ইসলাম ধর্ম

জিহাদের গুরুত্ব, সংক্ষিপ্ত আলোচনা

আল-বাক্বারা,আয়াত নং: 216

كُتِبَ عَلَیْكُمُ الْقِتَالُ وَ هُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ١ۚ وَ عَسٰۤى اَنْ تَكْرَهُوْا شَیْئًا وَّ هُوَ خَیْرٌ لَّكُمْ١ۚ وَ عَسٰۤى اَنْ تُحِبُّوْا شَیْئًا وَّ هُوَ شَرٌّ لَّكُمْ١ؕ وَ اللّٰهُ یَعْلَمُ وَ اَنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ۠

তোমাদের যুদ্ধ করার হুকুম দেয়া হয়েছে এবং তা তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর। হতে পারে কোন জিনিস তোমাদের কাছে অপ্রীতিকর অথচ তা তোমাদের জন্য ভালো। আবার হতে পারে কোন জিনিস তোমরা পছন্দ করো অথচ তা তোমাদের জন্য খারাপ। আল্লাহ‌ জানেন, তোমরা জানো না।

তাফসির :
দ্বীন ইসলামকে রক্ষার জন্যে ইসলামের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করা ফরয হওয়ার নির্দেশ এই আয়াতে দেয়া হয়েছে। যুহরী (রঃ) বলেন যে, প্রত্যেক লোকের উপরেই জিহাদ ফরয। সে স্বয়ং যুদ্ধে যোগদান করুক বা বাড়ীতে বসেই থাক। যারা বাড়ীতে অবস্থান করবে তাদের নিকট সাহায্য চাওয়া হলে তাদেরকে অবশ্যই সাহায্য করতে হবে। প্রয়োজনবোধে তাদেরকে যুদ্ধ ক্ষেত্রে যোগদানের আহ্বান জানান হলে তাদেরকে অবশ্যই যুদ্ধের মাঠে যোগদান করতে হবে।

সহীহ হাদীসে রয়েছে, “যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা গেল যে, সে জিহাদে অংশগ্রহণ করলো, না মনে জিহাদের কথা বললো, সে অজ্ঞতা যুগের মৃত্যুবরণ করলো।’

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ জান্নাতে একশ দরজা রয়েছে। যেগুলো আল্লাহ তা’আলা তাঁর পথে জিহাদকারীদের জন্যে প্রস্তুত করে রেখেছেন এবং প্রত্যেক দরজার মধ্যে এ পরিমাণ দূরত্ব রয়েছে যে পরিমাণ দূরত্ব রয়েছে। আসমান ও যমীনের মধ্যে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে তীর চালনা করে সে জান্নাতের দরজা লাভ করে। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেনঃ দরজা কি? তিনি বলেনঃ “ওটা তোমাদের এখানকার ঘরের দরজার সমান নয় বরং দু’ দরজার মধ্যে শত বছরের দূরত্ব রয়েছে।

9,আত-তওবা,আয়াত নং: 24

قُلْ اِنْ كَانَ اٰبَآؤُكُمْ وَ اَبْنَآؤُكُمْ وَ اِخْوَانُكُمْ وَ اَزْوَاجُكُمْ وَ عَشِیْرَتُكُمْ وَ اَمْوَالُ اِ۟قْتَرَفْتُمُوْهَا وَ تِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَ مَسٰكِنُ تَرْضَوْنَهَاۤ اَحَبَّ اِلَیْكُمْ مِّنَ اللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ جِهَادٍ فِیْ سَبِیْلِهٖ فَتَرَبَّصُوْا حَتّٰى یَاْتِیَ اللّٰهُ بِاَمْرِهٖ١ؕ وَ اللّٰهُ لَا یَهْدِی الْقَوْمَ الْفٰسِقِیْنَ۠

হে নবী! বলে দাও, যদি তোমাদের পিতা, তোমাদের সন্তান ও তোমাদের ভাই তোমাদের স্ত্রী, তোমাদের আত্মীয়-স্বজন, তোমাদের উপার্জিত সম্পদ, তোমাদের যে ব্যবসায়ে মন্দা দেখা দেয়ার ভয়ে তোমরা তটস্থ থাক এবং তোমাদের যে বাসস্থানকে তোমরা খুবই পছন্দ কর-এসব যদি আল্লাহ‌ ও তার রসূল এবং তাঁর পথে জিহাদ করার চাইতে তোমাদের কাছে বেশী প্রিয় হয়, তাহলে আল্লাহর ফায়সালা তোমাদের কাছে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা কর আল্লাহ ফাসেকদেরকে কখনো সত্য পথের সন্ধান দেন না।

9,আত-তওবা,আয়াত নং: 41

اِنْفِرُوْا خِفَافًا وَّ ثِقَالًا وَّ جَاهِدُوْا بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ

—বের হও, হালকা কিংবা ভারী যাই হওনা কেন, এবং জিহাদ করো আল্লাহর পথে নিজের ধন-প্রাণ দিয়ে। এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা জানতে

9,আত-তওবা,আয়াত নং: 88

لٰكِنِ الرَّسُوْلُ وَ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مَعَهٗ جٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَ اَنْفُسِهِمْ١ؕ وَ اُولٰٓئِكَ لَهُمُ الْخَیْرٰتُ١٘ وَ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ

অন্যদিকে রসূল ও তার ঈমানদার সাথীরা নিজেদের জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছে। সমস্ত কল্যাণ এখন তাদের জন্য এবং তারাই সফলকাম হবে।

61,আস-সফ,আয়াত নং: 11

تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تُجَاهِدُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ١ؕ ذٰلِكُمْ خَیْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَۙ

তোমরা আল্লাহ‌ ও তার রসূলের প্রতি ঈমান আন এবং আল্লাহর পথে অর্থ-সম্পদ ও জান-প্রাণ দিয়ে জিহাদ করো এটাই তোমাদের জন্য অতীব কল্যাণকর যদি তোমরা তা জান।
66,আত-তাহরীম,আয়াত নং: 9

یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ اغْلُظْ عَلَیْهِمْ١ؕ وَ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ؕ وَ بِئْسَ الْمَصِیْرُ

হে নবী, কাফের ও মুনাফিকরদের বিরুদ্ধে জিহাদ করো এবং তাদের প্রতি কঠোরতা দেখাও। তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। তা অত্যন্ত মন্দ ঠিকানা।

9,আত-তওবা,আয়াত নং: 73

یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَ الْمُنٰفِقِیْنَ وَ اغْلُظْ عَلَیْهِمْ١ؕ وَ مَاْوٰىهُمْ جَهَنَّمُ١ؕ وَ بِئْسَ الْمَصِیْرُ

হে নবী! পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাফের ও মুনাফিক উভয়ের মোকাবিল করো এবং তাদের প্রতি কঠোর হও। শেষ পর্যন্ত তাদের আবাস হবে জাহান্নাম এবং তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট অবস্থান স্থল।

সহিহ বুখারী : ২৮৪৩
যায়দ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র পথে জিহাদকারীর আসবাবপত্র সরবরাহ করল সে যেন জিহাদ করল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র পথে কোন জিহাদকারীর পরিবার-পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করল, সেও যেন জিহাদ করল।

সুনানে আন -নাসায়ী : ৩১৯২

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা জিহাদ কর তোমাদের হাত (শক্তি) দ্বারা, তোমাদের জিহবা (উক্তি) দ্বারা এবং তোমাদের সম্পদ দ্বারা।
সুনানে আন -নাসায়ী : ৪২০৯

তারিক ইব্‌ন শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞাসা করলো, আর তখন তিনি তাঁর পদদ্বয় ঘোড়ার পাদানীতে রেখেছিলেন, কোন জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ অত্যাচারী শাসকের সামনে সত্য কথা বলা।

সুনানে আন -নাসায়ী : ৫০২৯
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র রাস্তায় বের হয়, আল্লাহ এই বলে তার জামিন হয়ে যান যে, তাকে আমার উপর ঈমান এবং আমার রাস্তায় জিহাদ করা ব্যতীত আর কিছুই বের করেনি। সুতরাং আমি তাকে জান্নাতে দাখিল করব তা দুয়ের যেভাবেই হোক। সে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হোক অথবা স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করুক, অথবা তাকে ঐ ঘরে প্রত্যাবর্তন করান, যে ঘর হতে সে বের হয়েছিল; সওয়াব এবং যুদ্ধলব্ধ মালসহ।

3,আলে-ইমরান,আয়াত নং: 156

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِیْنَ كَفَرُوْا وَ قَالُوْا لِاِخْوَانِهِمْ اِذَا ضَرَبُوْا فِی الْاَرْضِ اَوْ كَانُوْا غُزًّى لَّوْ كَانُوْا عِنْدَنَا مَا مَاتُوْا وَ مَا قُتِلُوْا١ۚ لِیَجْعَلَ اللّٰهُ ذٰلِكَ حَسْرَةً فِیْ قُلُوْبِهِمْ١ؕ وَ اللّٰهُ یُحْیٖ وَ یُمِیْتُ١ؕ وَ اللّٰهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ بَصِیْرٌ

হে ঈমানদারগণ! কাফেরদের মতো কথা বলো না। তাদের আত্মীয়স্বজনরা কখনো সফরে গেলে অথবা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলে (এবং সেখানে কোন দুর্ঘটনায় পতিত হলে) তারা বলে, যদি তারা আমাদের কাছে থাকতো তাহলে মারা যেতোনা এবং নিহত হতো না। এ ধরনের কথাকে আল্লাহ‌ তাদের মানসিক খেদ ও আক্ষেপের কারণে পরিণত করেন। (তাদের কথা সঠিক নয় বরং, ) জীবন–মৃত্যু তো একমাত্র আল্লাহই দান করে থাকেন এবং তোমাদের সমস্ত কার্যকলাপের ওপর তিনি দৃষ্টি রাখেন।

9,আত-তওবা,আয়াত নং: 111

اِنَّ اللّٰهَ اشْتَرٰى مِنَ الْمُؤْمِنِیْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ١ؕ یُقَاتِلُوْنَ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ فَیَقْتُلُوْنَ وَ یُقْتَلُوْنَ١۫ وَعْدًا عَلَیْهِ حَقًّا فِی التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِیْلِ وَ الْقُرْاٰنِ١ؕ وَ مَنْ اَوْفٰى بِعَهْدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَیْعِكُمُ الَّذِیْ بَایَعْتُمْ بِهٖ١ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِیْمُ

প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ‌ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং মারে ও মরে। তাদের প্রতি তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে(জান্নাতের ওয়াদা) আল্লাহর জিম্মায় একটি পাকাপোক্ত ওয়াদা বিশেষ। আর আল্লাহর চাইতে বেশী নিজের ওয়াদা পূরণকারী আর কে আছে? কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে যে কেনা-বেচা করছো সেজন্য আনন্দ করো। এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।

সহিহ বুখারী, হাদীস নং : 2811

‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু জাবর (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আল্লাহ্‌র পথে যে বান্দার দু’পা ধূলায় মলিন হয়, তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে এমন হয় না।’
সহিহ বুখারী

রিয়াদুস সলেহিন, হাদীস নং : 1329

সাহ্‌ল ইবনে হুনাইফ (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি সত্য নিয়তে আল্লাহর কাছে শাহাদত প্রার্থনা করবে, আল্লাহ তাকে শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছিয়ে দিবেন; যদিও সে নিজ বিছানায় মৃত্যুবরণ করে।”

রিয়াদুস সলেহিন হাদীস নং : 1331
আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “শহীদ হত্যার আঘাত ঠিক সেইরূপ অনুভব করে, যেরূপ তোমাদের কেউ চিমটি কাটার বা পিপীলিকার কামড়ের আঘাত অনুভব করে।” (তিরমিযী, হাসান সহীহ)

সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং : 2504

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত :নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে নিজেদের সম্পদ, জীবন ও কথার দ্বারা জিহাদ করো।

সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং : 2522

নিমরান ইবনু ‘উতবাহ আয-যামারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, আমরা কতক ইয়াতীম উম্মুদ দারদা (রাঃ) এর কাছে প্রবেশ করলাম। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহন করো। কেননা আমি আবূ দারদা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শহীদ তার পরিবারের সত্তর জনের জন্য শাফা’আত করবে এবং তার সুপারিশ কবুল করা হবে।

2,আল-বাক্বারা,আয়াত নং: -১৫৪

وَ لَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ یُّقْتَلُ فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ اَمْوَاتٌ١ؕ بَلْ اَحْیَآءٌ وَّ لٰكِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ

আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে মৃত বলো না। এই ধরনের লোকেরা আসলে জীবিত। কিন্তু তাদের জীবন সম্পর্কে তোমাদের কোন চেতনা থাকে না।

হযরত কায়েস আল জুযামী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “শহীদকে ছয়টি ইনআ’ম দেয়া হয়। (এক) তার রক্তের প্রথম ফোটা মাটিতে পড়া মাত্রই তার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (দুই) তাকে তার জান্নাতের স্থান দেখানো হয়। (তিন) সুন্দরী, বড় বড় চক্ষু বিশিষ্টা হুরদের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। (চার) সে ভীতি-বিহ্বলতা হতে নিরাপত্তা লাভ করে। (পাঁচ) তাকে কবরের শাস্তি হতে বাচিয়ে নেয়া হয়। (ছয়) তাকে ঈমানের অলংকার দ্বারা ভূষিত করা হয়।” (এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে)
হযরত আৰূ কাতাদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “ঋণ ছাড়া শহীদের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।” (এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে)
25,আল-ফুরক্বান ,আয়াত নং: 52

فَلَا تُطِعِ الْكٰفِرِیْنَ وَ جَاهِدْهُمْ بِهٖ جِهَادًا كَبِیْرًا

কাজেই হে নবী, কাফেরদের কথা কখনো মেনে নিয়ো না এবং এ কুরআন নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বৃহত্তম জিহাদ করো।

সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2791
সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি আজ রাতে (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম যে, দু’ব্যক্তি আমার নিকট এল এবং আমাকে নিয়ে একটি গাছে উঠলো। অতঃপর আমাকে এমন উৎকৃষ্ট একটি ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিল এর আগে আমি কখনো এর চেয়ে সুন্দর ঘর দেখিনি। সে দু’ব্যক্তি আমাকে বলল, এই ঘরটি হচ্ছে শহীদদের ঘর।

সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2817

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙক্ষা করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তাকে দেয়া হয়। একমাত্র শহীদ ব্যতীত; সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙক্ষা করবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে।

সুনানে আন -নাসায়ী হাদীস নং : 3117

আবু রায়হানা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ যে চোখ আল্লাহ্‌র রাস্তায় বিনিদ্র থাকে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম করা হয়েছে।

সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং : 2503

আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে নিজে জিহাদ করেনি যা কোন মুজাহিদকে জিহাদের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে দেয়নি অথবা মুজাহিদ পরিবারের উপকারও করেনি, আল্লাহ ক্বিয়ামাতের পূর্বে তাকে কঠিন বিপদে ফেলবেন।

সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2797

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে আমি বলতে শুনেছি যে, সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যদি মুমিনদের এমন একটি দল না থাকত, যারা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকতে পছন্দ করে না এবং যাদের সকলকে সওয়ারী দিতে পারব না বলে আশংকা করতাম, তা হলে যারা আল্লাহ্‌র রাস্তায় যুদ্ধ করছে, আমি সেই ক্ষুদ্র দলটির সঙ্গী হওয়া হতে বিরত থাকতাম না। সেই সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমি পছন্দ করি আমাকে যেন আল্লাহ্‌র রাস্তায় শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, অতঃপর শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, পুনরায় শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, আবার শহীদ করা হয়।

সহিহ বুখারী হাদীস নং : 2818

‘উমর ইব্‌নু ‘উবায়দুল্লাহ্‌-এর আযাদকৃত গোলাম ও তার কাতিব সালিম আবূন নাযর (রাঃ) থেকে বর্ণিত :

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) তাঁকে লিখেছিলেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা জেনে রাখ, তরবারির ছায়া-তলেই জান্নাত।

মুয়াত্তা ইমাম মালিক হাদীস নং : 951
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত : রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর পথে জিহাদরত ব্যক্তি যতদিন বাড়ি ফিরে না আসে ততদিন তার উদাহরণ হল এমন এক ব্যক্তি, যে ক্লান্তিহীনভাবে অনবতর রোযা রাখে এবং নামায পড়ে। (বুখারী ২৭৮৭, মুসলিম ১৮৭৫)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button