পদোন্নতি পেতে সুফিয়ানের দৌড় ঝাঁপ,নেপথ্যে প্রকৌশলী শেখ ফরিদ!!

পদোন্নতি পেতে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছে শত অভিযোগে অভিযুক্ত লাইনম্যান সুফিয়ানুর রহমান। লাকসামের অনিয়মের মানিক জোড় সিন্ডিকেট সুফিয়ান-কিশোরের দৌরাত্ত্বে কেউ মুখ খুলছে না। শত অভিযোগের পরেও তাকে পদোন্নতির নেপথ্যে কাজ করছে প্রকৌশলী শেখ ফরিদ। এমনটাই অভিযোগ এসেছে অপরাধ বিচিত্রার কাছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিবেদক, আখাউড়া -গঙ্গা সাগরের স্টেশনের পিছনে একটা অটো রিক্সার গেরেজ আছে। যেখানে ব্যাটারি চালিত অটো গাড়ির চার্জ দেয়া হয়। সেই গ্যারেজ থেকে প্রতি মাসে সুফিয়ান ২০,০০০ টাকা গ্রহন করে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও কুমিল্লায় সুইপার কলোনি,ইন্জিনিয়ারিং কলোনি, পানির পাম্পের পাশে একটা বস্তি, স্টেশনের বাহিরের কিছু দোকান,পাবলিক টয়লেট সহ বেশকিছু লাইসেন্স ধারী দোকানে মিটার বাইপাস আছে যেগুলোর টাকা প্রতি মাসে সুফিয়ান ও ২০২৩ ব্যাচের খালাসী তুসার গিয়ে উত্তোলন করে। যার আনুমানিক পরিমান ৭০,০০০ টাকা। কুমিল্লার ৭০,০০০ ও গঙ্গা সাগরের ২০,০০০ সহ সর্বমোট ৯০,০০০ টাকা । অভিযোগ আছে এখান থেকে সুফিয়ান পায় ২৫,০০০ টাকা, খালাসী তুষার পায় ১৫,০০০ টাকা এবং কিশোর বাবু পায় ৫০,০০০ টাকা।
এছাড়াও অনুসন্ধানে আরো জানা যায় লাকসাম স্টেশনে কিছু দোকান আছে মিটার ছাড়া, জিআরপি পুলিশ কলোনিতে ২ টা বাসা ছাড়া বাকী সব বাসা মিটার ছাড়া। প্রতিটি বাসা হতে মাসে ১২০০ টাকা করে নেয়। ট্রাফিক কলোনি, মালী কলোনি,ও লোকো কলোনিতে বেশকিছু বাসায় মিটার নাই এবং কিছু বাসার বিদ্যুৎ লাইন বাইপাস করা লাকসামে টাকা উত্তোলন করে সুফিয়ান ও ২০১৫ ব্যাচের এ ডব্লিউ এম গ্রেড -৩ সোলায়মান মিলে মাসিক টাকা উত্তোলন করে। তবে টাকার অংক সঠিক জানা যায়নি। তবে গোপন তথ্যে জানাযায় সুফিয়ান ও সোলায়মান আনুমানিক ৩০,০০০ টাকা পায়।
নোয়াখালী, চৌমুহনী,মাইজদী, বজরা সহ আরো কয়েকটি স্টেশন থেকে টাকা উত্তোলন করে অবসরপ্রাপ্ত লাইন ম্যান আবুল হোসেন খান । তার নেই কোন চুক্তি ভিত্তিক আদেশ। ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ লাকসাম কিশোর চন্দ্র দেব বর্মার মৌখিক আদেশে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি । তার সহযোগী হলো এ ডব্লিউ এম গ্রেড -৩ আজিজুর রহমান। নোয়াখালী স্টেশন হতে প্রতি মাসে প্রায় ৭৫,০০০ টাকার মতো উঠে। এখান থেকে আবুল হোসেন খান নেয় ২০,০০০ টাকা,সুফিয়ান নেয় ১৫,০০০ টাকা বাকিটা পায় ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ লাকসাম কিশোর চন্দ্র দেব বর্মা।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা ফেনী আল আমিন ফাষ্ট ফুড এর নামে কোন বিদ্যুৎ বিল করা হয় না। বিদ্যুৎ মিটার অচল। এছাড়াও ফেনীর ২ টা পরিত্যক্ত কোয়াটার ও ৩ টা কোয়াটারে স্টেশনের ক্যান্টিন ও বেশকিছু মিটার বাইপাস করা আছে। তাছাড়াও স্টেশনের বাহিরে ৩ টা দোকানে লাইন আছে। ফেনী স্টেশনের টাকা উত্তোলন করে এফ এ পি গ্রেড -৩ আশিকুর রহমান।
ফাজিলপুর স্টেশনে টাকা উত্তোলন করে সুফিয়ান ও ফেনী স্টেশনের দায়িত্বে থাকা এফ এ পি গ্রেড -৩ আশিকুর রহমান। (আশিক হলো রেলওয়ের সাবেক এডিজি আর এস ফারুক আহমেদ এর আপন ভাগিনা) ফেনী- মূহুরীগন্জ স্টেশন পর্যন্ত টাকা উঠে ৪২,০০০ টাকা। এর মধ্যে সুফিয়ান ও আশিক নেয় ২৫,০০০ বাকী ১৭০০০ পায় কিশোর বাবু।
চট্টগ্রামে কিশোর বাবুর সরকারী বাসার নাম্বার এম/১-এ সিআরবি। জিএম বাংলোর পিছনে কিশোর চন্দ্র দেববর্মার নামে সরকারী বাংলো বরাদ্দ। তিনি নিজে না থেকে পুরো বাসা ভাড়া দিয়ে তিনি কুমিল্লায় পরিবার নিয়ে প্রাইভেট বাসা ভাড়া করে থাকেন। কিশোর বাবুর ভাড়াটিয়ার নাম মোঃ খোকন পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানায় টেন্ডল পদে কর্মরত। দেশের বাড়ি লাকসাম। প্রতি মাসে ৪২ হাজার টাকা ভাড়া দেন কিশোর বাবুকে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায় – সুফিয়ান সিন্ডিকেট এর মাসোহারা এর একটি অংশ সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী পাহাড়তলী শেখ ফরিদ সহ চিফ ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত এই টাকার ভাগ দেওয়া হয়। পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে বৈদ্যুতিক বিভাগ চলে শেখ ফরিদের ইশারায় । বিদ্যুৎ বিভাগের পুরো ডিপ্লোমা এসোসিয়েশন অর্থাৎ কর্মরত ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ সবাই শেখ ফরিদের ইশারায় বদলী, পদোন্নতি, পোস্টিং চলে। উনি যা বলবে তাই হয়। তিনিও কিছুদিন পূর্বে ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী ছিল। পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী।
জয় জয় ভ্যারাইটিজ স্টোর কুমিল্লা এর স্বত্বাধিকারী সন্জু আসল নাম তাপস, সুফিয়ানের নামে লিখিত অভিযোগ ও কিছু লেনদেনের কল রেকর্ড সহ বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী চট্টগ্রাম আরিফুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে এই তথ্য গুলো দিতে গিয়েও দিতে পারে নি সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে। ডিইই এর প্রধান সহকারী জনাব কফিল উদ্দিন সন্জু কে বিভিন্ন ভয়- ভীতি দেখিয়ে কল রেকর্ড ও অভিযোগ নিয়ে ওকে অফিস থেকে বাহির করে দেয়। কফিল উদ্দিন সুফিয়ানকে ফোন করে ভিডিও ও কল রেকর্ড কে জিম্মি করে সুফিয়ানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সমস্ত ভিডিও ও কল রেকর্ড ভ্যানিশ করে দেয়।
বৈদ্যুতিক বিভাগের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল মিলে মোট ১৭ ক্যাটাগরিতে সম্প্রতি পদোন্নতি হতে যাচ্ছে। সুফিয়ান লাইনম্যান গ্রেড ২ হতে গ্রেড ১ পদোন্নতি পেতে এবং লাকসাম গ্রেড ১ পদোন্নতি পোস্টে বহাল থাকার জন্য তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী পাহাড়তলী শেখ ফরিদ সাহেব কে ভালো অংকের টাকা দিয়েছে ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ লাকসাম কিশোর চন্দ্র দেববর্মার মাধ্যমে।
লাইনম্যান সুফিয়ানুর রহমানের সাথে অপরাধ বিচিত্রা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এক টাকাও অবৈধ কারো কাছ থেকে নেই না। আমি ভালো কাজ করি তাই আমার পিছনে শত্রু লেগেছে।
ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ লাকসাম কিশোর চন্দ্র দেববর্মা তার অফিসে অপরাধ বিচিত্রার প্রতিনিধিকে দাওয়াত দেন। এবং বলেন, আপনার কাছে যে তথ্য দিয়েছে সম্পূর্ন মিথ্যা। আমি কোন সিন্ডিকেট পরিচালনা করি না। আর কাউকে অতিরিক্ত সুবিধা দেই না। লেন দেনের বিষয়টি মিথ্যা।
এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী পাহাড়তলী শেখ ফরিদ অপরাধ বিচিত্রা কে বলেন, লাকসাম আমার অধীনে না। এদের সাথে আমার কোন কাজের সম্পর্ক নেই। তারা আমাকে রিপোর্ট করে না। আর পদোন্নতির পিছনে আমার কোন হাত নেই। টাকা নেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।








