অব্যাবস্থাপনাএক্সক্লুসিভ

নারায়নগঞ্জ বন্দর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা এত সম্পদ করলেন কিভাবে?

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়নগঞ্জ বন্দর উপজেলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন আয়ের সাথে সংহতিহীন বিশাল সম্পদ গড়েছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে। এই সম্পদ তিনি ভূমি অফিসে চাকুরি করে গড়েছেন মর্মে এলাকা সহ একাধিক সূত্রে প্রকাশ।

এলাকাবাসিদের দেওয়া তথ্যে ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ৩১১/এ উইলসন রোড, একরামপুর, বন্দর, নারায়নগঞ্জ ঠিকানায় ৯ শতাংশ জমির ওপর ৭ তলা ভবন নির্মান করেছেন। উক্ত ভবনের সামনে ৪ কাঠা একটি খালি জমি, ৪ শতাংশ জমির ওপর একটি টিন সেডের ঘর ও ঘর সংলগ্ন আরও ৪ কাঠা জমির ওপর একটি কাঠাল বাগান সহ মোট ১২ শতাংশ জমির মালিক তিনি।

এসব জমি ও বাড়ি সেখানকার স্থানীয়রা এই প্রতিবেদককে ঘুুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখিয়ে দেন। এসব সম্পদের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা বলে স্থানীয়রা জানান। বন্দর উপজেলার নবিগঞ্জ এলাকায় আকিজ সিমেন্ট কারখানার পাশে ১০ শতাংশ জমি আছে কামাল হোসেনের নামে। এই জমির মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা বলে নিটস্ত এলাকার লোকজন জানান। এছাড়াও বন্দর উপজেলায় তার আরও কয়েকটি বিশালাকারের বাড়ি নির্মানাদীন রয়েছে।

এর পাশাপাশি জমিও রয়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ। তিনি ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের নিজস্ব প্রাইভেট কারে চলাফেরা করেন। এই পদে চাকুরি করে তিনি কিভাবে এত সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে এলাকায় কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর উপজেলায় একাধিক লোক নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান কামাল হোসেন প্রতি বছর ১৫ আগষ্ট শেখ মুজিবের শোক দিবসে তৎকালীন এমপি শামিম ওসমানকে ৭ টি করে গরু দিতেন। উদ্দেশ্য হচ্ছে এমপি শামিম ওসমানকে হাতে রাখা।

একজন এমপি হাতে রাখতে পারলে কামাল হোসন যে কোন অপরাধ করেও এমপির দোহাই দিয়ে খালাস পেয়ে যাবেন। বাস্তবে হয়েছে তাই। জমি সংক্রান্ত কোন কাজে গেলে সেবাগ্রহির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে দিনের পর দিন হয়রানি করেন। তিনি নিজেকে নারায়নগঞ্জ জেলার তহশীলদারদের সভাপতি বলে দাবি করেন ও সকলের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তার হুমকি ধমকির কারণে সেবাগ্রহিরা তার কাছে যেতেই ভয় পায়।

ইউনিয়ন ভূমি অফিসের একাধিক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান কামাল হোসেন এই একই স্থানে অর্থাৎ বন্দর উপজেলায় এ পর্যন্ত ঘুড়েফিরে ৭ বার আসেন। অর্থাৎ তাকে অন্যত্র বদলি করা হলেও তিনি তদ্বির করে পূণরায় তার বন্দর উপজেলায় চলে আসেন। এটা নাকি তার নিজস্ব এলাকা। তাই তার প্রভাব অনেক বেশি। অথচ প্রজাতন্ত্রের চাকুরি বিধি অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ এলাকায় চাকুরি করতে পারবে না।

অপরাধ বিচিত্রার প্রতিনিধি বিষয়টি তদন্ত করতে নারায়নগঞ্জ বন্দর উপজেলায় গিয়েছিল জানতে পেরে মো: কামাল হোসেন অপরাধ বিচিত্রা অফিসে এসে যোগাযোগ করেন এবং বলেন যে, তার যেসব সম্পদের কথা বলা হচ্ছে তার মালিক তিনি নন। তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেন।

তবে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের কপি অপরাধ বিচিত্রার কাছে রয়েছে। বন্দর উপজেলার একাধিক সেবাগ্রহি তার দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন মর্মে অপরাধ বিচিত্রাকে জানান। তবে তাদের নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম পরিচয় প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button