাধানে আসতে পারব।