রাজনীতিরাষ্ট্রনীতি

সংস্কারের সুপারিশ গ্রহণ করতে জনগণের প্রতি আহ্বান

রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আমরা সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনগুলো জনগণ, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের কাছে দিয়ে দেবো। যাতে করে তারা একমত হতে পারেন; কী করলে তাদের ভালো হবে। আমি আশা করি সবাই মিলে প্রস্তাবসমূহ এক মনে গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করবে। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ করে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুই কমিশন সরকারপ্রধানের হাতে তাদের প্রতিবেদন তুলে দেন। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সম্পদ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের জন্য অবদান। সব জাতিকে সংস্কার সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। যারা সংস্কার নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন তারা দেখবেন কী বাদ গেল। তারা যখন তাদের দেশের জন্য চিন্তা করবেন বা প্রস্তাব আনবেন তখন এগুলো খতিয়ে দেখবেন কী প্রস্তাব আছে, কী সুপারিশ রয়েছে। সংস্কার কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির সম্পদ ও পৃথিবীর সম্পদ হিসেবে আমি রিপোর্টগুলো গ্রহণ করলাম। এ কাজ ইতিহাসে স্থান করে নেবে। ড. ইউনূস আরও বলেন, আমাদের অভিজ্ঞতা হচ্ছে যে, নাগরিক হিসেবে আমাদের যেসব দাবি আছে, অধিকার আছে, সেগুলো ভুলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।

তবে আশার কথা হচ্ছে যে, আমরা প্রতিদিন নাগরিক অধিকার  থেকে যেভাবে বঞ্চিত হই, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেই বঞ্চনা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। সত্যিকারভাবে নাগরিক হিসেবে অধিকার ফিরে পাবো। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, এই দু’টি ক্ষেত্রে সংস্কার হলে, বাংলাদেশের সকল নাগরিককে তা স্পর্শ করবে। অন্যান্য কমিশনের বড় বড় লক্ষ্য থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো সরাসরি তাদেরকে স্পর্শ করে না। ধনী, গরিব বা মধ্যবিত্ত যেই হোন না কেন, এই দু’টির সঙ্গে আপনাকে সম্পৃক্ত হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনকে বাংলাদেশের ইতিহাসের স্মরণীয় পুস্তক হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আপনারা বহুজনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আপনাদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা সবকিছুর সংক্ষিপ্তসার আকারে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা স্মরণীয় পুস্তক এটি। এই প্রস্তাবের কতোটুকু বাস্তবায়ন করেছি-ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তা নিয়ে আমাদের বিচার করবে। জাতির জন্য এটা স্মরণীয় বিষয়-এটা রেফারেন্স পয়েন্ট হিসেবে থেকে যাবে। বিদেশিদের কাছে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবসমূহ তুলে ধরার জন্য তিনি প্রতিবেদনগুলো ইংরেজিতে অনুবাদ করার আহ্বান জানান। গত ৮ই আগস্ট সরকার গঠন করার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতের সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়। এর মধ্যে গত ১৫ই জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশনপ্রধানরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button