ইসলাম ধর্ম

যে ঘটনা দেখার পর ডাকাতের দলেরা তাওবা করে পরবর্তীতে ওলি আল্লাহ হয়ে গেছে….

গাউছুল আ’যম, শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি ছোটবেলায় সেই জীলান শহর থেকে বাগদাদে লেখাপড়া শিক্ষা করার জন্য যাবেন। এজন্য এক কাফেলার সাথে রওয়ানা দিয়েছেন। কিছুদূর যাওয়ার পরে কাফেলায় ডাকাত পড়লো। ডাকাতরা সকলের কাছ থেকে মারধর করে ছিনতাই করে সবকিছু নিয়ে যাচ্ছিল।

গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার তখন মাত্র ১৭ থেকে ১৮ বৎসর চলতেছে। উনি এক কিনারে দাঁড়িয়ে রইলেন। ডাকাতদের কাজ দেখতে লাগলেন। ডাকাতরা সবার কাছ থেকে লুটপাট করে নিতে লাগল। এক সময় উনার কাছে একটা ডাকাত এসে জিজ্ঞাসা করল- হে ছেলে, আপনার কাছে কিছু আছে কি?

উনার চেহারা-ছূরত দেখে মনে হচ্ছিল, উনি বুযূর্গ ব্যক্তি, যেহেতু উনি ওলীয়ে মাদারযাদ। গাউছুল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, ‘হ্যাঁ! আছে। ’

এভাবে একজন, দুইজন, ডাকাতরা একই কথা শুনলো। তখন তারা গিয়ে বললো সর্দারের কাছে, সর্দার একটা ছেলে আছে, অল্প বয়স্ক। উনাকে আমরা জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার কাছে কিছু আছে কি? জবাবে সেই ছেলেটা বললেন, হ্যাঁ! আছে।

সর্দার বললো, উনাকে ডেকে নিয়ে আস। ডেকে আনা হলো। জিজ্ঞাসা করা হলো- আপনার কাছে কিছু আছে কি?

উনি বললেন, হ্যাঁ! আছে। কি আছে? উনি বললেন, চল্লিশটা স্বর্ণমুদ্রা। চল্লিশটা মোহর স্বর্ণের। সুবহানাল্লাহ!

যেই চল্লিশটা স্বর্ণের মোহরের বর্তমান মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা হবে। ডাকাত সর্দার বললো, কোথায়? উনি জামা খুলে দেখালেন দেখ, জামার ভিতরে সিলাই করা আছে।

ডাকাত সর্দারতো তাজ্জব হয়ে গেল। আপনি বলেন কি? আপনার জামার ভিতরে সিলাই করা। আমরাতো এটা দেখিই নাই। আপনিতো এটা না বললেও পারতেন।

গাউছুল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, দেখ! আমি যখন সফরে রওয়ানা হই, আমার আম্মা, যিনি বৃদ্ধা, জঈফ, উনি বলেছেন- বাবা, রাস্তায় কখনও মিথ্যা কথা বলবেন না, কখনও না। যেহেতু আমার আম্মা নিষেধ করেছেন মিথ্যা বলতে। কাজেই মাত্র চল্লিশটা স্বর্ণমুদ্রার জন্য আমি মিথ্যা কথা বলতে পারবো না।

শুনে ডাকাত সর্দার তাজ্জব হয়ে গেল। সে ভাবতে লাগলো- “আমরা দু’চার পয়সার জন্য, পাঁচ-দশ টাকার জন্য, বিশ-পঞ্চাশ টাকার জন্য, একশ-দু’শ টাকার জন্য মানুষ হত্যা করে ফেলি। মানুষের থেকে ছিনতাই-রাহাজানি করে থাকি। আর এই বাচ্চা ছেলে চল্লিশটা স্বর্ণমুদ্রা, তার জন্যও তিনি মিথ্যা বললেন না। ”

এরপর সমস্ত ডাকাত তাদের সর্দারসহ সকলে উনার পা মুবারক-এ পড়ে গেল। পা মুবারক-এ পড়ে মাফ চাইল এবং তওবা করলো। বলা হয়- পরবর্তী সময় তারা মক্কা শরীফ চলে গিয়েছিল এবং মহান আল্লাহ পাক উনার বড় ওলী হয়েছিল। সুবহানাল্লাহ!

اَلصِّدْقُ يُنْجِى وَالْكِذْبُ يُهْلِكُ

“সত্য মানুষকে জীবন দান করে, মিথ্যা ধ্বংস করে দেয়। ” সত্যবাদী যাঁরা উনারা কামিয়াব। উনারাই হাক্বীক্বী মুসলমান।

আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সর্ব অবস্থায় সত্য বলার তৌফিক দান করুন। আমিন!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button