ঢাকা রেশিনিং এর প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম এর বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা রেশনিং, জুরাইন, ঢাকা এর প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
সরকার দরিদ্রদের মাঝে স্বল্প দামে খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রির জন্য দোকান সেল ও ট্রাক সেলের ডিলারশিপ প্রদান করেছেন। তবে ডিলারদের কাছ থেকে চাল ও আটা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকে পায় না। ওএমএস নীতিমালা, ২০২২ অনুযায়ী প্রতিটি দোকান সেল/ট্রাক সেলে তদারককারী কর্মকর্তা বিক্রয় স্থলে দিনের বিক্রয়যোগ্য মালামাল অর্থাৎ বস্তার পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বিক্রয় আদেশ দিবেন। অথচ এআরও ডি-১ থেকে ডি-৯ পর্যন্ত এলাকায় প্রায়ই দেখা গেছে তদারককারী কর্মকর্তা অনুপস্থিত।
এই সুযোগে ডিলাররা দোকান সেলের ক্ষেত্রে চাল ও আটা গোপনে নিজেদের পছন্দমত দোকানে বেশি দামে বিক্রি করে। অসংখ্য নারী ও পুরুষ ট্রাকের পেছনে প্রচন্ড রোদ ও গরমের মধ্যে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে চাল ও আটা পায় না। ট্রাকগুলো সকাল ৯ ঘটিকার মধ্যে আসার কথা। অথচ সকাল ১১ ঘটিকার আগে কোন ট্রাক আসে না। তারপর ট্রাকে বসে ডিলার ও বিক্রেতারা ইচ্ছা করে অতি মন্থর গতিতে মালামাল মাপতে থাকে। মন্থর গতিতে মালামাল মাপার উদ্দেশ্য হচ্ছে বিকেল ৫ টা বাজার সাথে সাথে অবশিষ্ট চাল ও আটা নিয়ে ট্রাক স্থান ত্যাগ করবে। এভাবে অনেক ট্রাক বিকেল ৫ টা বাজার সাথে সাথে অবশিষ্ট মালামাল নিয়ে নির্ধারিত স্থান ত্যাগ করে। আবার অনেক ট্রাক বিকেল ৪ ঘটিকার সাথে সাথে অবশিষ্ট চাল ও আটা নিয়ে চলে যায় ও নিজেদের পছন্দমত দোকানে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে। ঢাকার আবদুল গণি রোডে অবস্থিত খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ বলেন, দোকান সেল/ট্রাক সেলের ক্ষেত্রে ডিলারদের কাছে যে পর্যন্ত মালামাল থাকবে সে পর্যন্ত বিক্রি করতে হবে। তবে এই নিয়ম মানছে না ডিলাররা। ডিলারদের এসব অনিয়মের সাথে ঢাকা রেশনিং অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা ও প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলমের মদদ রয়েছে বলে একাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জানা গেছে। দোকান সেল ও ট্রাক সেলের ডিলাররা ঢাকা রেশনিং এর কিছু কর্মকর্তা ও প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলমকে প্রতি মাসে প্রচুর টাকা প্রদান করেন বলে তিনি ডিলারদের অনিয়মকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। ডিলারদের রোস্টার প্রস্তাবের নাম অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রেও সহকারী নিয়ন্ত্রক শাব্বীর আহমেদ মুরাদকে টাকা দিতে হয় বলে খাদ্য মন্ত্রনালয় ও দুর্নীতি দমন কমিনে অভিযোগ রয়েছে। কোন ডিলার টাকা না দিলে রোস্টারে তার নাম থাকে না।
ঢাকা মহানগরে চলমান ওএমএস কার্যক্রমে আটা সরবরাহের নিমিত্তে বেসরকারি ফ্লাওয়ার মিলের অনুকুলে গম বরাদ্দ প্রদান করা হয়। এই বরাদ্দ প্রদান করেন প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম। যেসব মিল মো: জাহাঙ্গীর আলমকে টাকা প্রদান করে সেসব মিল গম বরাদ্দ পায় এবং বেশি গম বরাদ্দ পায়। এ ব্যাপারে ডেমরার ইয়াছিন ফ্লাওয়ার মিল, নিপা ফ্লাওয়ার মিল, ইউসুফ ফ্লাওয়ার মিল, উজ্জল ফ্লাওয়ার মিল, ঢাকা খিলক্ষেতে হাদি ফ্লাওয়ার মিল সহ নারায়নগঞ্জের নিতাইগঞ্জে একাধিক মিলের সাথে মো: জাহাঙ্গীর আলমের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। টাকার বিনিময়ে ঘুড়েফিরে এসব মিলগুলোই গম বরাদ্দ পায় যা তদন্ত করলে প্রমাণিত হবে। এভাবে অনিয়ম দুর্নীতি করে প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলম প্রতি মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেন। এই ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন ও খাদ্য মন্ত্রনালয়ে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দায়ের করা অভিযোগ থেকে এসব তথ্য পাওয়া। অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে তিনি প্রচুর অর্থ ও সম্পদের মালিক যা তার সম্পদের হিসাব নিলে প্রমাণিত হবে। অভিযোগের কপি এই প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।
এই ব্যাপারে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের স্বার্থে ও জনস্বার্থে প্রধান নিয়ন্ত্রক মো: জাহাঙ্গীর আলমের মতামত/বক্তব্য প্রদান করার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি তা রিসিভ করেন নাই। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট অনুযায়ী তার দাপ্তরিক ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে পত্র পেরণ করেও তার কোন মতামত/বক্তব্য পওয়া যায় নাই। অবশেষে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিবেদক মো: মামুন খান তার দপ্তরে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেও তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নাই।