অব্যাবস্থাপনা

আশুলিয়ায় হত্যা মামলা থেকে  নাম প্রত্যাহার করাতে ছাত্র দলের ভূয়া প্রত্যায়ন পত্র প্রদান 

মাহবুব আলম মানিকঃ 

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র -জনতা আন্দোলনে বিপ্লবী জনতার জনরোষের মুখে পালিয়ে যাওয়া  সাবেক আওয়ামী সরকার ফ্যাসিস্ট হাসিনা সহ তার সহযোগী এমপি মন্ত্রীরা যখন গণহত্যার দায়ভার মাথায় নিয়ে গ্রেফতারের ভয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রে ঠিক তখনি কিছু গণহত্যাকারী আওয়ামী নেতাকর্মী  বুক ফুলিয়ে দেদারসে  ঘুরে বেড়াচ্ছেন এলাকা সহ দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে।আশ্রয় নিয়েছেন কথিত কিছু বিএনপি নেতা ও আত্মীয় নামক অনেক  প্রশাসনিক কর্মকর্তার  ছায়াতলে। আর তার-ই প্রভাব খাটিয়ে রীতিমতো হুমকি ধামকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবার ও মামলার বাদীদেরকে। সেই সাথে মামলা এবং মামলার শার্জশীট থেকে নাম প্রত্যাহার করাতে তদন্ত অফিসার বরাবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল  (বিএনপি) অঙ্গসংগঠনের  ভূয়া প্রত্যায়ন পত্র প্রদান সহ নানান ফন্দীফিকির  করছেন তাঁরা।

এমন কিছু তথ্য উপাত্ত প্রমাণাদি এসেছে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিবেদকের কাছে।

তথ্য উপাত্ত সুত্রে সরজমিনে গিয়ে জানা যায় গত ৫ই আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী আশুলিয়ার পবনারটেক এলাকার বাসিন্দা  ডি ইপিজেড শাশা গার্মেন্টসের মেকানিক্যাল হেলপার আশরাফুল ইসলাম (৩০) আশুলিয়ার বাইপাইল মোড়ে সৈরাচার হাসিনা সরকারের দোসরদের গুলিতে নিহত হন । এঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো: নাসিরউদ্দিন বাদী হয়ে ঢাকা ১৯ আসনের সাবেক এমপি সাইফুল ইসলাম সহ প্রায় অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে  আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যাহারা মামলা নং- ৪৫(৯)২৪  উক্ত মামলায় এজাহার ভুক্ত হন ধামসোনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও আওয়ালীগ নেতা সানাউল্লাহর ডান হাত খ্যত ১১ নম্বর আসামী মানিক হোসেন দেওয়ান (৪০) পিতা মৃত নাসিরউদ্দিন সাং আটিগ্রাম মানিকগঞ্জ সদর মানিকগঞ্জ বর্তমান বাইপাইল নামাবাজারের বাসিন্দা।

আওয়ামী লীগ নেতা সানাউল্লাহ’র সকল কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট থাকা সত্ত্বেও মামলার চার্জশীট থেকে নাম প্রত্যাহার করাতে  মানিক হোসেন দেওয়ান   নিজেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের  সদস্য দাবি করে মামলার তদন্ত অফিসার আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মজিবর রহমান ভূঁইয়া  বরাবর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির ১ টি সদস্য ফরম এবং মানিকগঞ্জ জেলা শাখা ছাত্রদলের  পেডে  ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্স’র সীল স্বাক্ষরিত ১ টি প্রত্যায়ন পত্র  ও জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর পেডে ১টি মোট দুটি  প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করেছেন যা পুরোপুরি ভূয়া বলে জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ জেলা শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্স। তিনি বলেন আমি এধরণের কোন প্রত্যায়ণ পত্র কাউকে দেইনি এটা পুরোপুরি ভূয়া এবং বানানো, এটা কখনো সম্ভব নয় কারণ  আমরা চাই প্রত্যেকটা আওয়ামী সন্ত্রাসী খুনিদের বাংলার মাটিতে  বিচার হোক।

এবিষয়ে আওয়ামী নেতা সানাউল্লাহর সহযোগী মানিক হোসেন দেওয়ানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেকে বিএনপি পরিবারের সদস্য বলে দাবি করেন। তবে কত  সালে তিনি মানিকগঞ্জ জেলা শাখা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন এবং কত সালে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য ছিলেন জানতে চাইলে৷ তিনি তাঁর কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। ছাত্র দলের পেডে সাবেক ছাত্র নেতা মোস্তাফিজুর রহমান প্রিন্সের  স্বাক্ষরিত প্রত্যায়ন পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তার কোন এক মামা তাকে এটা দিয়েছেন এবং তিনিই সব কিছু জানেন সেই মামার সাথে কথা বলে পরে জানাবেন বলে জানান, এরপর থেকে তিনি আর কোন ফোন  রিসিভ করেননি।

ঘটনার সত্যতা জানতে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক  মামলার তদন্ত অফিসার মজিবর রহমান’ ভূঁইয়ার  সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হ্যা মানিক হোসেন দেওয়ান আমার কাছে ১ টি ফরম ২ টি প্রত্যায়ন পত্র দিয়েছেন আমি এটার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button