মতামত

দেবিদ্বারে ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের আশ্রয় দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টির হাসনাত আব্দুল্লাহ

মতামতঃ

মেহেদী হাসান রিয়াদঃ প্রিয় পাঠক, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং আলোচনা-সমালোচনাকারীগণ, আসসালামু আলাইকুম।
আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আছি আলহামদুলিল্লাহ্। প্রথমেই এই লেখা নিয়ে আমার সকল ভুলভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শুরু করছি।

গতকাল রাতে আমি আমার ব্যক্তিগত এবং একমাত্র ফেইসবুক প্রোফাইল থেকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের আশ্রয় দিচ্ছে এনসিপি’র হাসনাত আব্দুল্লাহ’ এমন একটি শর্ট স্ট্যাটাস দিয়ে ছিলাম। এবং আজ এর বিস্তারিত লিখবো বলেও আপনাদের অপেক্ষা করিয়েছি।

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ কোটা বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী এক দফার আন্দোলন পর্যন্ত সম্মুখ সারিতে অবস্থান করে ছিলেন। ফ্যাসিবাদের পতন হলে হাসনাতকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক করা হয়। পরে তাদের সেই ছাত্র-সমন্বয়ক কমিটি গুলো বিলুপ্তের মাধ্যমে “জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি” নামের একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়। সেখানেও হাসনাতকে কেন্দ্রীয় নেতাদের শীর্ষ তালিকায় রেখে মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। এগুলোর সম্পর্কে আপনারা সবাই অবগত আছেন।

এখন আপনাদের প্রশ্ন থাকতেই পারে, আমি ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকদের আশ্রয়দাতা হিসেবে হাসনাতকে চিহ্নিত করার পর কেন আবার তার (হাসনাত) সম্পর্কেই লিখছি? এগুলো লিখার মূল কারণ দেবিদ্বারের সেই ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকরাই।

আরেকটি কথা বলে রাখি। আমি নিজেও একজন গণমাধ্যমকর্মী বা সাংবাদিক। তবে, একটা দলের সমর্থক হওয়ায় অনেকের চোখে আমি রাজনীতিবিদও বটে। কিন্তু, আবারও জানিয়ে রাখতে চাই; আমি আমার ব্যক্তিক জীবন, পেশাদারিত্ব এবং রাজনৈতিক অবস্থান সব সময় আলাদা-আলাদা চরিত্রের মতো করে ধারণ করি। বলাচলে একপ্রকার বহুরূপীতা। তাই একটাকে আরেকটার সাথে কখনোই জুড়ে দেই না। নিজেকে সকলের মাঝে জাহির করছি ঠিক এমনটাও নয়। আর এই লিখাটা সাংবাদিক কিংবা রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, আমি একজন ব্যক্তি হিসেবে মতামত হিসেবেই লিখছি। আপনারা এ মন্তব্যকে আমার অপর দুই চরিত্রের সাথে না মেলানোর অনুরোধ করছি।

গেলো ৫ আগস্ট, এই দেশের সাধারণ মানুষ, ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং ছাত্র-শ্রমিক অর্থাৎ সকল শ্রেণির ও পেশার মানুষের একযোগে আন্দোলনের ফলেই হয়েছে। সেক্ষেত্রে হাসিনা সরকার তথা ফ্যাসিবাদ দূর করার কৃতিত্ব একক ভাবে কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো গোষ্টির নয়। আমাদের সকলের। সকলের বলতে- যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি কিংবা মন থেকেও চেয়েছি। তাদের সবার। সে তালিকায় ফ্যাসিবাদের রাণী হাসিনার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীও রয়েছে। যেটাও অস্বীকার করা যাবে না।

সারা দেশের মতো আমার নিজ এলাকা কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলাতেও আন্দোলন হয়েছে। রাজপথে জীবন দিয়েছেন অনেকেই। হয়তো প্রথম দিকে আন্দোলন তেমন ছিলোই না। বলা চলে, শুধুমাত্র এক দিনের লড়াই-সংগ্রামের সে আন্দোলন ব্যাপক ভাবেই সংগঠিত হয়েছিলো। সে দিনটা ছিলো ‘৪ আগস্ট-২০২৪ খ্রি., রোববার’।

সেদিন দেবিদ্বারের তৎকালীন এমপি, সন্ত্রাস বাহিনীর গডফাদার আবুল কালাম আজাদ ও তার সন্ত্রাস বাহিনী দেবিদ্বারে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা-রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উপর নির্মম অত্যাচার চালায়। আন্দোলন চলাকালে দেবিদ্বার নিউ মার্কেট এলাকায় সেইসব সন্ত্রাস বাহিনী প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া বাদশা রুবেল নামে একটি রাজনৈতিক দলের কর্মীকে হত্যা করে। এসময় আহতও হয়েছেন শতাধিক আন্দোলনকারী। এরমধ্যে আমি নিজেও একজন। এসএম শাওন মহিউদ্দিন নামের এক আ.লীগের সন্ত্রাসী আমাকে গ্যাস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে (বাম কানের পর্দা ফেটে যায় এবং বাম পায়ের হাটুর জয়েন্টে ফ্র্যাকচার হয়)। আমি সেদিন পেশাদারিত্বকে ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়ে তাদের সাথে অংশ নিয়ে ছিলাম। যেহেতু আমি সরাসরি সেদিন দেবিদ্বারে উপস্থিত ছিলাম, তাই দেবিদ্বারে আন্দোলনের প্রায় ৮০ভাগ চিত্র নিজ চোখে দেখেছি। কারা আন্দোলনে যুক্ত ছিলো, কারা প্রথম সারিতে থেকে লড়াই করেছে, কারা গুলি চালিয়েছে, রাম-দা; চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে; প্রায় সব কিছুর ভিডিও এবং স্থির চিত্র (কিছু নিজের তোলা এবং কিছু প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা) আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

এবার আসি সাংবাদিকদের কথায়! এঁরা আবার ফ্যাসিবাদের দোসর হয় কিভাবে? এটাইতো আপনাদের প্রশ্ন? তাই নাহ্? এবার বলি শুনোন- ৪ আগস্ট যখন দেবিদ্বারে কালাম বাহিনী তান্ডব চালাচ্ছিলো; তখন আমার মতো দেবিদ্বারের অনেক সংবাদিকই সেখানে তথ্য সংগ্রহ করছিলো। কিন্তু এর মধ্যে স্যোশাল মিডিয়ার আলোড়ন সৃষ্টিকারী কয়েকজন সংবাদিকের কিছু চিত্র অনাকাঙ্খিত ভাবে আমার সংগ্রহের মধ্যে চলে আসে, যেগুলো যাচাই-বিশ্লেষণ করে আমি নিজেই পুরো হতভম্ব! এরমধ্যে টপ লিস্টে রয়েছে দুজন সাংবাদিকের নাম। একজন তৎকালীন কালবেলার দেবিদ্বার প্রতিনিধি শাহীন আলম, আরেকজন মানবজমিনের সাবেক দেবিদ্বার প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান (সাবেক হওয়ার কারণ, শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে মানবজমিন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে পত্রিকাটির সম্পাদক)।

শাহীন আলমের যে ছবিটির উপর ভিত্তি করে আমি তাকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিচ্ছি, সেই ছবিতে (ছবি সংযুক্ত) দেখা যায়; সাংবাদিক শাহীন আলম তার মোবাইল থেকে ছবি বের করে সন্ত্রাস বাহিনীর লিডার আবুল কালাম আজাদ ও তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মামুন তাদের দলবলকে কিছু একটা দেখাচ্ছে।
ছবিটির সম্পর্কে বিশদ বিবরণী খুঁজতে গিয়ে যা জানতে পারলাম; তা হলে কালাম গং যখন ছাত্র-জনতাকে হামলা চালাচ্ছিলো, তখন এক পর্যায়ে সাংবাদিক শাহীন আলম তার মোবাইল থেকে ছবি বের করে এমপিকে ছাত্র-জনতার অবস্থান ও তাদের যাবতিয় তথ্য জানিয়ে দেয়।

এই বিষটি নিয়ে পূর্বের আমার ফেইসবুক প্রোফাইলে একটি স্ট্যাটাসও দিয়ে ছিলাম ( লিংক :

https://www.facebook.com/photo/?fbid=3735832300005635&set=a.1879555208966696


আমি সেখানে দেবিদ্বারবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে ছিলাম- সংবাদকর্মী হিসেবে শাহীন আলমের কি করণীয় ছিলো আর সে বাস্তবে কি করেছে।
আর দ্বিতীয়জন, অর্থাৎ মাহমুদুল হাসান এর যে ছবিটি আলোচনায় এসেছিলো; সেখানে আবুল কালাম আজাদ যখন তার ‘পিস্তল’ ফায়ারিং এর জন্য লোডিং করছিলো, তখন ঠিক তার পাশে দাঁড়িয়ে কালামকে কিছু একটা দেখাচ্ছে। এই ছবিটি অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোষ্ট করে লিখে ছিলেন- মাহমুদুল হাসান; কালামকে পিস্তল লোডিং এ সহায়তা করছে। যা দেবিদ্বারবাসী সহ নেট দুনিয়াল আলোড়ন সৃষ্টি করে। যদিও মাহমুদুল হাসান এ বিষয়ে আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে জানিয়ে ছিলেন- তিনি তখন কালামকে পিস্তলটি বের করতে বাধা দিচ্ছিলেন। আর সেই সময়ে অজ্ঞাত ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও চিত্র থেকে সেই ছবিটি ভাইরাল হয়। এ বিষয়ে আপনাদের মতামতই আমার মতামত হিসেবে গৃহিত হবে। আপনারা এটাকে যেভাবে নেবেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ্ কিভাবে আশ্রয় দিচ্ছে আর কাদের দিচ্ছে সেটা বলার আগে আরও একটু যুক্ত করতে চাই; ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে দেবিদ্বারের সাবেক এমপি রাজী ফখরুলের আস্থাভাজন হিসেবে দেবিদ্বারে বেশ কিছু সাংবাদিক চিহ্নিত ছিলো। তার মধ্যে অন্যতম যুগান্তরের আবুল খায়ের। এর বাইরে যে আর কেউই ছিলো না তা নয়। যেহেতু মফস্বল সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলো, তাই কম বেশ সকলেই ক্ষমতায় থাকা এমপিদের পক্ষে, কেউ কেউ একেবারে চাটুকারিতা করেই সংবাদ পরিবেশন করেছেন।
আমি নিজেও কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী লীগের এমপিদের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছি। তবে চাটুকারিতা নয়। আবার তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধেও লিখেছি।

তবে, এই জুলাই-আগস্টের আন্দোলনেও যারা আ.লীগের পক্ষে ছিলো; তারা কি ফ্যাসিবাদের দোসর নয়? আপনাদের কাছেই প্রশ্ন রাখলাম।

গত ৮ই মার্চ হাসনাত আব্দুল্লাহ দেবিদ্বার উপজেলা ও কুমিল্লা জেলায় কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিক এবং তার দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ছিলেন। সেদিনকার বেশ কয়েকটি ছবিতে দেখা- তার একপাশে বসা সমকালের দেবিদ্বার প্রতিনিধি সৈয়দ খলিলুর রহমান বাবুল এবং অপর পাশে সমকালের কুমিল্লা প্রতিনিধি কামাল উদ্দিন। আর কামাল ভাই এর পাশে বসা ছিলো- যুগান্তরের খায়ের এবং ঠিক তার পাশেই ছিলো শাহীন আলম।

এখনও অনেকেই ভাবতে পারেন, ইফতার অনুষ্ঠানে যেহেতু সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেখানে হয়তো তারাও অন্যদের মতো এসেছে। হ্যাঁ, এমনই হয়েছে। তবে সেটা শুধু মাত্র আবুল খায়েরের ক্ষেত্রে হয়তো প্রযোজ্য। কিন্তু শাহীন?

অনেকে হয়তো এগুলো পড়ার পর ভাবছেন- ওই সাংবাদিকদের সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো আক্রোশ থেকে এসব লিখছি। বিশ্বাস করুন আর নাইবা করুন- আমি শুধুমাত্র একজন ফ্যাসিবিরোধী হিসেবে, নিজের মতামত লিখছি। এর বাইরে সত্যিই আমার কোনো আক্রোশ বা শত্রুতা থেকে এসব লিখিনি।

আর যদিও আমার দেবিদ্বারে থাকা হয় না, তবুও আমাকে যারা বিভিন্ন সময় তথ্য দিয়ে সাহায্য করেন; তাদের মাধ্যমে জেনেছি, হাসনাত আব্দুল্লাহ’র বেশ ভালো কাভারেজ দিচ্ছে শাহীন আলম। এবং বলা চলে- আগে যেমন রাজী-কালামের চাটুকারিতা করতো, ঠিক তেমন ভাবেই হাসনাতের খুবই প্রিয়জন হয়ে ওঠেছে সে। এমনকি দেবিদ্বারের সাংবাদিকদের নিয়ে হাসনাতের যে হোয়াটএ্যাপ গ্রুপটি রয়েছে, সেখানেও বেশ দাপুটে শাহীন আলম।
এখানেও আপনাদের মন্তব্য হতে পারে, হাসনাত হয়তো এসব বিষয় জানেই না।

এখানেই আমার দ্বিমত থাকবে, একজন সম্মুখ সারির ফাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনকারী হিসেবে হাসনাত আব্দুল্লাহ কেন যাচাই-বাছাই ছাড়া যে কাউকে ভিড়তে দেবে? যাতে করে সে নিজেই বিতর্কিত হয়।

এখন আবার আপনারা বলতে পারেন- সে তো আর দেবিদ্বারে থাকে না। যারাই তার পক্ষে কাজ করছে, তাদেরকেই তার দলে নিয়ে নিচ্ছে (দলে বলতে সাংবাদিদের দল বুঝাচ্ছি)। অথবা তার যেসব স্থানীয় নেতাকর্মী আছেন, তাদের কাছ থেকে এমন কোনো তথ্য সে পায়নি, যাতে ওইসব সাংবাদিকদের ফ্যাসিবাদের দোসর বলা যায়, তাদের থেকে নিজেকে দূরে রাখা যায়।

এখানে একটি কথা যুক্ত করে আবারও আমার দ্বিমত থাকবে, আসলে দেবিদ্বারে যারা এতোদিন সমন্বয়ক ছিলো, এখন যারা জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা; তাদের অনেকেই তো আন্দোলনের ধারের কাছেই ছিলো না। ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের পতনের পর মাঠে এসে দৃশ্যমান কিছু কাজ করে তারাই হয়ে গেছেন ‘সমন্বয়ক/এনসিপি নেতা’। সেসব নেতাদের প্রতি খোদ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকছে প্রকৃত পক্ষে আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিপ্লবীরা (এসব নিয়ে পরে আরেকদিন লিখার চেষ্টা করবো)। আসলে এরা তো নিজেরাই জানে না, যে কে ফ্যাসিবাদের দোসর আর কে বিপ্লবী। এগুলোও কি যথেষ্ট নয় হাসনাত আব্দুল্লাহকে ফ্যাসিবাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে আখ্যা দিতে?

এবার একটু ভিন্ন তথ্য জানাই আপনাদের; যখন গতকাল বিষটি নিয়ে ফেইসবুকে লিখলাম, এরপর থেকে আমার মুঠোফোনে প্রায় কয়েক ডজন মানুষের কল এসেছে। ম্যাসেঞ্জার-হোয়াটসএ্যাপে কল আর টেক্সট এসেছে আরও বেশি। সেখানে কেউ কেউ আরও কিছু চমকপ্রদ তথ্য দিয়েছেন আমায়। কেউ কেউ বলেছেন, তুমিওতো সংবাদিক। নিজেদের মধ্যে কাঁদাছোরাছুরি করনা। কেউ কেউ আবার বলেছেন- তুমি যেহেতু দেবিদ্বারে থাকো না, সে ক্ষেত্রে কি দরকার দেবিদ্বারের এসব বিষয় নিয়ে লিখালিখি করার।

আর চমকপ্রদ তথ্যের কথা বললাম নাহ্! তার মাঝে একটা ছিলো এমন-
হাসনাত আব্দুল্লাহ তো আমার এলাকার এক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে যোগাযোগ করতেছে। হাসনাত খোদ নিজেই ফোন করেছিলো ওই নেতাকে।

এ তথ্যের প্রতিউত্তরে আমি জানচে চাইলাম- ফোন তো দিতেই পারে। কিন্তু কেন ফোন দিয়ে ছিলো হাসনাত?

সে জানালো- তার (হাসনাতের) দলে যুক্ত হওয়ার জন্য (এখানে তো একটা গল্প লিখলাম মাত্র, এমন আরও তথ্য কিন্তু পেয়েছি আমি)।

তাহলে এবার অনেকে আমার পূর্বের একটি কথার জের টেনে বলতেই পারেন, আপনিই তো বলেছেন- আ.লীগের অনেক নেতাকর্মীই জুলাই-আন্দোলনের পক্ষে ছিলো, তারা তো আর ফ্যাসিবাদি নন। হাসনাত যাকে দলে ভেড়াতে চায়, তিনিও হয়তো তাদের একজন। কিন্তু নাহ্। ওই লোক বরাবরই ছিলো জুলাই-আগস্ট আন্দোলন বিরোধী এবং ফ্যাসিবাদের পক্ষের।
হাসনাত কেনই বা আওয়ামী লীগের নেতাদের ভেড়াতে চায়? যেখানে সে নিজেই আওয়ামী লীগ তথা ফ্যাসিবাদের বিরোধীতা করে আন্দোলন করেছে। এমন প্রশ্ন যেমন আপনাদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, আমারও ঠিক একই অবস্থা। এখন বলতে পারেন- একজনের কথার উপর ভিত্তি করে হাসনাতের দিকে আমি আঙ্গুল তুলছি। কিন্তু, বলে রাখতে চাই- যে লোকটি আমাকে জানিয়েছেন, তিনি অন্তত মিথ্যা তথ্য দেওয়ার মতো লোক নন।
এছাড়া, আমার স্ট্যাটাসের কমেন্টেও অনেকেই লিখেছেন হাসনাত আওয়ামী লীগের লোকদের পুনঃবাসন করছে।
এসব বিষয়ে আমি আর কি মন্তব্য করবো বা মতামত লিখবো? আপনারাই বুঝে নিন।

ইতি টানার আগে বলে নেই, আমি একজন মানুষ হিসেবে, একজন বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে আমার যে কোনো মতামত সকলের মাঝে তুলে ধরতেই পারি। এটা আমার নাগরিক অধিকার। যা হরন করে নিয়ে ছিলো ওই ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগ!

সবশেষ বলছি, আমার কমেন্ট বক্স তো আপনাদের জন্য খোলাই রইলো। যে যার মতো করে মন্তব্য করতে পারেন। সেখানে কোনো কিছুতে যদি আমার মতবিরোধ থাকে তাহলে তার জবাব আমি দিবো। আর কোনো কিছু যদি আপনাদের কাছ থেকে গ্রহণ করার মতো হয়, তাহলে অবশ্যই তা গ্রহণ করবো। ধন্যবাদ সবাইকে।

  • আপনাদের স্নেহের
    মেহেদী হাসান রিয়াদ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button