অন্যের সম্পদ /রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ হারাম এ বিষয়ে কুরআনের তাফসীর

2,আল-বাক্বারা,আয়াত নং: 188
وَ لَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ
আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের সম্পদ অবৈধ পদ্ধতিতে খেয়ো না।
তাফসির :
মুসনাদ-ইআহমাদে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন-‘সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক হচ্ছে ঐ ব্যক্তি, যে তার প্রতিবেশীর ক্ষেতের ভূমি বা ঘরের মাটি দাবিয়ে নেয়। যদি এক হাত মাটিও অন্যায়ভাবে নিজের দিকে চেপে নেয় তবে সাতটি যমীনের গলাবদ্ধ তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে।
হযরত আবু রাফে’ (রাঃ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) আসর নামাযের পরে প্রায়ই বানু আব্দুল আসহালের ওখানে গমন করতেন এবং প্রায়ই মাগরিব পর্যন্ত তথায় জনসমাবেশ থাকতো। একদা মাগরিবের সময় তিনি তথা হতে ফিরে আসছিলেন। সময় সংকীর্ণ ছিল বলে তিনি দ্রুত পদে চলছিলেন। বাকীতে (জান্নাতুল বাকী নামক গোরস্থান) পৌছে তিনি বলেনঃ তোমার প্রতি অভিশাপ! তোমার প্রতি অভিশাপ!’ আমি মনে করি যে, তিনি আমাকেই বলছেন। তাই আমি আমার কাপড় ঠিকঠাক করতে গিয়ে তার পিছনে পড়ে যাই। তিনি আমাকে বললেনঃ ব্যাপার কি?’ আমি বলি- “হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আপনার এ উক্তির কারণে আমি পিছনে থেমে গিয়েছিলাম। তিনি বলেন, ‘আমি তোমাকে বলিনি, বরং এটি অমুক ব্যক্তির সমাধি। আমি তাকে অমুক গোত্রের আদায়কারী করে পাঠিয়েছিলাম। সে একটি চাদর লুকিয়ে নিয়েছিল। ঐ চাদরটি এখন আগুন হয়ে তার উপর জ্বলতে রয়েছে।’ (মুসনাদ-ই-আহমাদ)
মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, খাইবারের যুদ্ধের দিন সাহাবা-ই-কিরাম আসেন ও বলেন, অমুক শহীদ, অমুক শহীদ। একটি লোক সম্বন্ধে এ কথা বলা হলে রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘কখনই নয়, আমি তাকে জাহান্নামে দেখেছি। কেননা, সে গনীমতের মাল হতে একটি চাদর আত্মসাত করেছিল।
3,আলে-ইমরান,আয়াত নং: 161
اَنْ یَّغُلَّ١ؕ وَ مَنْ یَّغْلُلْ یَاْتِ بِمَا غَلَّ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ١ۚ
যে ব্যক্তি খেয়ানত করবে কিয়ামতের দিন সে নিজের খেয়ানত করা জিনিস সহকারে হাজির হয়ে যাবে।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর বলেছেন সম্পদ সংরক্ষণের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এক ব্যক্তিকে নিয়োজিত করেছিল যার নাম ছিল করকরা। করকরার মৃত্যু হলে রাসুল সাঃ বলেন সে দোযখী। সবাই দেখতে পেল ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মালপত্রের মধ্যে একটি আরবী পোশাক রয়েছে যা সে আত্মসাৎ করেছিল।( বুখারী শরীফের হাদিস)
ইবনে মিরদুওয়াই (রঃ)-এর গ্রন্থে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ যদি কোন পাথর জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয় অতঃপর ওটা সত্তর বছর পর্যন্ত চলতে থাকে তথাপি জাহান্নামের তলদেশে পৌছতে পারবে না। আত্মসাতকৃত জিনিসকে ঐরূপভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং আত্মসাতকারীকে বলা হবে-যাও ওটা নিয়ে এসো’।
মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ সাক্ষ্য দানের কারণে সমস্ত পাপ মুছে যায়, কিন্তু আমানত মুছে যায় না। যদি কোন লোক আল্লাহর পথে শহীদও হয়ে থাকে তাকেও কিয়ামতের দিন আনয়ন করা হবে এবং বলা হবে- ‘আমানত আদায় কর।' সে উত্তরে বলবে, এখন তো দুনিয়ায় নেই, সুতরাং আমি আমানত কোথা হতে আদায় করব’? অতঃপর সে ঐ জিনিস জাহান্নামের তলদেশে দেখতে পাবে এবং তাকে বলা হবে-ওটা নিয়ে এসো'। সে ওটা তার স্কন্ধে বহন করে চলতে থাকবে। কিন্তু ওটা পড়ে যাবে এবং সে পুনরায় ওটা নিতে যাবে। অতএব সে ঐ শাস্তিতেই জড়িত থাকবে।
4,আন্-নিসা,আয়াত নং: 29
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَاْكُلُوْۤا اَمْوَالَكُمْ بَیْنَكُمْ بِالْبَاطِلِ اِلَّاۤ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরস্পরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ে ফেলো না।