কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে পরিণতি

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয়। অতঃপর ঐদিন আল্লাহর সাথে শিরককারী ও দু’ ভাইয়ে শত্রুতা পোষণকারীরা ছাড়া সকলকেই ক্ষমা করা হয়। বলা হয়, তোমরা এ দু’ জনকে শত্রুতা ত্যাগ করার সুযোগ দাও।
ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চল্লিশ দিন যাবত তাঁর কোনো এক স্ত্রী থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। ইবনু উমার (রাঃ) আমৃত্যু তার এক পুত্রের সঙ্গে সম্পর্কছিন্ন অবস্থায় ছিলেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, সম্পর্কচ্ছেদ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হয়ে থাকলে তাতে গুনাহ নেই। উমার ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ) এক ব্যক্তি থেকে তার চেহারা আঁড়াল করে রেখেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার। এই দিনটি মুমিনদের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণঃ
১. বৃহস্পতিবারে শিরক-বিদ’আত মুক্ত মুমিন মুসলিমদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়ঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ প্রত্যেক সোম ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয়। অতঃপর ঐদিন আল্লাহর সাথে শিরককারী ও দু’ ভাইয়ে শত্রুতা পোষণকারীরা ছাড়া সকলকেই ক্ষমা করা হয়। বলা হয়, তোমরা এ দু’ জনকে শত্রুতা ত্যাগ করার সুযোগ দাও। (সহিহ মুসলিম,হা/৬৪৩৮,আবু দাউদ,হা/৪৯১৬)
হাদীসের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাঃ আল্লাহর সাথে শিরক মুক্ত থাকার অনেক ফযীলত রয়েছে। এর দ্বারা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর নিরাপত্তা ও বিজয় লাভ করা সম্ভব হয়। (সূরা আন’আম,৬/৮২, আলে ইমরান,৩/১৩৯,সূরা নূর,২৪/৫৫)
যারা শিরক বিদআত হতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে আল্লাহ তাদের প্রত্যেক সোমবার ও বৃহস্পতিবারে এমনিতেই ক্ষমা করে দেন
তবে যে ব্যক্তি তার কোনো আত্মীয়ের সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কারণে সম্পর্কচ্ছেদ করে তাকেও এই দিনে ক্ষমা করা হয় না কারণ সম্পর্কচ্ছেদ করা মারাত্মক পাপ। যেসব আত্মীয় শিরক বিদআত হতে সাবধান হয় না তাদের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখা উচিত নয় আবার একেবারে সম্পর্কত্যাগ করাতেও ফলাফল অনেক সময় ভাল হয় না।
আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্বঃ
১. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন : আল্লাহ তা‘আলা সমস্ত মাখলুক সৃষ্টি করলেন। অতঃপর যখন সৃষ্টি থেকে অবসর হলেন, তখন আত্মীয়তা উঠে দাঁড়ালো এবং রহমানের (আল্লাহ তা‘আলার) কোমর ধরে নিলো (এবং ফরিয়াদ করল) আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তুমি থাম। আত্মীয়তা আরজ করল : এ স্থান তার, যে আপনার সামনে আত্মীয়তার সম্পর্কচ্ছেদ হতে রেহাই প্রার্থনাকারী। আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তুমি কি এতে সন্তুষ্ট না যে, যে ব্যক্তি তোমাকে বহাল ও সমুন্নত রাখবে তার সাথে আমিও সদাচরণ করব আর যে তোমাকে ছিন্ন করবে। আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। আত্মীয়তা আরজ করল : হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট আছি। আল্লাহ তা‘আলা বললেন : তাহলে তোমার সাথে এ ওয়াদাই রইল। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন : তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াতটি পড়। (সহীহ বুখারী হা. ৪৮৩২)
ক্ষমতা পেলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে আর আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। (সূরা মুহাম্মাদ,৪৭/২২)
এই হাদীস ও আয়াত দ্বারা আমরা যা যা জানতে পারিঃ
১. যে ব্যক্তি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে আল্লাহ ও তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন।
২. আল্লাহর কোমর রয়েছে। তবে আল্লাহর কোমর কেমন এমন প্রশ্ন করা বিদআত এবং আল্লাহর কোমর সম্পর্কে কোনো কল্পনা, আকৃতি নির্ধারণ করা যাবে না। আমরা বলবো “আল্লাহর কোমর তেমনই,যেমনটা আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য”
৩. হাতে ক্ষমতা আসলে অধিকাংশ মানুষই পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে আর আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে।
তাই ক্ষমতালোভী হওয়া মোটেই হক্বপন্থি আলেমদের বৈশিষ্ট্য নয়। যদিও বর্তমানে নামধারী কিছু রাজনৈতিক দল ও কিছু খারেজি-মুরজিয়া-তাকফিরী দল