রাজনীতি

অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন দিন: মঈন খান

অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আগে সংস্কার করব, পরে অন্য কিছু করব, এটা তো হতে পারে না। সংস্কার শেষ করে এরপর নির্বাচন, এটা হতে পারে না। সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়ার পরে সংস্কারের কাজ কি বন্ধ হয়ে যাবে?’

রাজধানীর একটি হোটেলে আজ রোববার আয়োজিত ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান এ কথা বলেন। স্কুল অব লিডারশিপ (এসওএলই-ইউএসএ) নামের একটি সংস্থা এই সংলাপের আয়োজন করে।

মঈন খান বলেন, ‘মানুষ ২০১৪, ১৮ ও ২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে যে নির্বাচন হলো, সেটা নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলে না? এক-এগারোর যে পরিকল্পনা ছিল, বিরাজনীতিকীকরণ; সেই সমস্যা আজও কিন্তু দেখতে পাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করবেন। তার একটি ইঙ্গিত নতুন করে চলে এসেছে। এখানে আলোচনা করতে এসেছি নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চাই, (বিরাজনীতিকীকরণ হলে) এসব কিন্তু ভেস্তে যাবে।’

প্রার্থীকে হতে হবে সৎ ও মানবিক, সংলাপে এমন মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় পরিবর্তন হয়নি। দলবাজির মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সংলাপে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সহিংসতা কমে যাবে। কালোটাকার মালিক, যাঁদের এলাকাবাসী চেনেন না, তিনি প্রার্থী হয়ে গেলেও পরে এই টাকা তুলতে নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে যান। কিন্তু পিআর–পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে টাকার ভিত্তিতে প্রার্থী হতে হবে না।

প্রার্থী হিসেবে কেবল ভালো মানুষ দিলেই হবে না, জিততে পারবেন তো? বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করার সময় এমন বিষয়ও সামনে চলে আসে বলে মনে করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, কোন দল কাকে প্রার্থী করবে, তা ওই দলের আদর্শের ওপর নির্ভর করে। এ ধরনের আলোচনা বা সংলাপ নির্বাচনে প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে মূলত কোনো প্রভাব রাখে না।

স্কুল অব লিডারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) রুহুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংলাপ সঞ্চালনা করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জামিল আহমেদ।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মতিনুর রহমান। সঠিক ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করার জন্য মৌলিক কয়েকটি মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সততা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও রক্ষায় ভূমিকা, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও নেতৃত্বের দক্ষতা, অর্থনৈতিকভাবে দুর্নীতিমুক্ত এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় সক্ষমতা অন্যতম।

সংলাপে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান এম এম শরীফুল করিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শিশির মনির, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রমুখ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button