“ছাত্রলীগ করিস এখনো বেঁচে আছিস কেমনে?” — গ্রাফিক ডিজাইন ছাত্র তানজিমের ওপর ছাত্রদল নেতাদের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট – ইশতিয়াক আহমদ মাসুমঃ রাজধানীর অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের তৃতীয় পর্বের ছাত্র মোহাম্মদ তানজিম খানের ওপর পাষণ্ড নির্যাতনের বর্ণনা প্রকাশ্যে এনেছে চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তানজিম নিজেই এক হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাসে জানান, ১৭ মে দিবাগত রাতে কোর্সের প্রস্তুতির জন্য ইনস্টিটিউটে গেলে ছাত্রদল নেতা আরিফ ও তার সহযোগীদের দ্বারা অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের মতো ভয়াবহ ঘটনার শিকার হন।
🟨 “তোরা পালাস নাই এখনো?” — শুরু হয় হুমকি
তানজিম জানান, রাতে চা খাওয়ার পর ছাত্রাবাসে ঢুকলে ছাত্রদল নেতা আরিফ তাকে ডেকে নিয়ে বলেন,
“কিরে, তুই তো ছাত্রলীগ করিস, এখনো দেখি ঘুরে ফিরে বেড়াইতাছোস।”
এরপর আরিফ ও তার সহযোগীরা তানজিমের মোবাইল কেড়ে নেয় এবং বাঁধা অবস্থায় গ্যাস পাইপ, লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে শুরু করে নির্মম নির্যাতন।
🟨 সেভ করা একটি প্ল্যাকার্ডই কাল হলো
নির্যাতনের এক পর্যায়ে তার ফোনে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাকার্ডের স্ক্রিনশট পাওয়া যায়, যেটি নিয়ে তারা বলেন—
“তুই এগুলা বানাস, আমাদের নিয়ে ট্রল করস, তুই ছাড়া আর কেউ না!”
এরপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। তাকে চোখ বেঁধে, চার হাত-পা বেঁধে, উলঙ্গ করে মারধর করা হয়।
🟥 অর্থ আদায়ে ভয়ানক হুমকি: “তোফাজ্জল আবরারের মত মেরে ফেলব”
নির্যাতনকারীরা একপর্যায়ে বলে—
“তুই খাইতে খাইতে মরবি। পাঁচ লাখ টাকা দিবি—না পারলে মর।”
এছাড়াও বলা হয়:
“তোফাজ্জল-আবরারের মতো তোকেও শেষ করব।”
এমনকি সিগারেট ছ্যাঁকা ও প্লাস দিয়ে পায়ের নখ তুলতে চাওয়া হয়। পরবর্তীতে উলঙ্গ ছবি তুলে ভাইরালের হুমকি দেয় তারা।
🟨 শর্তে মুক্তি, মুখ খুললে মৃত্যুর হুমকি
দুই দিনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পর তানজিম মাত্র চার হাজার টাকা দিতে সক্ষম হন, এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে শেষবারের মতো ভয় ধরিয়ে বলা হয়—
“তুই যদি মুখ খুলিস, তোকে মেরে ফেলব।”
🟥 ন্যায়বিচার চাইলেন তানজিম
নিজের পরিবার ও প্রাণের ভয়ে এতদিন চুপ ছিলেন বলে জানিয়েছেন তানজিম।
তবে একই ধরণের নির্যাতনের শিকার এক বড় ভাইয়ের স্ট্যাটাস দেখে তিনি সাহস সঞ্চয় করেন।
শেষমেশ তিনি বলেন—
“আমি আজ মামলা করেছি। আপনাদের সাহসেই আমি সাহসী। আপনাদের কাছেই আমার বিচার।”
🔴 সমাজের প্রতি প্রশ্ন:
- একজন শিক্ষার্থী, কর্মজীবী, গরিব পরিবারের সন্তানের জীবনের কি এতোই মূল্য নেই?
- ছাত্র রাজনীতি আজ কার হাতে?
- বাঁধা, বিবস্ত্র, ব্ল্যাকমেইল করে আদায়কৃত অর্থের নীরব সাক্ষী কতজন আর?
👉 এখন সময় সত্য প্রকাশের।
🔎 ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ।



